ঘূর্ণিঝড়ে ট্রলারডুবিতে মৃত্যু বাবার, ভিড়ের মধ্যে সঞ্জয় দাসের সন্তানদের দেখেই কোলে তুলে নিলেন মুখ্যমন্ত্রী

Mon, 11 Nov 2019-3:09 pm,

তন্ময় প্রামাণিক : কাকদ্বীপে প্রশাসনিক বৈঠকের পর নামখানায় ট্রলারডুবিতে মৃত মৎস্যজীবী সঞ্জয় দাসের পরিবারের সঙ্গে দেখা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন কাকদ্বীপ ছাড়ার আগে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন বহু মানুষ। তাঁদের মধ্যে ছিলেন মৃত সঞ্জয় দাসের পরিবার। নিহত মত্‍স্যজীবীর স্ত্রী ও দুই সন্তানকে দেখে এগিয়ে আসেন মুখ্যমন্ত্রী। দুই সন্তানকে কোলে তুলে নেন তিনি।

বুলবুল তাণ্ডবে বিপর্যস্ত বকখালি সহ সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকা। নির্ধারিত উত্তরবঙ্গ সফর বাতিল করে আজ আকাশপথে বকখালি ও নামখানা পরিদর্শনে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিস্তীর্ণ এলাকার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খতিয়ে দেখেন তিনি।

আকাশপথে দুর্গত এলাকা পরিদর্শনের পর ত্রাণ ও পুনর্বাসন নিয়ে জেলাশাসক সহ পদস্থ প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে কাকদ্বীপে প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে বুলবুলের প্রভাবে মৃতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষদের জন্য একাধিক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি।

কাকদ্বীপ থেকে প্রশাসনিক বৈঠক সেরে ফেরার সময়ই তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসেন বহু মানুষ। তাঁদের মধ্যে ছিলেন মৃত সঞ্জয় দাসের স্ত্রীও।

মুখ্যমন্ত্রী নিজে হাতে ক্ষতিপূরণের চেক তুলে দেন সঞ্জয় দাসের স্ত্রীর হাতে। সেই সঙ্গে তিনি আরও বলেন যে এই বিপদের দিনে সঞ্জয় দাসের পরিবারকে সবরকম সাহায়্য করবে রাজ্য সরকার। পাশে থাকার আশ্বাস দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

ফ্রেজারগঞ্জ পাতিবুনিয়ার কাছে ৪০টি ট্রলার নোঙর করে দাঁড়িয়েছিল। শনিবার রাতে ঘূর্ণিঝড়ের সময় ৪টি ট্রলার ডুবে যায়। ট্রলার ডুবির ঘটনায় মৃত্যু হয় সঞ্জয় দাস নামে ওই মৎস্যজীবীর। এখনও নিখোঁজ রয়েছেন ৮ জন।

মর্মান্তিক এই ঘটনার জন্য স্থানীয়রা মালিকপক্ষের জোরজুলুমকেই দায়ী করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, ঘূর্ণিঝড় বুলবুল-এর সতর্কতা জারি হওয়ার পর ট্রলারগুলিকে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। কিন্তু মালিকপক্ষের চাপে মৎস্যজীবীরা ট্রলারেই থেকে গিয়েছিলেন। কারণ, নইলে কাজ হারাতে হত মৎস্যজীবীদের।

এমনকি, কুসংস্কারবশত ট্রলারগুলিকে মালিকপক্ষ তীরে পর্যন্ত ঠেকাতে দেয় না। কারণ ট্রলার মালিকরা সর্বক্ষণ মৎস্যজীবীদের এই বলে চাপ দেয় যে, "মাছ নিয়ে ফিরবে তোমরা। নইলে তোমরা কেউ মাটিতে নামবে না।"

মর্মান্তিক এই ঘটনার খবর পেয়েই কাকদ্বীপ পূর্ব স্টিমার ঘাটে সঞ্জয় দাসের বাড়ি পৌঁছে গিয়েছিল জি ২৪ ঘণ্টার প্রতিনিধি। বাড়িতে সঞ্জয় দাসের বৃদ্ধ বাবা, স্ত্রী, ৭ বছরের মেয়ে ও শিশুসন্তান রয়েছে। আজ মায়ের সঙ্গে এসেছিল সঞ্জয় দাসের দুই সন্তানও। ভিড়ের মধ্যে তাঁদের দেখতে পেয়ে দুই শিশুকেই কোলে তুলে নেন মুখ্যমন্ত্রী। মাথায় হাত রেখে সান্ত্বনা দিতে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রীকে।

ZEENEWS TRENDING STORIES

By continuing to use the site, you agree to the use of cookies. You can find out more by Tapping this link