Ishwar Chandra Vidyasagar: এই ব্যক্তি বিদ্যাসাগরকে মদ কিনে আনার নির্দেশ পর্যন্ত দিয়েছিলেন...

Soumitra Sen Mon, 26 Sep 2022-4:06 pm,

যেমন মাইকেল-বিদ্যাসাগরের সম্পর্ক। সুবলচন্দ্র মিত্রের বইয়ে বিদ্যাসাগরকে লেখা মাইকেল মধুসূদনের একটি বিরল চিঠির কথা জানা যায়। সে চিঠিতে মাইকেল বিদ্যাসাগরকে লিখছেন-- 'আমার সহকর্মী বাবু মতিলাল চৌধুরীকে সঙ্গে নিয়ে তোমার কাছে যাব। তুমি এক বোতল শেরি আনিয়ে রেখো!' বিদ্যাসাগরকে মদ আনতে বলার মতো বুকের পাটা মাইকেল ছাড়া আর কার-ই বা থাকতে পারে! 

ট্রেন থেকে নামলেন এক বাবু। হাতে ছোট্ট ব্যাগ। সহজেই বয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। তবু তিনি ডাকলেন 'কুলি' 'কুলি' বলে। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরও ওই একই ট্রেন থেকে নেমেছেন। তিনি ওই বাবুটির 'কুলি' ডাক শুনে এগিয়ে গেলেন। কুলি ভেবে সেই বাবু তাঁর হাতে ব্যাগটি দিলেন। ঈশ্বরচন্দ্রও ব্যাগ নিয়ে গিয়ে বাবুর সঙ্গে চললেন। যথাস্থানে পৌঁছে বাবু 'কুলি'কে পয়সা দিতে গেলে তিনি বললেন, 'পয়সা দিতে হবে না। আমি ঠিক কুলি নই। ব্যাগ নিয়ে আপনি বিপদে পড়েছিলেন বলে আমি আপনাকে সাহায্য করতে এগিয়ে এলাম। আমার নাম ঈশ্বরচন্দ্র শর্মা।'

একদিন ঈশ্বরচন্দ্র নিজের বাড়ির সামনের বাগানে কাজ করছিলেন। এমন সময় মেদিনীপুর থেকে জনাচারেক লোক এলেন তাঁর সঙ্গে দেখা করতে। তাঁরা ভাবলেন, এ নিশ্চয়ই বাগানের মালি। বললেন, বিদ্যাসাগর মশায় বাড়ি আছেন? ঈশ্বরচন্দ্র বললেন, তিনি একটু ব্যস্ত। আপনারা বসুন। একটু পরে অতিথিরা বললেন, ওহে, একটু তামাক খাওয়াতে পারো? আজ্ঞে, পারি। বলে বিদ্যাসাগর তামাক সাজিয়ে দিলেন অতিথিদের। বড্ড দেরি হয়ে যাচ্ছে। দ্যাখো না বাবু বিদ্যাসাগর মশায় কোথায়? তখন বিদ্যাসাগর নিজের পরিচয় দিয়ে বললেন, বলুন। আমিই ঈশ্বরচন্দ্র।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতে, বিদ্যাসাগর বাংলা ভাষার প্রথম যথার্থ শিল্পী। এদিকে বিদ্যাসাগরের গদ্যের সমালোচনা করেছেন বঙ্কিম। তাঁকে অনুবাদক হিসেবে তাচ্ছিল্যও করেছেন। তবে শেষ জীবনে বঙ্কিমচন্দ্র লিখেছিলেন, বিদ্যাসাগর মহাশয়ের ভাষা অতি সুমধুর ও মনোহর।

 

'বিষবৃক্ষ' উপন্যাসে সূর্যমুখী চরিত্রটি একটি চিঠিতে লিখছে, 'ঈশ্বর বিদ্যাসাগর নামে কলিকাতায়কে নাকি বড় পণ্ডিত আছেন, তিনি আবার একখানি বিধবাবিবাহের বহি বাহির করিয়াছেন। যে বিধবার বিবাহের ব্যবস্থা দেয়, সে যদি পণ্ডিত, তবে মূর্খ কে?'

'বিষবৃক্ষ' উপন্যাস প্রকাশের পরের ঘটনা। বর্ধমানে এক বাড়িতে ভোজ। বিদ্যাসাগর রাঁধবেন। অতিথিদের মধ্যে বঙ্কিমচন্দ্রও ছিলেন। রান্না খেয়ে বঙ্কিম উচ্ছ্বসিত প্রশংসা শুরু করলে তাঁর ভাই সঞ্জীবচন্দ্র বললেন, কে রেঁধেছে জানো তো, ঈশ্বরচন্দ্র! ঈশ্বরচন্দ্র বললেন, না হে না, বঙ্কিমের সূর্যমুখী আমার মতো মূর্খ দেখেনি। হাসির রোল উঠল।

ZEENEWS TRENDING STORIES

By continuing to use the site, you agree to the use of cookies. You can find out more by Tapping this link