Kolkata Metro: নাগরিক চাকার ইতিহাস! কালীপুজোয় শুরু করে গঙ্গার নীচ দিয়ে ছুটে চলেছে মেট্রো...
অয়ন ঘোষাল: ১৯৭৬ সালে প্রথম ভবানীপুরের আশুতোষ মুখোপাধ্যায় রোডে সুড়ঙ্গের গর্ত খোঁড়া থেকে ২০২৪ সালের গঙ্গার নিচ দিয়ে মেট্রোর যাত্রা। দেশের প্রথম মেট্রোর সূচনা থেকে সর্বশেষ মুহুর্তের জীবন্ত দলিল বিড়লা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড টেকনোলজিক্যাল মিউজিয়ামে।
বিধানসভায় প্রস্তাব পাশ করিয়েছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিধান চন্দ্র রায়। কাজ শুরু হতে গড়িয়ে গেল আরও বেশ কয়েকটা বছর। অবশেষে মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর সময়কালে ১৯৭৬ সালের ১১ ই মার্চ ভবানীপুরের বাসিন্দারা ভোরে ঘুম থেকে উঠে দেখলেন বিকট শব্দ করে আশুতোষ মুখোপাধ্যায় রোডে কাজ করছে ১২ টি জেসিবি। সেটাই শুরু। সেই মেট্রো যাত্রী পরিষেবা নিয়ে আত্মপ্রকাশ করল ১৯৮৪ সালের ২৪শে অক্টোবর। কালীপুজোর দিন। দেশের প্রথম মেট্রোর চাকা গড়ানো শুরু হয়েছিল সেদিন। তৈরি হয়েছিল ইতিহাস।
২০২৪ সালের ১৫ই মার্চ। কলকাতাবাসী মহা বিস্ময়ে দেখলেন এসপ্ল্যানেড স্টেশন থেকে রওয়ানা হওয়া মেট্রো একটি নীল সুড়ঙ্গ পথ ধরে মাত্র ১২ মিনিটে পৌঁছে দিল হাওড়া স্টেশনে। যাত্রা শুরু হল দেশের প্রথম আন্ডার ওয়াটার মেট্রোর। ফের তৈরি হল ইতিহাস। এই দুই ইতিহাসের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটালো বিড়লা ইন্ডাস্ট্রিয়াল এন্ড টেকনোলজিক্যাল মিউজিয়াম বা বিআইটিএম।
মেট্রোর সেদিন আর মেট্রোর এদিন। সবকিছুই ডিটেল ইনস্টলেশন এবং মডেলের মাধ্যমে চাক্ষুষ করার বিরল সুযোগ এই মিউজিয়ামে। ত্রিস্তরীয় মডেলের মধ্যে দিয়ে মাটির ওপর রাস্তায় চলা বাস ট্যাক্সি মিনিবাস।
তার নিচের স্তরে মেট্রোর কমিউটার জোন এবং টিকিট কাউন্টার। তারও নিচে প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনে যাত্রীদের ওঠানামা। আবার সেই একই রকম ইন্সটলেশনের মাধ্যমে গঙ্গা নদী এবং হাওড়া ব্রিজ, পাশে হাওড়া স্টেশন এবং কলকাতার ধর্মতলা। আর জলস্তরের নিচে সুড়ঙ্গ পথে নীলাভ মায়াবী আলোয় মেট্রোর যাতায়াত। মুগ্ধ করে দেওয়ার মতো নিখুঁত কাজ।
পলি মাটির শহর কলকাতা। চারিপাশে ওয়াটার পকেট এবং লিকেজের আশঙ্কা। সেই মাটিতে গভীর সুড়ঙ্গ তৈরি করে এসপ্ল্যানেড থেকে টালিগঞ্জ পর্যন্ত মেট্রো পথ তৈরি শুধু ইতিহাস নয়, সেই সময়ের উৎকৃষ্ট ইঞ্জিনিয়ারিং এর উজ্বল উদাহরণও বটে।
সেই ছক ভাঙা প্রযুক্তি এবং গঙ্গার নিচে সুড়ঙ্গ তৈরির বেনজির সিদ্ধান্ত কে ভাবি প্রজন্ম বিশেষত ছাত্র ছাত্রীদের কাছে তুলে ধরাই মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষ এবং মেট্রোর মূল উদ্দেশ্য।
পাশাপাশি পিস বোর্ডের টিকিট থেকে ম্যাগনেটিক টিকিট হয়ে টোকেন এবং সেখান থেকে কিউ আর কোড টিকিটের ইতিহাসও স্থান পেয়েছে এই মিউজিয়ামে। যা দেখে উচ্ছ্বসিত পড়ুয়ারাও।