৫৫ বছর বনাম ৫৫ মাস, সংসদে মোদীর চ্যালেঞ্জে ধুলিসাত্ কংগ্রেস

Thu, 07 Feb 2019-9:00 pm,

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে ১০ বছরের চ্যালেঞ্জ। বৃহস্পতিবার লোকসভার অধিবেশনে কংগ্রেসের ৫৫ বছর বনাম তাঁর ৫৫ মাসের সরকারের কাজের ফারাক তুলে ধরে চ্যালেঞ্জ করলেন নরেন্দ্র মোদী। 

দশম-একাদশ স্থান থেকে বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম অর্থব্যবস্থা হয়ে গিয়েছে ভারত। একাদশ স্থানে পৌঁছনোর পর গৌরববৃদ্ধির দাবি করা হয়েছিল। এখন ষষ্ঠ স্থানে পৌঁছনোয় কষ্ট কেন! 

আগের থেকে বেড়েছে বিদেশি বিনিয়োগ। শক্তি বেড়েছে মেক ইন্ডিয়ার। বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্টিল উত্পাদনকারী দেশ ভারত। বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মোবাইল উত্পাদনকারী দেশ। বিশ্বের চতুর্থ অটো মোবাইল যন্ত্রাংশ নির্মাণকারী। ফসল ও দুধ উত্পাদনে রেকর্ড। সবচেয়ে সস্তা ইন্টারনেট ডেটা ও সবচেয়ে বেশি ব্যবহারকারী ভারতেই।

৫৫ বছর বনাম আমার ৫৫ মাস। শৌচালয় ছিল ৪০ শতাংশ। এখন তা হয়েছে ৯৮ শতাংশ। ১০ কোটির বেশি শৌচালয় তৈরি হয়েছে গত সাড়ে ৪ বছরে। 

২০১৪ সালে সিলিন্ডার ব্যবহার করতেন ১২ কোটি মানুষ। ৫৫ মাসে আরও ১৩ কোটি ব্যবহারকারী বেড়েছে। এর মধ্যে ৬ কোটি উজ্জ্বলা প্রকল্পের। 

৫৫ সালে ৫০ শতাংশ লোকের কাছে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ছিল। ৫৫ মাসে তা হয়েছে ১০০ শতাংশ। 

১৮,০০০ গ্রামে বিদ্যুত্ পৌঁছে গিয়েছে। স্বাধীনতার পর দুই দশকেই দেশের প্রতিটি গ্রামে বিদ্যুত্ পৌঁছে যেত। ২০০৪, ২০০৯ ও ২০১৪ সালের নির্বাচনী ইস্তাহার ৩ বছরের মধ্যে দেশের প্রতিটি গ্রামে পৌঁছনোর আশ্বাস ছিল। অথচ সেই তিন বছর আর আসেনি। ৫৫ মাসে আড়াই কোটি পরিবারের কাছে পৌঁছে গিয়েছে বিদ্যুত্। আগামী দিনে ১০০ শতাংশ করব। 

২০১৪ সালের আগে গরিবদের ঘর পাওয়া উচিত ছিল। তখন তৈরি হয়েছিল ২৫ লক্ষ ঘর। ৫৫ মাসের সরকারে এক কোটি ৩০ লক্ষ ঘর তৈরি করে চাবি দিয়ে দিয়েছি। সেগুলিতে শৌচালয়, বিদ্যুত্, গ্যাস সিলিন্ডার রয়েছে। টাকা সোজা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা পড়ছে। 

২০০৪ সালে গ্রামে গ্রামে অপটিক্যাল ফাইবার পৌঁছনোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কংগ্রেস। ২০০৯ ও ২০১৪ সালেও একই আশ্বাস ছিলয। অথচ ১০ বছরে মাত্র ৫৯ গ্রামে ব্রডব্যান্ড পরিষেবা পৌঁছেছে। ৫৫ মাসে ১ লক্ষ ১৬ গ্রামে  পৌঁছে গিয়েছে ব্রডব্যান্ড।

 

