Kaushiki Amavasya Tarapith: কৌশিকী অমাবস্যায় তারাপীঠে মায়ের বিশেষ সাজ আর ভোগ...
সৃষ্টি-স্থিতি-প্রলয়কারিণী মা তারা 'কৌশিকী' রূপে এই দিব্য তিথিতেই অশুভের প্রতীক শুম্ভ ও নিশুম্ভকে বধ করেছিলেন। তাই কৌশিকী অমাবস্যার মহারাত্রিকে 'তারা রাত্রি' বলা হয়।
১৮৬৪ সালে মাত্র ২৬ বছর বয়সে এই দিব্য কৌশিকী অমাবস্যাতেই বামদেব পরমসিদ্ধি লাভ করে ব্যামাক্ষ্যাপা নামে খ্যাত হয়েছিলেন। তিনি সিদ্ধি লাভ করেছিলেন মহাপীঠ তারাপীঠের মহাশ্মশানেই।
সদা-চৈতন্যময় পরমপুরুষ বামাক্ষ্যাপা ত্রিলোকজননী মা তারার জীবন্ত বিগ্রহ হিসেবেই বিরাজ করতেন এখানে। এই বিশেষ তিথিতেই বামদেবের মোক্ষ লাভ ও সিদ্ধি লাভের জন্য কৌশিকী অমাবস্যা অতি পুণ্য তিথি হিসেবে ধার্য।
তারা দেবীকে বৌদ্ধ ধর্মের অন্তর্গত বজ্রযানে নীলসরস্বতীও বলা হয়।
চণ্ডীতে আছে, পুরাকালে একবার শুম্ভ ও নিশুম্ভ কঠিন সাধনা করে ব্রহ্মাকে তুষ্ট করলে চতুরানন তাঁদের বর প্রদান করেন বলেন, কোনও পুরুষ তাঁদের বধ করতে পারবেন না। একমাত্র কোনো অ-যোনিসম্ভূতা নারীই পারবেন তাঁদের বধ করতে। এমন নারী যিনি কোনও মাতৃগর্ভ থেকে উৎপন্ন হননি।
কিন্তু পৃথিবীতে এমন নারী কোথায়? পূর্ব জন্মে পার্বতী যখন সতীরূপে দক্ষযজ্ঞস্থলে আত্মাহুতি দেন তখন তাঁর গাত্রবর্ণ কালো হয়, তাই ভোলানাথ তাঁকে কালিকা ডাকতেন। একদিন দানব ভাইদের দ্বারা পীড়িত দেবতারা যখন কৈলাসে এসে শিবকে সব বললেন, শিব তখন সব দেবতাদের সামনেই পার্বতীকে 'কালিকা' বলে সম্বোধন করে বলেন, 'তুমি ওঁদের উদ্ধার করো'। এদিকে সকলের সামনে তাঁকে কালিকা বলে ডাকায় পার্বতী ক্ষুব্ধ,অপমানিত ও ক্রুদ্ধ হন। তিনি মানস সরোবরে কঠিন তপস্যা করেন। তপস্যান্তে শীতল মানস সরোবরের জলে স্নান করে নিজের দেহের সব কালো কোষ পরিত্যাগ করে পূর্ণিমার চাঁদের মতো গাত্রবর্ণ ধারণ করেন। দেবীগাত্রের ওই কালো কোষগুলি থেকে এক অপূর্ব সুন্দরী কৃষ্ণবর্ণ দেবীর সৃষ্টি হয়। ইনিই দেবী কৌশিকী। এই সেই তিথি যেদিন এই কৃষ্ণবর্ণা দেবীর উৎপত্তিক্ষণও, পাশাপাশি, শুম্ভ-নিশুম্ভ বধের লগ্নও। তাই এই অমাবস্যার নাম কৌশিকী অমাবস্যা।