Kali Puja 2022: কালী-মাহাত্ম্য! আজ যে কথাগুলো আপনার অবশ্যই জানা জরুরি...
জি ২৪ ঘন্টা ডিজিটাল ব্যুরো: তিনি মুক্তকেশী, দীগম্বরী, কৃষ্ণবর্ণা, শক্তির দেবী। যুগ যুগ ধরে তাঁর এই ভয়ংকর রূপ ঘরে ঘরে পূজিত হয়। পণ্ডিতেরা বলেন দেবীর এই রূপের অনেক তাৎপর্য। তাঁর মাথার চুল থেকে পায়ের নখের গড়নের গুরুত্ব ভিন্ন ভিন্ন। আর দীপাবলির শুভ মুহূর্তে সেই তাৎপর্য জেনে নেওয়া যাক
তাঁর মাথায় কালো চুলের রাস। মুক্ত এই কেশপাশ বৈরাগ্যের প্রতীক। পুরাণে কথিত আছে, তিনি জ্ঞানের দ্বারা লৌকিক মায়ার বন্ধন ছেদন করেছেন। তাই তিনি চিরবৈরাগ্যময়ী।
আসলে তিনি যে কোনও বর্ণেরই অতীত। আর কালো রং সকল বর্ণের অনুপস্থিতির প্রতীক। তবে কখনও কখনও দেবীকে গাঢ় নীল বর্ণেও কল্পনা করা হয়। সেই গাঢ় নীল রঙের তাৎপর্য হল যে, আকাশের মতোই অসীম তাঁর বিস্তার।
তিনি নগ্নিকা, বিশ্বব্যাপী শক্তির প্রতীক। সে কারণেই তাঁর বিস্তার অসীম। তাঁর চিরশক্তিকে আবৃত করে এমন সাধ্য কোনও বস্ত্রের নেই!
লাল রং রজোগুণের ও সাদা রং সত্ত্বগুণের প্রতীক। শিবের বুকে পা তুলে কালী তাঁর সাদা দাঁতে দিয়ে নিজের রক্তবর্ণ জ্বিহাকে কামড়ে ধরে রয়েছেন। এর তাৎপর্য হল,ত্যাগের দ্বারা ভোগকে দমন করা।
কানীর গলায় মোট ৫০টি মুণ্ডের মালা দেখা যায়। এই মুণ্ডগুলি ৫০টি বর্ণ (১৪টি স্বরবর্ণ ও ৩৬টি ব্যঞ্জনবর্ণ) বা বীজমন্ত্রের প্রতীক, যা সৃষ্টির উৎস। তাই দেবী নিজেই শব্দব্রহ্মরূপিনী।
দেবীর চার হস্তে চাররকম অস্ত্র। তাঁর ডানদিকের উপরের হাতে রয়েছে বরাভয় মুদ্রা, নীচের হাতে আশীর্বাদ মুদ্রা। অর্থাৎ একাধারে দেবী তাঁর সন্তানদের যেমন রক্ষা করেন, তেমনই ভক্তের মনোবাঞ্ছাও পূর্ণ করেন। বাঁ দিকের উপরের হাতে তিনি ধরে রয়েছেন তরবারি, আর নীচের হাতে একটি কর্তিত মুণ্ড। অর্থাৎ, তিনি যেমন জীবকুলকে মায়াবন্ধন থেকে মুক্তির পথপ্রদর্শন করতে পারেন, তেমনই মায়াচ্ছন্ন জীবকে প্রদান করতে পারেন বিশেষ জ্ঞান।
কালীর কোমরে এই সজ্জা দেখা যায়। ওই হাতগুলি কর্মের প্রতীক। তাই তিনি কর্মের ফলদাত্রী দেবী। পুরাণ মতে ব্যখ্যা করা আছে, জীবনচক্রের শেষে সমস্ত আত্মা স্বয়ং দেবীর অঙ্গীভূত হয় ও কর্মফল অনুসারে মাতৃজঠর থেকেই পুনরায় জন্মলাভ করে।
এর তাৎপর্য বিশাল। শিব স্থিতির প্রতীক, দেবী গতির। শিব ব্রহ্মচৈতন্য, দেবী ব্রহ্মশক্তি। তাঁদের সম্মিলন ব্যতীত সৃষ্টির উৎপত্তি সম্ভব নয়। বঙ্গে সাধারণত দক্ষিণা কালীর পুজো হয়ে থাকে। দক্ষিণা কালীর অর্থাৎ, দেবীর দক্ষিণ পদ বা ডান পা শিবের বুকে স্থাপিত থাকে।
মা কালীর তিনটি নয়নের তিনরকম তাৎপর্য। এই ত্রিনয়ন চন্দ্র, সূর্য ও অগ্নির ন্যায় অন্ধকার বিনাশকারী। এর মাধ্যমে দেবী অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ একত্রে দর্শন করে থাকেন। আবার প্রত্যক্ষ করেন সত্য, শিব ও সুন্দরকে। অর্থাৎ বৃহত্তর অর্থে সৃষ্টি, স্থিতি ও প্রলয়কে।