পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম, চুল পড়বে, দেখা দেবে ব্রণর সমস্যা, মুখে অবাঞ্ছিত লোম
নিজস্ব প্রতিবেদন: করোনায় ওয়ার্ক ফর্ম হোমের সময়কালে জীবনযাপনের আমুল পরিবর্তনে প্রভাবিত এসেছে আট থেকে আশি। ধূমপান, মদ্যপান বেড়ে গিয়েছে। ঘরবন্দী থাকার ফলে অজান্তে জাঁকিয়ে বসছে একাধিক রোগ। সেডেন্টারি বা শারীরিকভাবে নিষ্ক্রিয় লাইফস্টাইলের জাঁতাকলে বাড়ছে মহিলাদের একাধিক শারীরিক রোগ, যার মধ্যে পলিসিস্টিক ওভারিয়ান ডিসিজ অন্যতম।
এর মূল কারণ অনিয়মিত জীবনযাপন, শরীরচর্চার অভাব। আপনিও কি রয়েছেন এই তালিকায়? তাহলে জেনে নিন কী বলছেন চিকিৎসকরা।
পলিসিস্ট কথার অর্থ একের বেশি সিস্ট। ন্যূনতম ১০ থেকে ১২ টি সিস্ট থাকবে প্রতি ওভারিতে, এবং এই সিস্টের ওজন হবে ২ থেকে ৬ মিলি লিটার। ওভ্যুলেশনের অনুপস্থিতিতে এই অবস্থা হয়। নিঃসৃত ডিম্বাণিগুলি ফলিকল নামের তরল ভর্তি থলিগুলির মধ্যে বাড়তে থাকে। এই ফলিকলগুলি ডিম্বাশ্বয়ের চারদিকে সংস্থাপিত হয়ে ডিম্বাশয়কে একটি পলিসিস্টক আকৃতি দেয়।
ঠিক কোন কারণে এই সমস্যা শুরু হবে তা নির্দিষ্ট করে বলা যায় না। তবে কারণ হিসাবে তিনটে দিক উল্লেখ করা যেতে পারে। এক, জিনগত কারণ, অর্থাৎ যাঁদের পলিসিস্টিক ওভারিয়ান ডিসিজের পারিবারিক ইতিহাস রয়েছে। দুই, পরিবেশগত কারণ। তিন, আচরণগত কারণ, অর্থাৎ শারীরিক পরিশ্রম কমে যাওয়া, অনিয়মিত খাদ্যাভাস, ফাস্টফুডের প্রতি ঝোঁক, অতিরিক্ত ফ্যাট জাতীয় খাবার খাওয়া, উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন ইত্যাদি। পাশাপাশি মানসিক চাপও এই অসুখের বড়ো কারণ।
পলিসিস্টিক ওভারিয়ান ডিসিজের প্রথম উপসর্গ অনিয়মিত পিরিয়ড বা পিরিয়ড একেবারেই বন্ধ হয়ে যাওয়া। যদিও কিছু ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রমও ঘটতে পারে। এ ছাড়াও যে উপসর্গগুলি লক্ষ করা যায় তা হল ওবেসিটি, ব্রণর সমস্যা, মুখে অবাঞ্ছিত লোম, রিসিডিং হেয়ারলাইন অর্থাৎ চুল পড়ে যাওয়া, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, গ্যালাকটোরিয়া অর্থাৎ স্তন বৃন্ত থেকে সাদা তরল বেরনো ইত্যাদি। পলিসিস্টিক ওভারি দীর্ঘদিন ফেলে রাখার ফলে ডায়াবেটিস, হাইপার টেনশন, থাইরয়েডের মতো মাল্টিসিস্টেম এফেক্ট দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা থাকে ৪০ বছরের এজ গ্রুপে।
পলিসিস্টিক ওভারিয়ান ডিসিজ ১০০ শতাংশ নির্মূল করা সম্ভব নয়। তবে যে সমস্যাগুলি দেখা দেয়, সঠিক চিকিৎসায় সেগুলি কমিয়ে আনা সম্ভব হয়। সমস্যাগুলোকে অনেকাংশে কমিয়ে রোগীকে স্বাভাবিক জীবন দেওয়া যেতে পারে। দীর্ঘকাল ফেলে রাখলে সিস্ট থেকে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।