Da Vinci খোদ: গবেষণায় লিওনার্দোর `১৪-পুরুষ উদ্ধার`
এই মানুষটি তো শুধু ইতালীয় বিস্ময়পুরুষ নন, নন শুধু একজন শিল্পীও। ইনি ইতালীয় নবজাগরণের অন্যতম ব্য়ক্তিত্বও শুধু নন, ইনি সার্থক অর্থেই এক বিশ্বব্যক্তিত্ব। যাঁর বিচিত্র অবদান এই বিশ্বসংস্কৃতিতে নানা ভাবে সমৃদ্ধ করেছে।
বিশ্বে এমন শিল্পী বিরল, যাঁর একটিমাত্রই ছবি যুগ যুগ ধরে আলোচিত হয়ে আসছে। এমন শিল্পী বিরল যিনি স্বয়ং তাঁর সৃষ্ট শিল্পের সঙ্গে একাত্ম হয়ে গিয়েছেন। 'মোনালিসা'কে নিয়ে তা-ই ঘটেছে।
লিওনার্দো দা ভিঞ্চির (Leonardo da Vinci)পুরো নাম Leonardo di ser Piero da Vinci--লেওনার্দো দি সের পিয়েরো দা ভিঞ্চি। ১৪৫২ সালের এপ্রিলে তাঁর জন্ম, মৃত্যু ১৫১৯ সালের মে মাসে। ইতালীয় রেনেসাঁসের কালজয়ী চিত্রশিল্পী লিওনার্দো দা ভিঞ্চি একজ ভাস্কর, স্থপতি, সঙ্গীতজ্ঞ, অস্ত্রনির্মাতা। বিশ শতকের বহু বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের নেপথ্য জনকও তিনি। তাঁর জন্ম ফ্লোরেন্সের অদূরবর্তী ভিঞ্চি নগরের এক গ্রামে।
এই মানুষটিকে নিয়ে যুগ যুগ ধরে অপার আকর্ষণ নানা মহলের। সম্প্রতি বিরল প্রতিভার এই মানুষটির বেশ কয়েকজন বংশধরকে 'আবিষ্কার' করলেন বিজ্ঞানীরা। যা জেনে সারা বিশ্বই উল্লসিত, রোমাঞ্চিত। নানা তথ্য, নানা কাগজপত্র, নথি, প্রমাণ ইত্যাদি ঘেঁটে এই মহান শিল্পীর বংশধর হিসেবে ১৪ জনকে চিহ্নিত করা গিয়েছে। লিওনার্দোর বংশধর হিসেবে তাঁদের দেখে বাস্তবিক বিস্মিত বিশ্ব-জন। এই ১৪ জনই পুরুষ। এখন বিজ্ঞানীরা এঁদে ডিএনএ বিশ্লেষণ করে লিওনার্দে সম্পর্কে আরও নানা চমকপ্রদ তথ্য আবিষ্কারের আশায়।
জানা গিয়েছে, এঁরা লিওনার্দোর ২১ তম 'পুরুষ'। লিও-র বংশধর-পরিচয় নিয়ে যে গবেষণাপত্রটি বেরিয়েছে সেটি হল-- The New Genealogical Tree of the Da Vinci Family for Leonardo’s DNA. Ancestors and descendants in direct male line down to the present XXI generation।
Human Evolution পত্রিকায় এটি প্রকাশিত। এই গবেষণা শুরু হয়েছিল ২০১৬ সাল নাগাদ। এর কাজ হয়েছিল লিওনার্দো-বিশেষজ্ঞ তথা শিল্প ঐতিহাসিক Alessandro Vezzosi এবং ইতিহাসবিদ Agnese Sabato-র তত্ত্বাবধানে।
তবে ঠিক ঠিক বলতে গেলে এর কাজ শুরু হয়েছিল বেশ কয়েক দশক আগে। ভেজোসি নিজে ইতালির ভিঞ্চি নগরেরই মানুষ। তিনি সেই ১৯৭৩ সালে প্রথম লিও-র বংশধরের সন্ধান পেয়েছিলেন। তিনি এরপর ১৯৯৩ সালে সাবাতোকে সঙ্গে নিয়ে আরও ব্যাপক আকারে এই অনুসন্ধানে নেমে পড়েন। তাঁরা বলছেন, অবশেষে তাঁদের খুবই ভাল লাগছে। কেননা, যাঁদের তাঁরা লিও-র বংশধর হিসেবে চিহ্নিত করেছেন তাঁরা ভেতরে ভেতরে লিও-র ঐতিহ্য বহন করলেও নিজেরা এ সম্বন্ধে অবহিত ছিলেন না। এখন ভেজোসি ও সাবাতোর কাজের জেরে এই ১৪ জন এটা জেনে রীতিমতো স্তম্ভিত।
১৪ শতকের মূল থেকে শুরু হয়ে এই ২১ শতক পর্যন্ত চলে আসা এ এক আশ্চর্য জার্নি। যার শরিক ওই ১৪ জন এবং এই দুই বিজ্ঞানী। তবে আরও আছেন। ২২৫জন ব্যক্তি ও তাঁদের পরিবারের উপর সন্ধান চালিয়েই এই কর্মযজ্ঞের চূড়ান্ত ফল বেরিয়েছে। জিনোম সিকোয়েন্সিং ও ডিএনএ কোড বিশ্লেষণের মাধ্যমে এই বিরল কাজটি সুনিশ্চিত করা গিয়েছে।