২০ লক্ষ বছর আগে অগ্ন্যুৎপাত ঘটেছিল মঙ্গলে, গর্ত ভরে উঠত বরফে!

Soumitra Sen Sun, 18 Apr 2021-6:53 pm,

মঙ্গল যেন ক্রমশই তার রহস্যের পরত খুলে দিচ্ছে। মহাজাগতিক রহস্যের বিষয়ে মানুষের অসীম আগ্রহ। চিরকালের আগ্রহ। সেই আগ্রহের মধ্যেই জায়গা করে নিয়েছে মঙ্গলের প্রতি কৌতূহল। সেই কৌতূহল নিরসন করার নানা চেষ্টার একটি হল মার্স এক্সপ্রেস।

২০০৪ সাল থেকে এই মার্স এক্সপ্রেস মঙ্গলগ্রহে অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে। ইউরোপের উদ্যোগে কোনও গ্রহ সম্পর্কে গবেষণার এটিই প্রথম চেষ্টা। গ্রহ সংক্রান্ত ভূতাত্ত্বিক রাল্ফ ইয়াউমান এই বিষয়টি নিয়ে বলেন, প্রযুক্তিগত দিক থেকে এটা সত্যিই অসাধারণ এক সাফল্য। একটি মহাকাশযান কোনও রকম রক্ষণাবেক্ষণ ছাড়াই প্রায় ২০ বছর ধরে অসম্ভব বিকিরণের মধ্যে দিয়ে অত্যন্ত প্রতিকূল পরিবেশে একটুও ভুল না করে কাজ করে চলেছে!

মার্স এক্সপ্রেসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র হল বিশেষভাবে তৈরি এক ক্যামেরা। রাল্ফ ইয়াউমানও সেটি তৈরির কাজে অংশ নিয়েছিলেন। সেই ক্যামেরা প্রায় নিখুঁত ছবি তুলতে পারে। সেটি কাজে লাগিয়েই প্রথমবার মঙ্গলগ্রহের ত্রিমাত্রিক ও রঙিন মানচিত্র তৈরি করা সম্ভব হয়েছিল।

সেই সব মানচিত্রের ভিত্তিতে সেখানকার ভূতাত্ত্বিক বিকাশ ও জলবায়ুর ইতিহাস সম্পর্কে অনেক নতুন তথ্য পাওয়া গিয়েছে। মঙ্গলগ্রহে পৌঁছনোর কিছু পরেই এই যান আবিষ্কার করেছিল মঙ্গলের বুকে জমাটজল। এটা জানাজানি হতেই সাড়া পড়ে যায়। কেননা সেখানে যে এককালে প্রচুর পরিমাণে জল বয়ে যেত, সেই তত্ত্বের পক্ষেই প্রমাণ জোরদার হল। ইয়াউমান অবশ্য বলেন, শুধু জলের অস্তিত্বের বিষয়টাই নয়, আমরা এখানকার পাহাড়ের উচ্চতা সম্পর্কেও জানি।

মার্স এক্সপ্রেস মঙ্গলের সব চেয়ে বড় আগ্নেয়গিরির মধ্যে তাজা লাভার চিহ্নও পেয়েছে। ২০ লাখ বছর আগে সেখানে অগ্নুৎপাত ঘটেছিল। আজও সেখানকার মাটির নীচে গরম অংশ থাকতে পারে। যা জীবাণুর বিকাশের ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে।

মঙ্গলের বিষুবরেখা ও ক্রান্তীয় অঞ্চলে আরও একটি কৌতূহলোদ্দীপক আবিষ্কার করেছে মার্স এক্সপ্রেস। সে মঙ্গলে হিমবাহের চিহ্ন খুঁজে বার করেছে। রাল্ফ ইয়াউমান বলেন, সেখানে কোনও এক সময়ে উল্কার ধাক্কায় গর্ত তৈরি হয়েছিল। সেই গর্তে বরফ বয়ে যেত। এরকম একাধিক গর্ত ছিল। প্রথম গর্তের নীচে দ্বিতীয় গর্ত। প্রথমটি উপচে পড়ে দ্বিতীয়টি ভরিয়ে দিত।

হিমবাহের চিহ্ন দেখিয়ে দিচ্ছে যে, মঙ্গলগ্রহ এতই অস্থির যে সেখানকার বিষুবরেখা মেরুর দিকে অগ্রসর হচ্ছে এবং এর বিপরীতটাও ঘটছে। সে কারণে অতীত যুগে জলের গতিরও বার বার পরিবর্তন ঘটেছে। সাধারণত নদীর উৎপত্তি ও তার বিনাশের এমন চক্র সম্পূর্ণ হতে কয়েক লাখ বছর সময় লেগে যায়। তবে সেগুলির চিহ্ন থেকে যায়। যেমন এক্ষেত্রেও থেকে গিয়েছে।

ZEENEWS TRENDING STORIES

By continuing to use the site, you agree to the use of cookies. You can find out more by Tapping this link