Satyajit-র সঙ্গে সম্পর্ক! কেরিয়ার হারানোর মুখে হাল ধরেন Uttam
৭৯তে পা। ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সত্যজিতের 'চারুলতা'র জন্মদিন। মাধবী মুখোপাধ্যায়ের অভিনয়ে হাতেখড়ি অবশ্য ছোটবেলাতেই। মঞ্চে অভিনয় দিয়েই কেরিয়ার শুরু করেছিলেন। অভিনেত্রী লীলা দেবীর মেয়ে তিনি। বাবা ছিলেন শৈলেন্দ্র মুখোপাধ্যায়।
শিশির ভাদুড়ি, নির্মলেন্দু লাহিড়ী এবং ছবি বিশ্বাসের মতো অভিনেতাদের সঙ্গে মঞ্চে কাজ করেছেন মাধবী মুখোপাধ্যায়। পরবর্তীকালে তিনিই হয়ে ওঠেন সত্যজিৎ-এর 'চারুলতা'। অস্কারের হল অফ ফেম-এ ভারতীয় ছবির প্রতিনিধি হিসাবে রয়েছে সত্যজিৎ-এর 'চারুলতা' অর্থৎ মাধবীর ছবি।
তবে শুধু সত্যজিৎ রায় নয়, মৃণাল সেন এবং ঋত্বিক ঘটক, তিন শ্রেষ্ঠ পরিচালকের ছবিতেই নায়িকা হয়েছিলেন মাধবী মুখোপাধ্যায়। মৃণাল সেনের '২২শে শ্রাবণ'এ অভিনয় করেন তিনি। যদিও তখনও তাঁর নাম ছিল মাধুরী। ছবির প্রযোজক বিজয় চট্টোপাধ্যায় তাঁর নাম দেন মাধবী।
ঋত্বিক ঘটকের 'সুবর্ণরেখা' ছবিতে অভিনয় করেন মাধবী মুখোপাধ্যায়।
সত্যজিৎ রায়ের ছবিতে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে একাধিকবার জুটি বেঁধেছেন মাধবী মুখোপাধ্যায়। আর বারবার মন কেড়েছে এই জুটির অভিনয়।
একসময় গুঞ্জন ছিল সত্যজিৎ রায় নাকি মাধবী মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। 'চারুলতা' সিনেমা মুক্তি পাওয়ার ঠিক পরবর্তী সময়ে এই গুঞ্জন শোনা যায়। পরপর ২টি সিনেমা করেছেন সত্যজিৎ রায় ও মাধবী মুখার্জী - 'মহানগর (১৯৬৩)' এবং 'চারুলতা (১৯৬৪)।' দুটো ছবি বক্স অফিসে সফল। নায়িকা প্রশংসিত হয়েছিলেন তাঁর অভিনয়ের জন্য। আর এর ঠিক পরের বছরই মুক্তি পায় মাধবী মুখোপাধ্যায় অভিনীত সত্যজিৎ রায় পরিচালিত 'কাপুরুষ (১৯৬৫)। যদিও সেটি চারুলতা ও মহানগরের থেকে তুলনামূলক কম সাফল্য পায়।
শোনা যায়, 'চারুলতা' সিনেমায় সত্যজিৎ রায় নিজের মনের মতো করে চারুকে সাজিয়েছিলেন। এমনকি পরবর্তীকালে 'ঘরে বাইরে' ছবি বানানোর সময়ও স্বাতীলেখা সেনগুপ্তকে পরিচালক চারুর ধাঁচে তৈরি করেছিলেন বলে গুঞ্জন শোনা গিয়েছিল।
পরবর্তীকালে বিজয়া দেবী তার আত্মজীবনীতে এই ঘটনার উল্লেখ করেন। 'আমাদের কথা' প্রকাশিত হয় কলকাতায়, ২৮-এ এপ্রিল। এই জীবনবৃত্তান্তে তিনি সুস্পষ্টভাবে ইঙ্গিত করেন তাঁর স্বামীর এই সম্পর্কের কথা। তিনি বলেন, তাঁর স্বামী, অর্থাৎ সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে নায়িকার স্ট্যান্ডার্ড একেবারেই মেলেনা। যদিও তিনি কোনো নায়িকার নাম নেননি, তবুও সঠিকভাবে বুঝে নিতে কারোর কোনো অসুবিধা হয়নি। বিজয়া রায় লিখেছিলেন, ''এই গুঞ্জন তাঁকে কষ্ট দিয়েছিল''।
প্রেমের গুঞ্জনের মাঝে বিজয়া রায়ের আপত্তিতে একটা সময় সত্যজিৎ রায়ের ছবি থেকে বাদ পড়েছিলেন। সেসময় উত্তম কুমারের হাত ধরে ফের ছবির দুনিয়ায় ফিরে এসেছিলেন মাধবী। শোনা যায় মহানায়ক হাত না ধরলে হারিয়ে যেতেন নায়িকা। উত্তমের সঙ্গে 'শঙ্খবেলা' 'থানা থেকে আসছি', 'অগ্নীশ্বর' সহ পর পর ৭টি ছবিতে দেখা যায় মাধবীকে।
ব্যক্তিগত জীবনে অভিনেতা নির্মল কুমারের সঙ্গে সাতপাকে বাঁধা পড়েছিলেন। তাঁদের দুই মেয়েও রয়েছে। আইনত বিবাহবিচ্ছেদ না হলেও বহু বছর হয়ে গিয়েছে তাঁরা আলাদা থাকেন। তবে তা সত্ত্বেও নির্মল কুমারের সঙ্গে মাধবী মুখোপাধ্যায়ের বন্ধুত্ব এখনও অটুট।