INS Vikrant: চাপে চিন, সাগরে ভারতের বিক্রম দেখাবে বিক্রান্ত
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: সীমান্তে ফাঁকা আওয়াজের দিন শেষ। পাল্টা চোখ রাঙাতে এবার আসরে ভারত। চিনকে একহাত নিতে সাগরে নামল আইএনএস বিক্রান্ত। এই প্রথম সম্পূর্ণ ভারতীয় প্রযুক্তিতে তৈরি যুদ্ধবিমানবাহী জাহাজ পেল নৌবাহিনী। কোচির শিপইয়ার্ডে গ্র্যান্ড সেরেমনিতে নৌসেনার হাতে তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যুদ্ধজাহাজ ঘিরে দেশবাসীর উন্মাদনা প্রথম থেকেই তুঙ্গে। অবশেষে অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে জল ছুঁল আইএনএস বিক্রান্ত। প্রায় ২৩ হাজার কোটি টাকা খরচে নির্মিত চল্লিশ হাজার টনের এই যুদ্ধজাহাজের আর কী কী বিশেষত্ব রয়েছে?
আইএনএস বিক্রান্ত দৈর্ঘ্যে ২৬২ মিটার ও প্রস্থে ৬২ মিটার। ভারতে তৈরি বৃহত্তম যুদ্ধজাহাজ হল এটি। ২টো ফুটবল মাঠের থেকেও লম্বা। মিগ-২৯, ফাইটার জেট ও হেলিকপ্টার মিলিয়ে একসঙ্গে ৩০টি যুদ্ধবিমান বহন করতে পারবে এই রণতরী।
যুদ্ধবিমানের পাশাপাশি একসঙ্গে ১৬০০ জন ক্রু সদস্যও থাকতে পারবেন আইএনএস বিক্রান্তে। মোট ১৪টি ডেক রয়েছে এই জাহাজে। রয়েছে ২৩০০টি কামরাও। মহিলা অফিসারদের জন্য থাকছে আলাদা বিশেষ কেবিনও।
২০০৯ সালে কোচি শিপইয়ার্ড লিমিটেড (CSL)-এ শুরু হয় আইএনএস বিক্রান্তের নির্মাণ। জাহাজে ব্যবহৃত মোট বিদ্যুশক্তি প্রায় কোচি শহরের অর্ধেক বিদ্যুতের সমান। শুধু তাই নয়, জাহাজ নির্মাণে ব্যবহৃত মোট ইস্পাত তিনটে আইফেল টাওয়ারের সমান।
জাহাজের স্টাফদের জন্য থাকছে মেডিকেল ফেসিলিটিও। সম্পূর্ণ সচল দুটো মেডিকেল কমপ্লেক্স থাকছে জাহাজের ভিতর। তার ভিতর থাকবে দুটো অপারেশন থিয়েটারও। প্রায় ২ হাজার স্টাফের খাওয়ার জন্য কিচেনের ব্যবস্থাও থাকছে।
গতিতেও শত্রুদের বুক কাঁপাবে বিক্রান্ত। যুদ্ধজাহাজের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫২ কিলোমিটার। একবার জ্বালানি ভরলে প্রায় ১৪ হাজার কিমি পাড়ি দিতে পারে এই জাহাজ।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ভারতে আসে প্রথম বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ হারকিউলিস। নাম বদলে রাখা হয় বিক্রান্ত। ১৯৭১ সালে পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয় সেই বিক্রান্ত। নব্বইয়ের দশকের শেষে সেটি ভেঙে ফেলা হয়। তারই নামানুসারে নবনির্মিত যুদ্ধজাহাজের নাম দেওয়া হয় আইএনএস বিক্রান্ত।
নতুন যুদ্ধজাহাজ নিঃসন্দেহে ভারতীয় নৌবাহিনীর কাছে 'ব্রহ্মাস্ত্র'। বেজিংয়ের আগ্রাসী মনোভাবে বড় ধাক্কা দিয়েছে ভারত। কদিন আগেই নয়াদিল্লির আপত্তি সত্ত্বেও ভারত মহাসাগরের উপকূলে চিনের বিতর্কিত জাহাজকে নোঙরের অনুমতি দেয় শ্রীলঙ্কা। নজরদারি চালাতেই 'গুপ্তচর' জাহাজ পাঠিয়েছে বেজিং, শঙ্কা প্রকাশ করে নয়াদিল্লি। ভারত মহাসাগরে আধিপত্য বৃদ্ধি করতে চাইলে যে পালটা নিজেরই বিপদ ডেকে আনবে চিন, তারই জবাব আইএনএস বিক্রান্ত।