ভোর থেকেই মহাসমারোহে পূজিত হচ্ছে কাটোয়ার ‘খ্যাপা কালী’, দেখুন ছবি
পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার প্রাচীন কালী খ্যাপামার পুজো ভোর থেকেই শুরু হয়ে গেল। খ্যাপামার পুজোকে ঘিরে স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রচুর উন্মাদনা থাকে। কাটোয়ার 'মা কালী' তিনি কারো কাছে খ্যাপা কালী কারো কাছে আবার ‘ক্ষেপি মা’ নামেই পরিচিত।
মা কালী এখানে ভক্তের পরিচয়েই পরিচিত। গঙ্গার ঘাট থেকে প্রায় ৫০০ মিটার দূরে মালোপাড়া যেখানে কয়েক শতাব্দী আগে শ্রী চৈতন্য দেব দীক্ষা নিয়ে ছিলেন কেশব ভারতীর কাছে সেখানে এক সময় ছিল ঘন জঙ্গল। সময়টা চৈতন্যের সময়েরও কয়েক শতাব্দী পরে শ্রী চৈতন্য দেবের নাম জড়ানো বৈষ্ণবভূমি শক্তির আরাধনা স্থল হয়ে ওঠে সাধক নরেন খ্যাপার সাধনায়।
জঙ্গল লাগোয়া জনপদে স্থানীয় বাসিন্দা নরেন ক্ষ্যাপা প্রথম মা এর পূজোর সূচনা করেন। নরেন ছিলেন মালো অর্থাৎ জেলে সম্প্রদায়ভুক্ত, তিনি ছিলেন সাধক প্রকৃতির ও খানিকটা খ্যাপাটে স্বভাবের। জনশ্রুতি আছে তিনিই ঝোপঝাড়ের ভিতরেই নিজের হাতে কালি মূর্তি তৈরি করে পূজার্চনা শুরু করেন।
জেলে সম্প্রদায়ের নরেন খ্যাপার নাম থেকেই তার পূজিত কালী খ্যাপা কালী নামে পরিচিত ও পূজিত হয়। কেউ বলে খ্যাপা ছেলের ‘খ্যাপি মা’।
বহু দিন পর্যন্ত মালো সম্প্রদায়ের লোকজনই এই পুজো চালিয়ে আসতেন, বর্তমানে ট্রাস্টি কমিটি এই পুজো চালায়। দেবী এখানে সালঙ্কার। মাকে সাজানো হয় বহু স্বর্ণালঙ্কারে। এক আধ ভরি নয় প্রায় পাঁচ কেজি সোনার গহনা দিয়ে সাজানো হয় মায়ের মূর্তি। তারপরই পুজো হয় কাটোয়ার খ্যাপা কালীর সকলের খ্যাপী মায়ের।
সময়ের সঙ্গে খ্যাপামার প্রচার ও প্রসার বেড়েছে। পুজোর রাত থেকেই পার্শ্ববর্তী বীরভূম,নদীয়া ও মুর্শিদাবাদ জেলা থেকে প্রচুর ভক্তের সমাগম হয়ে থাকে। ভোর রাতে প্রতিমাকে পাঁচ কেজি সোনার অলঙ্কার দিয়ে সাজানো হয়।
পুলিসি নজরদারিতে রাজবেশে কালী মণ্ডপে থাকেন। ভক্তদের সামাল দিতেও মোতায়েন হয়েছে পুলিস। স্থানীয় মানুষের বিশ্বাস এই ‘খ্যাপা মা’ খুবই জাগ্রত।