একাধিক বিয়ে, তাঁর নামে পর্ন ভিডিয়ো, বারবার বিতর্কে অল্পবয়সে বাবা-মাকে হারানো পরীমণি
বেশকিছুদিন ধরেই চর্চায় রয়েছেন বাংলাদেশের অভিনেত্রী পরীমণি। আপাতত তিনি বাংলাদেশের র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-এর হেফাজতে। মাদক নিয়ন্ত্রক আইনের আওতায় তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত চলছে। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, অভিনেত্রীর বাড়ি থেকে উদ্ধার ৩০টিরও বেশি বিদেশি মদের বোতল ও এলএসডি নেশা করার জন্য ব্লটিং কাগত ও কিছু মাদক। শুধু অভিনেত্রীকেই নয়, বুধবার আটক করা হয় অভিনেত্রীর গাড়ির চালক ও বাড়ির এক কর্মীকেও।
কিন্তু কোথা থেকে কীভাবে উঠে এসেছিলেন বাংলাদেশের অভিনেত্রী পরীমণি? জানা যায়, তাঁর আসল নাম শামসুন্নাহার স্মৃতি। ১৯৯২ সালের ২৪ অক্টোবর বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার নড়াইলে এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। খুব ছোটবেলায় মা এবং পরে বাবাকে হারিয়ে বড় হন পিরোজপুরে নানার কাছে। সেখান থেকেই মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক শেষে ২০১১ সালে আসেন ঢাকায়। নাচ শেখেন। পরে মডেলিং থেকে ছোট পর্দায় আবির্ভাব, টিভি নাটকে অভিনয়। শামসুন্নাহার নাম বদলে হয়ে ওঠেন পরীমণি। এরপর রূপালী পর্দায় আসা। শামসুন্নাহার স্মৃতি হয়ে উঠেন পরী মণি।
২০১৫ সালে পরীমণির প্রথম ছবি 'ভালোবাসা সীমাহীন'। সেখানে তাঁর খোলামেলা পোশাক, সাহসী মন্তব্যের কারণে বাংলাদেশে তিনি তরুণ প্রজন্মের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছেন খুব তাড়াতাড়ি। পরবর্তীকালে তাঁর অভিনীত ছবিগুলির তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবিগুলির মধ্যে কয়েকটি হল, 'মনজুড়ে তুই', 'লভার নম্বর ওয়ান', 'নগর মস্তান', 'মহুয়া সুন্দরী', 'সোনা বন্ধু', মন জানে না মনের ঠিকানা', 'ধূমকেতু' ইত্যাদি।
বাংলাদেশের এক সংবাদ-মাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বাংলাদেশের কিছু লোকজন দাবি করেন, রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় থাকায় এতদিন পরীমণিকে নিয়ে কেউ তেমন উচ্চবাচ্য করেনি। তার অতীত ও বর্তমানের নানা কাহিনী জানা থাকলেও কেউ মুখ খোলেনি। বাংলাদেশের কিছু মানুষের দাবি, পরীমণি যতটা না নায়িকা হতে পেরেছেন, তার চেয়ে বেশি প্রভাবশালী মহলে বিচরণ করতে সক্ষম হয়েছেন।
বাংলাদেশের এক সংবাদ-মাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, পরীমণির বাবার ছিল গাড়ির ব্যবসা। তাঁর বাড়ি যশোর হলেও ব্যবসায়িক কারণে তাকে দেশের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে থাকতে হতো। ২০০৭-০৮ সালের দিকে পরীমনির মা অগুনে দ্বগ্ধ হয়ে মারা যান। তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি অনেকটা রহস্যাবৃত। এরপর থেকে পরীমণিকে তাঁর বাবার সঙ্গে থাকতেন। জানা যায়, ২০১২ সালের ২১ জানুয়ারি সিলেটে তাঁর বাবার গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায়।
জানা যায়, ২০১২ সালে ফিরদৌস কবীর সৌরভ বলে এক ফুটবলারের সঙ্গে নাকি বিয়ে হয়েছিল পরীমণির। ২০১৬ সালে সৌরভের সঙ্গে পরীমণির কিছু ঘনিষ্ঠ ছবি ফাঁস হয়ে যায়। যা নিয়ে ক্ষোভও প্রকাশ করেন অভিনেত্রী। এরপর ২০২০ সালে ছোটপর্দার পরিচালক কামরুস জামান রনির সঙ্গে গোপনে বিয়ে সারেন পরীমণি।
২০১৮ সালে পরীমণি সাংবাদিক তামিম হাসানের সঙ্গেও বাগদান সেরেছিলেন। কিন্তু বিয়ের আগেও সেই সম্পর্ক ভেঙে যায়। একবার পরীমণি নিজেই বলেছিলেন, নামের অক্ষরে 'র' না থাকলে নাকি তিনি সেই ছেলেকে তিনি বিয়ে করবেন না।
এদিকে পরীমণির কথায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরই নাকি তাঁর প্রথম প্রেমিক। আঁকতে শেখার পর তিনি প্রথম রবি ঠাকুরের ছবিই এঁকেছিলেন। এদিকে জানা যায়, বাংলাদেশের রাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার কথিত চলচ্চিত্র প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজের হাত ধরে বড় পর্দায় পথচলা শুরু করেন পরী। সিনেমায় নাম লেখানোর আগে দীর্ঘদিন তাঁর কাছেই থাকতেন নায়িকা।
নেটদুনিয়ায় পরীমণির নামে একাধিক পর্ন ভিডিয়ো পাওয়া যায়। তার মধ্যে নির্দিষ্ট একটি ভিডিয়োতে দেখা যায়, পরীমণির মতো দেখতে এক মহিলা ভিডিয়ো চ্যাটে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করতে দেখা গিয়েছে। সেই ভিডিয়ো চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে, যদিও তা পরীমণির কিন্তা তা প্রমাণিত নয়।
বেশকিছুদিন আগে বাংলাদেশের ব্যবসায়ী নাসিরউদ্দিন মাহমুদ এবং তাঁর বন্ধু তুহিন সিদ্দিকী অমির বিরুদ্ধে শারীরিক হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন পরীমণি। অভিনেত্রীর দাবি ছিল, তাঁকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে এবং তাঁকে ধর্ষণ ও হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বিচার চেয়েছিলেন পরীমণি। পরে ফের সোশ্যাল মিডিয়ায় পরীমণি জানিয়েছিলেন, তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেছে বাংলাদেশ প্রশাসন। সেই মামলা এখনও চলছে। সেই ঘটনার পর ফের মাদককাণ্ডে বিতর্কে পরীমণি।