১৮ বছরের চাপা আগুন দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ল লাপুড়িয়া গ্রামে
নিজস্ব প্রতিবেদন জমি সংক্রান্ত বিবাদের জেরে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল বাঁকুড়া সদর থানার লাপুড়িয়া গ্রাম। সোমবার সকাল থেকে দফায় দফায় সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। নির্মমভাবে ভাঙচুর চালানো হয় ওই গ্রামের বাউরিপাড়ার প্রায় দশ বারোটি বাড়িতে। গ্রামের অদূরে থাকা একটি বাড়িতে আগুনও লাগিয়ে দেওয়া হয়।
ঘটনার সূত্রপাত ১৮ বছর আগে। লাপুড়িয়া গ্রামের অদূরে থাকা একটি জমির পাট্টা পায় গ্রামের বেশ কিছু বাসিন্দা। গোয়ালপাড়ার বাসিন্দারা ওই জমিকে খেলার মাঠ হিসাবে ব্যবহার করতে চান। অন্যপক্ষে পাট্টা পাওয়া জমিতে বাড়ি তৈরী করে বসবাস করতে চায় বাউরিপাড়ারার বাসিন্দারা । এই নিয়েই একই গ্রামের বাউরিপাড়ার সাথে মতবিরোধ হয় গোয়ালাপাড়ার।
এরপর থেকে বিভিন্ন ইস্যুতে দুই পাড়ার মধ্যে গন্ডগোল লেগেই থাকে। রবিবার বাউরিপাড়ার এক বাসিন্দার সঙ্গে পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধ বাঁধে গোয়ালাপাড়ার বাসিন্দাদের। বিরোধ কিছুক্ষনের মধ্যেই সংঘর্ষের চেহারা নেয়। সোমবার সকালে এলাকা আবার রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়।
বাউরিপাড়ার বাসিন্দাদের অভিযোগ, গোয়ালাপাড়ার একদল যুবক বাউরিপাড়ায় এসে নির্বিচারে একের পর এক বাড়ি ভাঙচুর শুরু করে। বাউরিপাড়ায় সবমিলিয়ে ১০-১২টি বাড়ি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
একটি বাড়িতে আগুনও লাগিয়ে দেওয়া হয়। বাড়ির পর বাড়ি লুঠ করে টাকা, ঘরের সব জিনিসপত্র সব নিয়ে গেছে। আবার খুনের হুমকিও দিয়েছে।
গোয়ালাপাড়ার বাসিন্দারা বাউরিপাড়ার বাসিন্দাদের সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাঁদের দাবি নিজেরাই বাড়ি ভাঙচুর করে এই পাড়ার উপর দোষ চাপাচ্ছে।
পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অর্ধেন্দু মুখার্জীর স্বীকার করে নিয়েছেন দীর্ঘদিন একটা ঝামেলা চলছিল দুটি পাড়ার মধ্যে। রবিবার টাকাপয়সা লেনদেন নিয়ে ঝামেলা বাধে। এই ঘটনায় দুই গ্রামের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বাঁকুড়া সদর থানা ও পার্শ্ববর্তী ছাতনা থানার পুলিস। গ্রামে পৌঁছায় দমকলও। দমকল আগুন নেভায়। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় বিশাল পুলিস টহল দিচ্ছে। গোটা ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে ৪ জন মহিলা সহ দুপক্ষের মোট ৯ জনকে আটক করেছে পুলিস।