শ্রাবণের সোমবারের আগে জেনে নিন তারকেশ্বরের স্বয়ম্ভূলিঙ্গের মহিমা
শ্রাবণ মাসের সোমবার তারকেশ্বরে শিবলিঙ্গে জল ঢালতে হাজির হন হাজার হাজার মানুষ। ভোলেবাবার ভক্তদের ভিড়ে থিকথিক করে গোটা এলাকা। তিন ধারণের জায়গা থাকে না তারকেশ্বরমুখি ট্রেনে বাসে। শিবভক্তদের বিশ্বাস, শ্রাবণ মাসের সোমবার শিবলিঙ্গে জল ঢাললে পূরণ হয় সব মনষ্কামনা। মন্দিরের দুধপুকুরে স্নান করে তৃপ্ত হন ভক্তরা। কিন্তু তারকেশ্বর মন্দির কী করে প্রতিষ্ঠিত হল তা জানা আছে কি?
লোককথা অনুসারে তারকেশ্বর মন্দিরের ইতিহাস বহু পুরনো। এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা এক অবাঙালি। বিষ্ণুদাস নামে সেই ব্যক্তি ছিলেন পরম শিবভক্ত। উত্তর প্রদেশ থেকে এসে হুগলিতে বসবাস শুরু করেন তিনি। কিন্তু স্থানীয়রা তাঁর ওপর নির্যাতন শুরু করেন। নানা ভাবে উত্যক্ত করা হত বিষ্ণুদাসকে।
এরই মধ্যে বিষ্ণুদাসের ভাই দেখতে পান, জঙ্গলে একটি কালো পাথরের ওপর গরুরা রোজ গিয়ে দুধ দান করে। সেকথা বিষ্ণুদাসকে জানান তিনি।
এর পরই স্বপ্নাদিষ্ট হন বিষ্ণুদাস। স্বপ্নাদেশে ওই পাথরটিকে শিবজ্ঞানে পুজো করার নির্দেশ পান তিনি। এর পরই ছোট একটি মন্দির গড়ে পাথরটিকে পুজো করতে শুরু করেন তিনি। তৈরি হয় মন্দির। মহাদেবের তারকেশ্বর রূপের নামে নামকরণ হয় মন্দিরটির।
তারকেশ্বরের শিবলিঙ্গ কেউ স্থাপন করেননি। তাছাড়া গঙ্গার পলল ভূমিকে অমন পাথর মেলাও মুশকিল। তাই সেখানে শিব স্বয়ং আবির্ভূত হয়েছিলেন বলে মনে করা হয়। তাই তারকেশ্বরের শিবলিঙ্গকে বলা হয় স্বয়ম্ভূলিঙ্গ।
সময়ের সঙ্গে বহুবার পুনর্নির্মাণ হয়েছে এই মন্দিরের। ১৭২৯ সালে মল্লরাজারা মন্দিরটির সংস্কার করেন। বর্তমানে যে মন্দিরটি দেখা যায় তা মল্লরাজাদেরই তৈরি।
তারকেশ্বর ঘিরে রয়েছে নানা কিং। বহু নারী সন্তান কামনায় শিবের কাছে প্রার্থনা করেন। বিশেষ করে শ্রাবণ মাসে ও শিবরাত্রিতে ভক্তের ঢল নামে মন্দিরে। মন্দিরে পুজো দেওয়ার পাশাপাশি পাশের দুধপুকুরের জল ঘিরেও রয়েছে নানা লোককথা।