মঙ্গল-সঙ্গীতে ভরে উঠল পৃথিবীর কান, রোমাঞ্চিত বিজ্ঞানীরা
NASA-র Perseverance ফেব্রুয়ারিতে মঙ্গলে ল্যান্ড করেছিল। তার লক্ষ্য ছিল ওখান থেকে মাটি পাথর সংগ্রহ করে এনে পরীক্ষা করা যাতে যদি ওই মাটিতে কোনও আদিম মাইক্রোবস (ancient microbes) থাকে তা হলে তার অস্তিত্ব জানা যাবে। প্রাথমিক ভাবে Perseverance-কে নিয়ে বিজ্ঞানীদের একটু সঙ্কট তৈরি হয়েছিল, তবে তা মিটে যায়। এবং এই মিশন নানা ভাবে নানা তথ্য সরবরাহ করে মানুষের কৌতূহলের নিরসন ঘটাচ্ছিল।
এবার জানা গেল মঙ্গলের বাতাসের অস্তিত্বের পরোক্ষ প্রমাণ। Perseverance-এর বয়ে নিয়ে যাওয়া ছোট রোবটিক হেলিকপ্টার, যার নাম Ingenuity তা ঘুরে বেড়াচ্ছিল মঙ্গলের আকাশে। আর তখনই তার ব্লেডের ঘূর্ণনের শব্দ (humming of blades) রেকর্ড করল সঙ্গের মাইক্রোফোন। আর মানুষ তা এই পৃথিবীতে বসেই শুনল! স্পেস এজেন্সির তরফে একটি অডিয়ো ট্র্যাকের ফুটেজ প্রকাশ করা হয়েছে, যেখানে মঙ্গলে পৌঁছনো রোটোক্র্যাফ্টের ব্লেড ঘোরার এই শব্দ শোনা গিয়েছে!
কিন্তু মঙ্গলের বাতাস আমাদের গ্রহের চেয়ে ঘন বলে সেখানে সমস্ত কোলাহলই একটু কম শোনায়। এই পরিস্থিতিতে ওই শব্দ যে আদৌ শোনা যাবে, এ নিয়ে কোনও ধারণাই ছিল না বিজ্ঞানীদের।
France-এর এক মহাকাশ বিজ্ঞানী David Mimou-ও অবার কণ্ঠে বলেছেন-- 'এ এক অপার বিস্ময়! আমরা শুনেছিলাম যে মাইক্রোফোন পাঠানো হয়েছে তা কোনও শব্দই সম্ভবত রেকর্ড করতে পারবে না, কারণ মঙ্গলের আবহ ভারী, শীতল'।
লালগ্রহে বাতাসে ভর করেই উড়তে পেরেছে 'ইনজেনুইটি'। আর সেই বাতাসেই ভেসে এসেছে তার ডানার শব্দ। যা পৌঁছেছে ৮০ মিটার দূরের রোভারে, তার 'সুপারক্যাম'-এ। এই শব্দ ও ছবি ধরা হয়েছে ৩০ এপ্রিল। NASA শুক্রবার এর ভিডিয়ো প্রকাশ করেছে। মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলকে বোঝার ক্ষেত্রে এই ডানা ঘোরার শব্দকেই বিজ্ঞানীরা 'সোনার খনি' বলে মনে করছেন।
প্রসঙ্গত, পৃথিবীতে শব্দ যেখানে সেকেন্ডে ৩৪০ মিটার যায়, শীতল আবহাওয়ার কারণে (মাইনাস ৬৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস) মঙ্গলে শব্দের গতি মিনিটে ২৪০ মিটার প্রতি সেকেন্ড। সেই কারণেই বিজ্ঞানীদের এত রোমাঞ্চ, এত হইচই।