সেনাকে নিরস্ত্র করে দিয়েছিল কংগ্রেস। বুলেটপ্রুফ জ্যাকেটও ছিল না। যোগাযোগ যন্ত্র, হেলমেট, জুতো কিছুই ছিল না। ২০০৯ সালে ১ লক্ষ ৮৬ হাজার বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট দাবি করেছিল সেনা। ৫ বছর বাদেও তা পূরণ হয়নি। ক্ষমতায় এসে ১লক্ষ ৮৬ হাজার জ্যাকেট পৌঁছে দিয়েছি। ইউপিএ সরকার হলে দেশের গৌরব তেজস পার্কিং লটে দাঁড়িয়ে থাকত। ৮৩টি তেজস বিমান যোগ হয়েছে বায়ুসেনায়। সেনা শক্তিশালী হোক, তা ভাবনাতেই আসেনি। দেশের প্রতিরক্ষায় জওয়ানদের জন্য সংবেদনহীন ছিল সরকার। গত ৩০ বছরে নতুন জমানার যুদ্ধবিমান কেনা হয়নি। দেশের নিরাপত্তার সঙ্গে বিশ্বাসভঙ্গ করেছেন। রাফাল নিয়ে প্রতিটা অভিযোগের জবাব দিয়েছেন নির্মলা সীতারমন। কংগ্রেস চায় না দেশের সেনা শক্তিশালী ও মজবুত হোক। প্রতিরক্ষা চুক্তিতে দালালি ছাড়া কোনও কাজ হয়নি। ৫৫ বছরে একটা প্রতিরক্ষা চুক্তি দালালি ছাড়া হয়নি। কখনও কাকা, মামার মাধ্যমে দালালি হয়েছে। 

নোটবন্দির পর ৩ লক্ষ ভুয়ো কোম্পানি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। নইলে এটা চলতে থাকত। ২০ হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বিদেশ থেকে অর্থ আসত। সীমান্তের গ্রাম থেকে আইনি প্রক্রিয়ায় প্রভাব ছড়ানোর উদ্দেশ্যে টাকা ওড়ানো হত। সর্দার সরোবর বাঁধ শিলান্যাস করেছিলেন নেহরু। আমি উদ্বোধন করেছি। বিদেশি অর্থ নিয়ে খেলা জারি থাকলে এটাই হবে। বন্ধ সংগঠনের সংখ্যা আরও বাড়বে। পাই পাইয়ের হিসাব নিচ্ছি। 

আমাদের দেশে দুটো গান জনপ্রিয়তা পেয়েছিল- 'বাকি কুছ বাঁচা তো মেহগায়ি মার দ্যাগা' ও 'মেহগায়ি ডায়েন খাতে যাতে'। দুটো গানের সময়ই কংগ্রেসের জমানা। প্রথমটায় ইন্দিরা গান্ধী প্রধানমন্ত্রী। তখন ২০ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি। দ্বিতীয় গান রিমোট কন্ট্রোল সরকারের আমলে। তখন ১০ শতাংশ মুদ্রাস্ফীতি। যখনই কংগ্রেস এসেছে মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে। সেই মূল্যবৃদ্ধিকে ৪ শতাংশের মধ্যে রেখেছি। 

মধ্যবিত্তদের জন্য লাগাতার করেছি। জিএসটি-র পর জরুরি সামগ্রী বাইরে করের রেখেছি। আগে গড় কর ৩০ শতাংশের বেশি ছিল। এখন ৯৮ শতাংশ সামগ্রী ১৮ শতাংশের নীচে। ৯২ সালেও মধ্যবিত্তের আয়ের উপরে করছাড় ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত করার দাবি উঠেছিল। আমরা করেছি। এলইডি বাল্ব ৩০০-৪০০ টাকায় পাওয়া যেত। এখন মেলে ৬-৭০ টাকায়। প্রতিদিন মধ্যবিত্ত পরিবারের পকেটে সাশ্রয় হচ্ছে। 

জেলাস্তরে বিনামূল্যে মিলছে ডায়ালিসিসের সুবিধা। আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পে মাত্র ১০০ দিন পার করেছে। এখনও পর্যন্ত ১১ লক্ষ গরিব ফায়দা তুলেছেন। প্রতিদিন ১৫ হাজারের বেশি গরিব সুবিধা পাচ্ছেন। পুরো খরচ দেওয়া হচ্ছে। ১০ শতাংশ গরিবের সংরক্ষণ করেছি।শিক্ষাক্ষেত্রে আসন বাড়ানোর সিদ্ধান্তও নিয়েছি।

কৃষকদের জল ও বিদ্যুত্ পৌঁছে দিতে পারতেন। ২৫-৩০ আগেই হয়ে যেত। ৬ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ ছিল। ৫২ হাজার কোটি টাকার ঋণ মাফ করা হয়েছে। সিএজি রিপোর্টে বলেছিল, এর মধ্যে ৩৫ লক্ষ কৃষক ভুঁইফোড়। ছোট চাষিরা মহাজনের থেকে ঋণ নেন। তাঁরা কোনও সুবিধা পাননি। ৯৯টি কৃষি প্রকল্প চালু করেছি। 

ZEENEWS TRENDING STORIES

By continuing to use the site, you agree to the use of cookies. You can find out more by Tapping this link