Rathyatra: মায়াপুরে ইসকনে ফ্যাকাশে উৎসব, ২০০ মিটার চলল রথ
নিজস্ব প্রতিবেদন- করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অঙ্গীকার। সেই কারণেই মায়াপুরের ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণা কনশাসনেস (ISCON) সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এ বছর ইসকন রথযাত্রা স্থগিত রেখে একটি রথে তিন বিগ্রহ চাপিয়ে ইসকন মন্দিরে ২০০ মিটার অবধি চলবে রথ। সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে, বহু লোকের সমাগম ঠেকাতেই রথযাত্রার অনুষ্ঠান স্থগিত রাখা হয়েছে এবারও । কিন্তু জগন্নাথের দর্শন যাতে সাধারণ মানুষ পান, তার জন্য নেওয়া হয় বিশেষ ব্যবস্থা। এত বছরের প্রথা ভেঙে ইসকনের রথ রাস্তায় না বেরোলেও, রথযাত্রা বাড়ি বসেই দেখতে পেলেন ভক্তরা। এবার একটি রথে তিন বিগহ নিয়ে মাত্র ২০০ মিটার দড়িতে টান দিলেন ইসকনের ভক্তরা। কোভিড বিধি বজায় রাখতে রথের বদলে মোটর গাড়িতে চেপে মাসির বাড়ি পৌঁছালে জগন্নাথ দেব।
মায়াপুরের ইসকন মন্দিরের ৫ কিলোমিটার আগে রাজাপুরের জগন্নাথ দেবের মন্দির। জানা যায়, শুভ শক্তির সূচনার জন্য জগন্নাথ দেবকে ওড়িশা থেকে আনেন শবর জাতির মানুষ। তাঁকে রাজাপুরে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। তারপর বেশ কয়েকদিন বন্ধ ছিল জগন্নাথের আরাধনা৷ পরবর্তীকালে ফটিকচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় নামে এক ব্যক্তির হাত ধরে ফের পুজো চালু হয়৷
১৯৭৯ সালে ইসকন মন্দির কর্তৃপক্ষ রাজাপুরের জগন্নাথের দায়িত্ব নেয়। সেই থেকে শুরু হয় পুজো। এরপর যতদিন গড়িয়েছে জাঁকজমক বেড়েছে জগন্নাথের আরাধনায়। রথের ঠিক একমাস আগে মায়াপুরে ইসকনে অনুষ্ঠিত হয় জগন্নাথের স্নানযাত্রা। কথিত আছে, স্নানযাত্রার পর জগন্নাথ দেব জ্বরে কাবু হয়ে গৃহবন্দি হয়ে পড়েন। রথের আগে ভক্তরা আর জগন্নাথ দেবের দর্শন পান না।
রথের দিন বিকেলে কম্বল মুড়ি দিয়ে গৃহবন্দি জগন্নাথ রাজবেশে রাজরথে চেপে রাজাপুর থেকে বেরিয়ে ইসকন মন্দির অস্থায়ী মাসির বাড়িতে যান,ইসকনের চন্দ্রোদয় মন্দিরে। উলটো রথে তিনি আবার ফিরে যান রথে চড়ে রাজাপুরে। তিনটি রথে তিনজন থাকেন,মাঝের ৭ দিন ইসকনে আয়োজিত হয়ে থাকে বিভিন্ন অনুষ্ঠান। এবারে অবশ্য তা অন্যরকম।
স্নানযাত্রা উপলক্ষে বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই ভিড় শুরু হয়ে যায় মায়াপুরে। দেশ বিদেশের মানুষ হাজির হন। তবে গত বছর থেকে কোভিডের কারণে নিয়ম বদলে গত বছর শুধু পুজো হয়েছে জগন্নাথ কে রথে না তুলে। অন্যন্য বছরগুলিতে সকাল থেকেই ইসকনের মন্দির থেকে শুরু করে গোটা মায়াপুরে শুধু দেশি-বিদেশি ভক্তদের দেখা যায়।
অন্যান্য বছর বাড়তি রোজগারের আশায় রথের মেলায় পাঁপড় ভাজা, পুতুল ও জিলিপির মতো বিভিন্ন ধরনের ছোট বড় দোকান তৈরি করে ব্যবসা করেন এলাকার গরিব মানুষজন। এই বছর করোনা বিধিকে রক্ষা করতে গিয়ে সেই দিক থেকেও আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে স্থানীয় গরিব মানুষ জন ও ব্যবসায়ীদের। যার ফলে রথযাত্রার উৎসব পালিত হলেও এই বছর মনে উৎসবের রং স্পর্শ করতে পারেনি স্থানীয় বাসিন্দাদের।