সাফল্যের শীর্ষে আত্মবিশ্বাসী মিমি, লক্ষ্যে স্থির, রোলার কোস্টার রাইডের ঝলক
নিজস্ব প্রতিবেদন: টলিউডের প্রথম সারির নায়িকাদের মধ্যে এখন তিনি অন্যতম এক নাম। সাংসদও বটে। মিমি চক্রবর্তী (Mimi Chakraborty)। শুধু চলচ্চিত্র জগতেই নয়, সমাজের জন্যও তিনি এখন আইকন। জনপ্রিয় নায়িকা সাংসদ এখন ক্লাসের ফার্স্ট গার্ল।
জলপাইগুড়ির মেয়ে মিমি, ছোটবেলা থেকেই মা বাবার নয়নের মণি। জেলায় দাপুটে টম বয় সেই মেয়ে এখন টলিউডে রাজত্ব করছে। আশুতোষ কলেজে পড়াশোনা, তারপরই ছোটপর্দার মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ।
ঋতুপর্ণ ঘোষের হাত ধরেই পা রাখেন ছোটপর্দায়। 'গানের ওপারে' সিরিয়ালে পুপের চরিত্রে যেমন মানানসই হয়ে ওঠেন, তেমনই ধীরে ধীরে বিকশিত হতে থাকে তাঁর অভিনয়। টলিউডের পরিচালকদের পছন্দের নায়িকা হয়ে উঠতে খুব বেশি সময় লাগে নি তাঁর।
'বাপি বাড়ি যা', 'বোঝে না সে বোঝে না' ছবিতে তাঁর অভিনয় প্রশংসিত হয় দর্শক মহলে। নিজের জড়তা কাটিয়ে তিনি তখন সাবলীল অভিনেতা।
ধীরে ধীরে সাহসী হয়ে ওঠেন আরও। মডেলিং, ফোটোশুট থেকে বিজ্ঞাপন, সবেতেই অনায়াস যাতায়াত তাঁর। টলিউডের সার্কেলে ঢুকে পড়েন অভিনেতা, বন্ধুত্ব বাড়ে, প্রথম সারির প্রযোজনা সংস্থার অন্যতম মুখ হয়ে ওঠেন তিনি। সকলের সঙ্গেই তখন তাঁর খুব ভাল সম্পর্ক।
সম্পর্ক তৈরি হয় কমার্শিয়াল ছবির মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া পরিচালকের সঙ্গে। রাজ চক্রবর্তীর সঙ্গে তখন তাঁর প্রেম জমে ওঠে। তবে খুব বেশিদিন স্থায়ী হয় নি সেই সম্পর্ক। বিতর্কে জড়িয়ে পড়ার আগেই নিজেকে গুটিয়ে নেন মিমি।
নুসরতের সঙ্গে বন্ধুত্ব ছিল প্রথম থেকেই। একে অপরকে বোনু বলে ডাকতেন। কেরিয়ার শুরুও প্রায় এখই সময় থেকে। এখন যদিও নুসরতের ইনার-সার্কলে তাঁকে দেখা যাচ্ছে না। নুসরত-শ্রাবন্তী-তনুশ্রী ঘনিষ্ঠতা দেখা যাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে, উল্টোদিকে মিমি-পার্নোর বন্ধুত্ব আরও গাঢ় হচ্ছে।
রূপ যেন ঝরে পড়ে তাঁর। ভিন্ন ধারার ছবিতে নিজের জায়গা তৈরি করেছেন মিমি। চরিত্রের প্রয়োজনে নিজেকে ভেঙেছেন, গড়েছেন বারবার। চ্যালেঞ্জকে স্বাগত জানিয়েছেন নিজেই।
২০১৯ এ লোকসভা নির্বাচনে প্রথমবার প্রার্থী হন তিনি। ভোটে জিতে যাদবপুরের সাংসদ নির্বাচিত হন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রিয় হয়ে ওঠেন কিছুদিনের মধ্যেই। নিজস্বতা তৈরি করেছেন মিমি নিজেই। মনের আনন্দে রেকর্ড করেছেন গান, মিউজিক ভিডিওয় তিনি নেটিজেনদের প্রশংসা কুড়িয়েছেন।
সমাজের জন্য কাজ করতে চেয়েছেন বারবার, জীবন যুদ্ধে লড়ে নিজের অধিকার ছিনিয়ে এনেছেন মিমি। বেক করতে ভালবাসেন, রান্না করে খাওয়ান বন্ধুদের। বাড়িতেও আদরের নায়িকা। কাউকে পরোয়া না করে এগিয়ে চলেছেন নিজের গন্তব্যের দিকে।
সমাজের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন নিঃস্বার্থভাবে। যাদবপুরের সকলের অভাব অভিযোগ মেটাতে মরিয়া সাংসদ মিমি। কারোর ভরসায় না থেকে নিজেই ছুটে গিয়েছেন সকলের কাছে। লকডাউনেও সমান ভাবে খাবার তুলে দিয়েছেন মানুষের মুখে, বেড, অক্সিজেনের ব্যবস্থা করেছেন নিজের উদ্যোগে।
বাড়িতে নিজের পোষ্যদের সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন সবসময়। তাঁর বড় ছেলে চিকু, যে তাঁর জীবনের প্রথমদিন থেকে যুক্ত ছিল। চিকুকে হারিয়ে বেশ কিছুদিন নীরবে ছিলেন তিনি। এখন জুনিয়র চিকু এসেছে পরিবারে। ম্যাক্স ও জুনিয়র চিকুকে নিয়ে সময় কাটাচ্ছেন নায়িকা। রাস্তার পোষ্যদের জন্যও খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন নিয়মিত।
বিতর্কে জড়ালেও তার থেকে বেরিয়ে এসেছেন যুক্তি দিয়ে। কখনই চূড়ান্ত আত্মবিশ্বাসী নয়, বরং সকলের মত করে মিশেছেন। জিতের সঙ্গে তাঁর আগামি ছবি বাজি। আবারও স্বমহিমায় ফিরবেন বড়পর্দায়। অরিন্দম শীলের সঙ্গে 'খেলা যখন' ছবিও রয়েছে পাইপলাইনে। চলছে একের পর এক বিজ্ঞাপনের কাজও।
সাফল্যের শীর্ষে এখন তাঁর নাম। নতুন লুকে নজর কাড়ছেন নায়িকা। প্রস্তুতি নিচ্ছেন আপকামিং প্রজেক্টেরও। সাহায্যের হাত বাড়াচ্ছেন সাধারণের দিকে, তাঁকে প্রাণ ভরে আশীর্বাদ করছেন সমাজের মানুষ। অন্যদিকে কেরিয়ার গড়ার লক্ষ্যে স্থির মিমি।