দিনের পর দিন রাত জেগে চিকিৎসকদের মাথার কাছে বসে করোনা আক্রান্ত নির্মল মাজি

Sun, 01 Nov 2020-10:31 am,

তন্ময় প্রামাণিক: ঘড়ির কাঁটায় রাত তখন আড়াইটে! কলকাতা মেডিক্য়াল কলেজ হাসপাতালের সুপার স্পেশালিটি ব্লকের আই সি ইউ-র বাইরে মাস্ক পড়ে বসে রয়েছেন চিকিৎসাধীন মন্ত্রী তথা মেডিক্য়াল কলেজের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান নির্মল মাজি। ইনি বর্তমানে করোনা আক্রান্ত।

মধ্যরাতে ওয়ার্ডের বারান্দায় আই সি ইউ-র বাইরে বসে কেন???

জানা গেল, চিকিৎসাধীন ২ সিনিয়র চিকিৎসকের শ্বাসকষ্ট বেড়েছে। CCU তে  রয়েছে তাঁরা। পাশাপাশি ২ জুনিয়র চিকিৎসকের শ্বাসকষ্ট বাড়ছে। সে খবর পেয়েই নিজের বেড ছেড়ে সেখানে হাজির অসুস্থ মন্ত্রী। এক চিকিৎসক বলেন, "রাতে উনি নিজেই প্রায় ঘন্টা তিনেক আমাদের সঙ্গে ছিলেন। ccu-র বাইরে বসে ছিলেন। ফ্লোরের অফিসের সামনে মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত বসেছিলেন। গুরুতর অসুস্থ ৪ চিকিৎসকের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ার পর নিজের বেডে ফেরেন সকালে।"

শনিবার মাঝ রাতেও দেখা গেল ফ্লোরের ওয়ার্ক স্টেশনে রাত ৩ টে নাগাদ চিকিৎসক নার্স কর্মীদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে মন্ত্রী। খোঁজ নিচ্ছেন কোন রোগী কেমন আছেন।

এক নার্সের কথায়, "ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে। উনিও তাই।"

পরপর তিনরাত চিকিৎসাধীন মন্ত্রী মধ্যরাতের পরিষেবা আর রোগীদের অবস্থা দেখতে ওয়ার্ডে ঘুরেছেন, নজিরবিহীন বলে মানছেন চিকিৎসাধীন একাধিক চিকিৎসক।

মেডিক্যাল কলেজের Ssb তে চিকিৎসাধীন রয়েছেন প্রায় ১৬ জন অধ্যাপক-জুনিয়র চিকিৎসক। প্রত্যেকেই করোনা- যোদ্ধা। যোগাযোগ করা হলে নির্মলের সাফ জবাব, "যে চিকিৎসকেরা নিজের জীবন বাজি রেখে মানুষের প্রাণ বাঁচানোর কাজে যুক্ত, তাঁরা অসুস্থ হলে মাথার পাশে বসে থাকাটা আমার কর্তব্য মনে করেছি। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে থেকে আদর্শটাই পেয়েছি। এটুকু পাশে না দাড়াঁলে আর কখন দাঁড়াবো?"

এখানেই শেষ নয়। সকলে খাবার ওষুধ ঠিক করে পাচ্ছেন কিনা সে সবেরও তদারকি করছেন দিন রাত।

কারর শারীরিক অবস্থা জটিল হলে মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে আসা হচ্ছে বাঙ্গুর ইনস্টিটিউট অফ নিউরোলজি, বেলেঘাটা আই ডি'র করোনা ও স্নায়ু বিশেষজ্ঞদেরও।

সব মিলিয়ে চিকিৎসাধীন মন্ত্রী এখন নিজেই "নাইট ওয়াচম্যান।" জুনিয়র চিকিৎসকেরা তেমনটাই বলছেন।

 

মেডিকেল এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পুজোর মরশুমে সাধারণ মানুষের সঙ্গে সঙ্গে প্রায় ৬০ জন চিকিৎসক চিকিৎসা পেয়েছেন। মৃত্যুর হার একেবারেই নিচের দিকে...

শুক্রবার ২৪ ঘন্টায় মাত্র ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ভর্তি হওয়া রোগীর ৯৫ % কো-মরবিডিটি। ৯০% সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

এখনও পর্যন্ত ৩২ জন করোনা আক্রান্তের প্রাণ বাঁচাতে পেসমেকার বসানো হয়েছে। ৪ জনের এনজিওপ্লাস্টি হয়েছে। ৩৬ জন করোনা আক্রান্ত প্রসূতির সিজারিয়ান ডেলিভারি হয়েছে। ২ জন করোনা আক্রান্ত প্রসূতি যমজ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন।

ZEENEWS TRENDING STORIES

By continuing to use the site, you agree to the use of cookies. You can find out more by Tapping this link