BCCI AGM: বিসিসিআই-তে রাজনীতির দাপট! রজার বিনির নতুন কমিটির সঙ্গে জুড়ে রয়েছে বিজেপি-কংগ্রেস
৬৭ বছর বয়সী রজার বিনি ১৯৭৯ থেকে ১৯৮৭ সালের মধ্যে ২৭টি টেস্টে খেলেছিলেন এবং ৪৭টি উইকেট নিয়েছিলেন। ১৯৮০-৮৭ সালের মধ্যে ৭২টি একদিনের ম্যাচ খেলেছিলেন বিনি। যার মধ্যে তাঁর কেরিয়ারের সেরা সময় ছিল ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপ, যেখানে তিনি ১৮টি উইকেট নিয়েছিলেন। ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর, তিনি ভারতের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের কোচ হয়েছিলেন। সেই দল ২০০০ সালে বিশ্বকাপ খেতাব জিতেছিল। তিনি ২০১২ সাল থেকে রঞ্জি ট্রফিতে বাংলা এবং কর্ণাটক দলের সঙ্গেও কাজ করেছেন। তিনি জাতীয় সিনিয়র নির্বাচক কমিটির অংশ ছিলেন। কিন্তু ২০১৫ সালে স্বার্থের সংঘাতের কারণে তাঁকে সেই দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তখন তাঁর ছেলে স্টুয়ার্ট বিনিও ভারতীয় দলের সদস্য ছিলেন। ক্রিকেট প্রশাসনে কাজ করার পর, বিনি ২০১৯ সালে কর্ণাটক স্টেট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। সেখান থেকেই এবার তিনি ভারতীয় বোর্ডের মসনদে বসে গেলেন।
বিসিসিআই-এর মসনদে যেই বসুন, যে রাজনৈতিক দল দ্বারাই বোর্ড পরিচালিত হোক, রাজীব শুক্লা ঠিক নিজের জায়গা ধরে রেখেছেন। কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ একটা সময় টিম ইন্ডিয়ার ম্যানেজার হিসেবে অনেক বিদেশ সফর করেছেন। গত এক দশকের বেশি সময় ধরে 'শুক্লা জি' বোর্ডের একাধিক পদ সামলেছেন। একটা সময় আইপিএল কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ছিলেন। এরপর নিয়মমাফিক কুলিং অফে চলে গেলেও, ২০২০ সালে বোর্ডে সহ সভাপতি পদ পেয়েছিলেন। নতুন কমিটিতে একই পদে আছেন তিনি।
বিসিসিআই-এর নতুন যে কমিটিতেও সচিব পদে রয়ে গিয়েছেন জয় শাহ। এমনিতে তিনি নিজে কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন। কিন্তু তাঁর আরেকটি পরিচয় সবার জানা। তিনি দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপির একেবারের শীর্ষস্তরের নেতা অমিত শাহর ছেলে।
উত্তর-পুর্ব ভারতের অন্যতম ক্রিকেট প্রশাসক হিসেবে দেবজিত সাইকিয়ার পরিচয় আছে। একটা সময় অসমের হয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলেছেন। গত কয়েক বছর ধরে অসম ক্রিকেট সংস্থার সচিব পদে রয়েছেন। এহেন দেবজিত সাইকিয়া বিসিসিআই-এর সহসচিব হয়েছেন । তিনিও যুক্ত বিজেপির সঙ্গে। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার ঘনিষ্ঠ।
বোর্ডের কোষাধ্যক্ষ পদে এসেছেন আশিস শেলার। তাঁর আর এক পরিচয়, তিনি মহারাষ্ট্রের বিজেপি বিধায়ক। দোর্দণ্ডপ্রতাপ এই নেতা মুম্বই বিজেপির সভাপতিও বটে। এর আগে তিনি ছিলেন মুম্বই ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের শীর্ষ পদে।
আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের নতুন চেয়ারম্যান হলেন অরুণ ধুমল। তাঁরও একটি বড় রাজনৈতিক পরিচয় রয়েছে। তিনি কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা অনুরাগ ঠাকুরর ভাই। ২০১৯ সালে হিমাচলপ্রদেশ ক্রিকেট সংস্থার সভাপতি ছিলেন। গত কিমিটিতে কোষাধ্যক্ষ হিসেবে কাজ করেছেন।
প্রাক্তন বিসিসিআই ও আইসিসি প্রধান প্রয়াত জগমোহন ডালমিয়ার ছেলে ভারতীয় ক্রিকেট মহলে পরিচিত নাম। ২০১৫ সালে জগমোহন ডালমিয়া চলে যাওয়ার পর সিএবি-র সচিব পদে ছিলেন তিনি। এরপর ২০১৯ সালে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বিসিসিআই সভাপতির দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেওয়ার পর, সিএবি-র হটসিটে বসেন তিনি। জয় শাহ-র সঙ্গে সম্পর্ক সবাই জানে। এছাড়া তাঁর দিদি বৈশালী ডালমিয়া বিজেপি-র নেত্রী। এহেন অভিষেক এবার সিএবি থেকে আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের অন্যতম সদস্য হয়ে গেলেন।
উত্তর-পুর্ব ভারতের ক্রিকেট উন্নয়নে বড় ভূমিকা নিয়েছেন খাইরুল জামাল মজুমদার। তবে তিনি মামোন নামেই বেশি পরিচিত। এর আগে আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলে ছিলেন। এবার তিনি অ্যাপেক্স কাউন্সিলে এলেন। আইজলের এই ক্রিকেট কর্তা আবার দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-র খুব কাছের।