দর্শকহীন পুজো, অনুব্রতর কোমরে দড়ি থেকে কমিশনকে তুলোধনা- নেপথ্যে এই বাঙালি বিচারপতি

Mon, 26 Apr 2021-5:16 pm,

নিজস্ব প্রতিবেদন: বিচারপতি, ক্রিকেটপ্রেমী, ক্রিকেট সাংবাদিক, ধোসাপ্রেমী বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে স্বাগত। মাদ্রাজ হাইকোর্টের বাঙালি বিচারপতিকে এভাবেই বরণ করেছিল মাদ্রাজ বার অ্যাসোসিয়েশন। হৃদয় ঘোষ মামলা, টেট গাফিলতি থেকে  দুর্গাপুজোয় অনুদান - কলকাতা হাইকোর্টে একাধিক মামলায় রায় দিয়েছেন। আর প্রতিটি রায়ই জায়গা করে নিয়েছে সংবাদপত্রের শিরোনামে। যেমনটা তাঁর সোমবারের রায়।  মাদ্রাজ হাইকোর্টের (Madras High Court) প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,''কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের জন্য দায়ী নির্বাচন কমিশন। আপনাদের আধিকারিকদের বিরুদ্ধে খুনের ধারায় মামলা করা উচিত।''   

 

দুর্গাপুজো হবে। তবে মণ্ডপে দর্শকের নো এন্টি। ৫ জনের বেশি  উদ্যোক্তারাও মণ্ডপে ঢুকতে পারবেন না। গতবছর ১৯ অক্টোবর নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, কোভিড সঙ্কটের মধ্যে কীভাবে উত্‍সব হচ্ছে? এর পরিণতি কি আমরা বুঝতে পারছি? এমন একটা সময়ে এই ঝুঁকি নেওয়া যায় না। সাধারণ মানুষ ভার্চুয়াল কভারেজ দেখুন।  

এই রায়ের কয়েকদিন আগে পুজো অনুদান নিয়েও রাজ্য প্রশাসনকে তুলোধনা করেন বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায়।  ১৫ অক্টোবর শুনানিতে রাজ্যের উদ্দেশে তাঁর প্রশ্ন ছিল, অনুদান শুধু পুজোয় কেন? অন্য উত্‍সব কী দোষ করল? গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায়  ভেদাভেদ করা যায়?

 

পুজো অনুদানের টাকায় মাস্ক ও স্যানিটাইজারই কিনতে হবে। রাজ্য প্রশাসনকে তা নিশ্চিক করার নির্দেশ দেন বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়। সুপ্রিম কোর্ট অন্য একটি মামলার জানিয়েছিল, কোভিড আবহে উত্‍সবে পথ দেখিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সেই গাইডলাইন মেনেই উত্‍সব হওয়া প্রয়োজন।  

২০১৩-র পঞ্চায়েত ভোটের আগে খুন হয়েছিলেন পাড়ুইয়ের কসবা পঞ্চায়েতের নির্দল প্রার্থী হৃদয় ঘোষ। অভিযোগ ওঠে অনুব্রত মণ্ডলের উস্কানিমূলক হুমকির পর এই ঘটনা ঘটে। রাজ্য রাজনীতিতে ঝড় তোলা এই খুনে অনুব্রত মণ্ডলকে জেলে পোরার হুঁশিয়ারি দিয়ে বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আদালত মনে করলে যে কাউকে (অনুব্রত) কোমরে দড়ি দিয়ে জেলে নিয়ে যাবে পুলিস। 

 

প্রশাসনের গাফিলতি, আইনশৃঙ্খলার অবনতি বা দুর্নীতির অভিযোগ - এমন ঘটনায় বরাবর কড়া বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায়। দুর্নীতির অভিযোগে সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগে স্থগিতাদেশ দেন। টেট দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে জরিমানা করেন। হাইকোর্টে বিচারপর্বের লাইভ স্ট্রিমিংয়ের অনুমতিও দিয়েছিলেন তিনি।

ক্রিকেট সাংবাদিক হিসাবে কেরিয়ার শুরু করেছিলেন। পরে পেশা পরিবর্তন করে ঢুকে পড়েন আইনি জগতে। একবার এক মামলার শুনানিতে সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, বিচারপতিদের কাজ অনেকটা আম্পায়ারের মতো। তাদের ভুল খেলা বদলে দিতে পারে ফলাফল। আইনি মহলের মতে, বিচারপতি হিসাবেও সেই আদর্শেই অটল তিনি।

ZEENEWS TRENDING STORIES

By continuing to use the site, you agree to the use of cookies. You can find out more by Tapping this link