`কারচুপি করে জেতা ইমরানকে প্রধানমন্ত্রী হতে দেব না`, কোমর বাঁধল বিরোধীরা
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী পদে ইমরান খানের অভিষেক, এখন কার্যত অনিশ্চিত। এই ক্রিকেট তারকাই যে এবার পাক প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন, বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্তও সে বিষয়ে নিশ্চিত ছিল সারা বিশ্ব। কিন্তু, প্রধান বিরোধীরা জোট বাঁধতেই পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করেছে।
এনডিটিভি সূত্রে খবর, পাকিস্তানের দুটি অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল পিএমএল (নওয়াজ) ও পিপিপি হাত মিলিয়েছে। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে বেশ কয়েকটি ছোট দলও। এই দলগুলির জোটের নাম দেওয়া হয়েছে 'অল পার্টি কনফারেন্স'। বিরোধী জোটই ভোটাভুটি অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী পদে ইমরানের পথের কাঁটা হতে চলেছে।
পাক ন্যাশানাল অ্যাসেম্বলি-র ২৭২টি আসনের মধ্যে ১১৬টিতে জয়লাভ করেছে ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। অর্থাত্, ম্যাজিক ফিগার ১৩৭ ছুঁতে গেলে পিটিআই-এর আরও ২১টি আসন প্রয়োজন। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছিল এবং পিটিআই বারবার দাবিও করছিল যে, ছোট দল ও নির্দলদের সমর্থন জোগাড় করতে খুব একটা সমস্যা হবে না তাদের। কিন্তু, বৃহস্পতিবার বিরোধীরা জোট বাঁধার পরই সমীকরণ বদলাতে শুরু করেছে বলে জানা যাচ্ছে।
বিরোধী দলগুলির দাবি, ২৫ জুলাই-এর সাধারণ নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ইমরানের দলকে পিছন থেকে সাহায্য করেছে পাক সেনা। তাই, এই দলের সরকার গঠনের কোনও নৈতিক বৈধতা নেই। সে জন্যই ইমরানের বিরুদ্ধে ভোটাভুটিতে অংশ নেবেন তাঁরা।
পাকিস্তান মুসলিম লিগ (নওয়াজ)-এর মুখপাত্র তথা নওয়াজ কন্যা মারিয়ম ঔরাঙ্গজেবের দাবি, "এই জোট কারচুপি করে জেতা নির্বাচনের বিরুদ্ধে। এই নির্বাচনে সবকটি রাজনৈতিক দল লড়াই করার জন্য সমান সুযোগ পায়নি।"
ইউরোপিয় ইউনিয়নের একটি নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী দল পাকিস্তানের নির্বাচন পূর্ব প্রচার পর্বকে 'অসমান লড়াইয়ের ময়দান' বলে বর্ণনা করেছে। তাদের বক্তব্য, পাক জনতাই ঠিক করুক, এই নির্বাচন বৈধ কি না।
বিরোধী জোট অর্থাত্ 'অল পার্টি কনফারেন্স'-এর কাছে খুব বেশি সংখ্যা নেই বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়েছিল। ১১ অগস্ট প্রধানমন্ত্রী পদে ইমরানের শপথ গ্রহণের দিনও ঠিক করে ফেলা হয়েছিল। কিন্তু, এরপরই হঠাত্ করে হিসাব বদলাতে শুরু করেছে।
পাক রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছে, বিরোধী জোট ইমরানের বিরুদ্ধে একসঙ্গে মাঠে নামলেও শেষ পর্যন্ত সামান্য ব্যবধানে জিতে যেতে পারেন ইমরান। কিন্তু, সেক্ষেত্রে ইমরান সরকারকে নীতি নির্ধারণে অনেক নমনীয় ভাব নিয়ে চলতে হবে।
স্বাধীন পাকিস্তানের ৭১ বছরের ইতিহাসে প্রায় অর্ধেকটা জুড়েই সেনা শাসন দেখেছে দেশবাসী।
যে সময় গণতান্ত্রিক সরকার দেশ চালিয়েছে তার প্রায় পুরোটা জুড়েই হয় পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) অথবা পিএমএল (এন) শাসন করেছে দেশকে। এবার সেই দুই সাবেক দলই বিরোধী হিসাবে একজোট হয়েছে ইমরান খানের বিরুদ্ধে। এখন দেখার, বাইশ গজের দক্ষ বোলার ও অধিনায়ক কোন কৌশলে সামলান এই পরিস্থিতি!