লক্ষ্মীপুজোয় ঐতিহ্য মেনেই পালিত মা তারার আবির্ভাব তিথি, জেনে নিন দেবীকথা
নিজস্ব প্রতিবেদন: শুক্লা চতুর্দশী। তারাপীঠে তারা মায়ের আবির্ভাব তিথি। প্রতি বারের মত এবারও সেজে উঠল মহাপীঠ তারাপীঠ। সারাদিন ধরে চলল পুজো পাঠ। সন্ধ্যায় বিশেষ ভোগ দেওয়া হল তারা মাকে।
লক্ষ্মী মায়ের আরাধনায় যখন মেতে গোটা বাংলা, তখনই তারাপীঠে এক অন্য উত্সব। ধুমধাম করে তারা মায়ের আবির্ভাব তিথি পালন হল শুক্রবার।
কথিত আছে, কোজাগরী পূর্ণিমার আগের দিন তারাপীঠ মহাশ্মশানের শ্বেত শিমুল গাছের নীচে দেবীর শিলামূর্তি পেয়েছিলেন ঋষি বশিষ্ঠ। এরপর সেই মূর্তি তলিয়ে যায় কালের গর্ভে। জনশ্রুতি, পাল রাজাদের আমলে জয়দত্ত সওদাগর স্বপ্নাদেশ পেয়ে শুক্লা চতুর্দশী তিথিতে দেবীর শিলা মুর্তি উদ্ধার করে মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করেন। জয়দত্তের পর নাটোরের রানি ফের তৈরি করেন মন্দির।
তারা মা উত্তরমুখে আসীন হলেও বছরে এই একটা দিন পশ্চিম মুখে বসানো হয় তাঁকে। গর্ভগৃহ থেকে বার করে দেবী মূর্তিকে আনা হয় বিরামখানায়। জনশ্রুতি, ১৭০১ সালে তত্কালীন তান্ত্রিক পুরোহিতরা আবির্ভাব তিথিতে মায়ের পুজো করছিলেন। সে সময় মলুটির নানকার রাজা রাখরচন্দ্র মায়ের সামনে আরাধনায় বসেন। তন্ত্রসাধকরা তাঁর পুজোপাঠ বন্ধ করে দেন। দ্বারকা নদের পশ্চিম পাড়ে ঘট প্রতিষ্ঠা করে তারা মায়ের পুজো করে গ্রামে ফিরে যান। সেই রাতেই তারাপীঠে তত্কালীন প্রধান তান্ত্রিক আনন্দনাথকে তারা মা স্বপ্নাদেশ দেন, রাখরচন্দ্র তাঁর ভক্ত, অভিমান করে চলে গেছেন। তাই মায়ের পুজো যেন প্রতিবছর এইদিনে পশ্চিম মুখ করে হয়। সেই ট্র্যাডিশন আজও চলছে।
সারাদিন ভোগের ব্যবস্থা হয় না। এই তিথিতে সন্ধের পর তারা মাকে ভোগ দেওয়াই রীতি। সব মিলিয়ে শুক্রবার তারাপীঠে ছিল এক অন্যদিন।