‘ভোলার’ আতঙ্কে খিল এঁটে ‘ঘরবন্দি’ গোটা মোস্তাফাপুর গ্রাম, কেউ ভর্তি হাসপাতালে
যমরাজের বিচার সভা। সিংহাসনে বসে আছেন স্বয়ং যমরাজ। দু’ধারে চিত্রগুপ্ত , বিচিত্রগুপ্ত আর সামনে দাঁড়িয়ে বিচারাধীন জীবন্ত মানুষ।
আর সেই জীবন্ত মানুষ নিজের বুদ্ধিবলে পোষ্য মৃত ভোলাকে তার কথা শোনার প্রতিশ্রুতি আদায় করে নেয় যমরাজের কাছ থেকে। তারপর ভোলাকে (ষাঁড়) গুঁতোনোর আদেশ দিয়ে যমরাজকে তাঁর রাজ্য ছাড়া করে সেই জীবন্ত মানুষ।
যমালয়ে জীবন্ত মানুষ সিনেমায় ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় এর বিখ্যাত ডায়লগ ' গুঁতো ভোলা, গুঁতো...'।
এ তো গেলো মৃত ভোলার কথা এখন বলবো জীবন্ত ভোলার(ষাঁড়) কথা। প্রায় তিন বছর আগে কাটোয়া থানার মোস্তাফা পুর গ্রামের এক বাসিন্দা রাস্তা থেকে আদর করে তুলে এনে আশ্রয় দেন মোস্তাফাপুর গ্রামে।
তারপর থেকে ভোলার ঠাঁয় হয় ওই গ্রামেই। সারা গ্রাম ঘুরে গ্রামের মানুষের দেওয়া খাবার খেয়ে গ্রামবাসীদের সঙ্গে বেশ ভালোই দিন কাটছিল ষাঁড়টির। কিন্তু মাস ছয়েক আগে মারমুখী হয়ে উঠেছে ওঅ ষাঁড়।
সিনেমার ভোলার গুঁতো খেয়ে সিংহাসন ও রাজ্য ছাড়া হয়েছিলেন যমরাজ আর জীবন্ত ভোলার গুঁতো খেয়ে হাসপাতালে পৌঁছেছে গ্রামের অনেক মানুষ, কারো পা ভেঙেছে, কারো মাথা ফেটেছে।
ফলে ষাঁড়ের আতঙ্কে আতঙ্কিত গ্রামবাসীরা কার্যত ঘরবন্দি। ছোট বাচ্চারা ভয়ে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করেছে। ওই ষাঁড়কে দেখলেই মোস্তাফাপুর গ্রামের মানুষজন হয় রাস্তা বদল করছেন না হয় ঘরে খিল দিয়ে বসে আছেন।
গ্রামবাসীর অভিযোগ, ওই ষাড়ের কর্মকাণ্ডে কথা প্রশাসনকে জানালেও কোনো সুরাহা হয়নি। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বনদফতর থেকে স্থানীয় প্রশাসন সবাইকে এই ঘটনার কথা জানানো হয়েছে কিন্তু কেউ কোনো গুরুত্ব দেয়নি। তাই এই আতঙ্ক নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন মোস্তফাপুর গ্রামের বাসিন্দারা।