International Nurses Day-র গায়ে যেন আজও ঠিকরে পড়ে লন্ঠনের আলো!

Soumitra Sen Wed, 12 May 2021-6:44 pm,

বিশ্বে এখন কোভিড-সংক্রমণের তীব্র ভয়াল রূপ। জনবহুল দেশগুলিতে অবস্থা এত খারাপ হয়ে গিয়েছে যে, হাসপাতালে বেড নেই, ডাক্তার নেই, সেবাকাজের জন্য নার্স পাওয়াা যাচ্ছে না। ভারতের মতো দেশে কোথাও কোথাও চিকিৎসা পরিষেবা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। ঠিক এইরকম একটা সময়ে এল বিশ্ব সেবিকা দিবস (International Nurses Day)। 

 

এ দিনটি সেবিকাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের দিন। এই কোভিড পরিস্থিতিতে নিজেদের জীবন বিপন্ন করে এই সেবিকারা দেশজুড়ে মরণাপন্ন রোগীদের সেবা করে সুস্থ করে তুলছেন। 

১৯৭৪ সালেই ১২ মে দিনটিকে আন্তর্জাতিক সেবিকা দিবস হিসেবে বেছে নেওয়া হল। সেই থেকেই দিনটি গোটা বিশ্বে পালিত হয়ে আসছে।

সারা পৃথিবীজুড়ে কেন এই ১২ মে দিনটিকে বেছে নেওয়া হল তার কারণ আছে। এই দিনটিই আসলে Florence Nightingale-এর জন্মদিন। একজন নার্স হিসেবে অতুলনীয় কীর্তির অধিকারী তিনি। অসাধারণ তাঁর অবদান ও প্রভাব। ফলে সেবা সংক্রান্ত একটি দিবস উদযাপন করতে গিয়ে নাইটিঙ্গেলের জন্মদিনটিকেই মানুষ নির্দ্বিধায় বেছে নিয়েছে। 

প্রত্যেক বছরই এইদিনটির একটি 'থিম' ঠিক করা হয়। ২০২০ সালে যেমন থিম ছিল-- Nurses: A Voice to Lead– Nursing the World to Health। আর এ বছরের থিমটি এই কোভিড-প্রেক্ষিতে খুব তাৎপর্যপূর্ণ। এবারের এ দিনটির মূল ভাবনা হল --'A Vision for future healthcare'।

 

আজকের দিনটিতে সম্ভবত 'বিশ্বের সব চেয়ে জনপ্রিয় নার্স' ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলকে একটু স্মরণ করা উচিত। তাঁর জন্ম ১৮২০ সালে।  সেবাকর্মী ছাড়াও তিনি ছিলেন সমাজ সংস্কারক ও পরিসংখ্যানবিদ। আধুনিক সেবাকাজ কেমন হবে তার মূল বিষয়গুলি তিনি নির্দেশ করে গিয়েছেন। ১৯১০ সালের ১৩ অগস্ট ৯০ বছর বয়সে লন্ডনে মারা যান ফ্লোরেন্স।

সারা জীবনে অগুনতি মনে রাখার মতো কাজ করেছেন তিনি। কিন্তু এ কালের মানুষ তাঁকে সম্ভবত সব চেয়ে বেশি মনে রেখেছে ক্রিমিয়ার যুদ্ধে (Crimean War) যুদ্ধক্ষেত্রে আহত সেনাদের শিবিরে তাঁর আন্তরিক সেবাকাজের জন্য। এ জন্য Queen Victoria-র কাছে তিনি পুরস্কৃতও হয়েছিলেন। শোনা যায়, রাতের অন্ধকারে যুদ্ধশিবিরে একটি লন্ঠন হাতে ঘুরতেন তিনি। খোঁজ নিয়ে দেখতেন আহত সৈন্যরা কে কেমন আছেন। অসহ্য যন্ত্রণার মধ্যে আহত ক্ষত-বিক্ষত সৈন্যরা যখন দূর থেকে একটা আলোর রেখা দেখতে পেতেন, নিশ্চিন্ত  হতেন যে, ফ্লোরেন্স আসছেন। উনি এলেই তাঁদের ব্যথার উপম হবে। সেই থেকে তাঁর নাম হয়ে গেল 'The Lady with the Lamp'!

এই উপাধিটিকে পরর্তীকালে আরও বিখ্যাত করেন কবি  Henry Wadsworth Longfellow। ১৮৫৭ সালে লেখা তারঁ কবিতা Santa Filomena-য় তিনি লিখেছিলেন--Lo! in that house of misery/A lady with a lamp I see/Pass through the glimmering gloom,/And flit from room to room!

ফ্লোরেন্সের জীবন ও কর্মে উদ্দীপনা পেয়ে পরবর্তী কালে যুগে যুগে দেশে দেশে অনেক নারীই এই কঠিন কাজে এগিয়ে এসেছেন। মানবজাতির  সেবা করে চলেছেন তাঁরা। তা-ও 'হু'-র একটি পরিসংখ্যান আশ্চর্য করে দেয়। 'হু' জানাচ্ছে, সারা পৃথিবীতে এখনও প্রায় ষাট লক্ষ নার্সের প্রয়োজন! 

ZEENEWS TRENDING STORIES

By continuing to use the site, you agree to the use of cookies. You can find out more by Tapping this link