দারুণ কেরিয়ার! তবুও অবসরে যেতে হল স্বর্ণপদকজয়ী Magawa-কে!

Soumitra Sen Sat, 10 Jul 2021-2:26 pm,

পাঁচ বছরে ৭১টি মাইন এবং অনেক বিস্ফোরক দ্রব্য শনাক্ত করে অসংখ্য মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছে এ। কর্মজীবনে এসেছে একের পর এক সফলতা। জুটেছে স্বীকৃতি-সম্মাননা। এবার সময় হয়েছে বিদায় নেওয়ার পালা। ফলে এবার অবসর। 

 না, কোনও মানুষের কথা  বলা হচ্ছে না।  'ইনি' একজন ইঁদুর। তার নাম 'মাগাওয়া'। বাড়ি তার আফ্রিকা। বাড়ি আফ্রিকায় হলেও তার কর্মজীবন অবশ্য কেটেছে কম্বোডিয়ায়। 

কম্বোডিয়াজুড়ে আনুমানিক ৬০ লাখ মাইন পুঁতে রাখা আছে বলে ধারণা করা হয়ে থাকে। সেসব মাইন শনাক্তের কাজেই একদা আফ্রিকার তাঞ্জানিয়া থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে নিয়ে আসা হয়েছিল মাগাওয়াকে। ১৯৯০ সাল নাগাদ বেলজিয়ামে একটি সংস্থায় অনেক ইঁদুরকে মাইন শনাক্তের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এসব ইঁদুরকে বলা হয় 'হিরো র‍্যাটস'। মাগাওয়া সেই সাহসী ইঁদুরেরই অন্যতম। মাগওয়ার ওজন ১ কিলোগ্রাম ২০০, লম্বায় সে ৭০ সেন্টিমিটার।

কম্বোডিয়ায় মাইন শনাক্ত করে অনেকের চোখেই বিশেষ মর্যাদায় উন্নীত এই জায়ান্ট ইঁদুর। কর্মজীবনে কৃতিত্বের স্বাক্ষর হিসেবে স্বর্ণপদকের মতো সম্মানও পেয়েছে সে। 

 তবে বছরসাতেকের আফ্রিকান এই প্রাণীটি ইদানীং আগের চেয়ে অনেক মন্থর হয়ে গিয়েছে বলেই খবর। ইঁদুর-জীবনের নিরিখে তার বয়সও হয়ে গিয়েছে। তাই একে এখন অবসরে যেতে হল। মাইন শনাক্তের কাজে তার জায়গায় আসছে অপেক্ষাকৃত কম বয়সী ইঁদুর।

নিষ্ঠার সঙ্গে মানুষের প্রাণ বাঁচানোর গুরুদায়িত্বটি পালনের স্বীকৃতিস্বরূপ গত বছরেই মাগাওয়া পিডিএসএ স্বর্ণপদক অর্জন করেছিল। প্রাণীদের সাহসী কর্মকাণ্ডের জন্য এই পদক দেওয়া হয়। এ সম্মাননাকে বলা হয় প্রাণীদের জন্য 'জর্জ ক্রস পদক'। সাহসিকতার জন্য ব্রিটিশ সরকারের সর্বোচ্চ পদক 'জর্জ ক্রস'। ওই সংস্থাটির ৭৭ বছরের ইতিহাসে মাগাওয়াই প্রথম প্রাণী, যে পিডিএসএ অর্জন করল।

কী ভাবে কাজ করত মাগাওয়া? বেলজিয়ামের উক্ত সংস্থাটি বলছে, টেনিস কোর্টের সমান পরিমাণ কোনো জায়গায় মাইন আছে কি না, তা মাত্র ২০ মিনিটের ভেতরে বের করে ফেলতে পারত মাগাওয়া। যে কাজটি একটি মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে কোনো মানুষের করতে সাধারণত এক থেকে চার দিন লেগে যায়!

কিন্তু এত সাফল্য় সত্ত্বেও তাকে কর্মজীবন থেকে অব্যাহতি নিতে হচ্ছে। মাগাওয়ার দেখভালকারী মালেন বলেন, বয়স্ক ও ধীরগতির ইঁদুরটির চাওয়া-পাওয়াকে এবার সম্মান জানানোর সময় এসেছে। মালেন বলেন, 'দক্ষতার দিক দিয়ে এখনও পর্যন্ত মাগাওয়ার সমপর্যায়ের কেউ নেই। তার সঙ্গে থেকে কাজ করতে পেরে আমি গর্বিত।' 

তবে অবসরের আগে মাগওয়ার দায়িত্বও ছিল প্রচুর। নতুন ইঁদুরগুলির 'উপদেষ্টা' হিসেবে কয়েক সপ্তাহ কাজ করল সে। কম্বোডিয়ার পরিবেশে নতুনদের খাপ খাইয়ে নিতে তাকেই নতুনদের দিকে সাহায্যের 'হাত' বাড়িয়ে দিতে হল।

ZEENEWS TRENDING STORIES

By continuing to use the site, you agree to the use of cookies. You can find out more by Tapping this link