`আমি ছাড়া ওর আর কেউ নেই`,নাতনিকে না দেখতে পেয়ে আদালতে আবেগতাড়িত পরীমণির বৃদ্ধ দাদু

Thu, 12 Aug 2021-6:23 pm,

৪ দিনের রিমান্ড শেষে মঙ্গলবার আদালতে তোলা হয় বাংলাদেশের বিতর্কিত নায়িকা পরীমণিকে। মাদক মামলায় পরীমণির আরও দুদিনের পুলিসি রিমান্ড মঞ্জুর করে বাংলাদেশের আদালত। এদিন পরীমণির সঙ্গে আদালতে দেখা করতে এসেছিলেন তাঁর দাদু। যাঁর বয়স ১০০ বছর পার করেছে। কিন্তু নাতনির সঙ্গে দেখা হওয়ার ইচ্ছা পূরণ হল না শামসুল হক গাজীর। 

খুব ছোটবেলায় পরীমণি মাকে হারান। আরেকটু বড় হয়েই হারান বাবাকে। ফলে পিরোজপুরে দাদু শামসুল হক গাজীর কাছে বড় হন তিনি। সে সময় স্থানীয় একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন শামসুল হক। পরে পরীমনির সঙ্গে তিনিও ঢাকায় চলে আসেন।

 

এদিন আবেগতাড়িত শামসুল হক গাজী বলেন, '' মেয়েটার বাপ মা কেউ নাই। আমার কাছেই বড় হয়েছে, মানুষ হয়েছে। ওর জন্য দুশ্চিন্তায় আমার ঘুম হয় না। কেউ নেই ওকে দেখার জন্য। আমার নিজেরও কিছুদিন আগে অপারেশন হয়েছে। এখনো আমি অসুস্থ। তাকে কতদিন দেখি না। তাই বাধ্য হয়েই এখানে এসেছি।''

মঙ্গলবার আদালতে আসার পরও পরীমণির সঙ্গে কথা না বলতে পেরে হতাশ তাঁর দাদু শামসুল হক গাজী বলেন, ''ও নিজের সারাটা জীবন মানুষের জন্য করে এসেছে। কিন্তু এখন ও পরিস্থিতির শিকার। নিজের একটা ফ্ল্যাট করে নাই... কিছু করে নাই। এফডিসি-তে প্রত্যেক বছর ঈদে গরিব-দুঃখীদের জন্য কোরবানি করে । নিজের জন্য সে নিজে কিছুই করে নেই। সে সব মানুষের জন্য বিলিয়ে দেয়।''

পরীমণি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন (FDC)র সঙ্গে যুক্ত ২০১৬ সাল থেকে। যার মাধ্যমে আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল মানুষের পাশে দাঁড়ান অভিনেত্রী। লকডাউনের মধ্যে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঈদে মানুষের পাশে দাঁড়াতে দেখা গিয়েছিল পরীমণিকে। আর খবর বাংলাদেশর সংবা-মাধ্যমে উঠে এসেছিল। 

 

 

 

তাঁর জীবনযাপন, ও সম্পত্তি প্রসঙ্গে ছড়িয়ে পড়া কিছু খবর প্রসঙ্গে একবার পরীমণি নিজেই জানিয়েছিলেন ''আমি একটা ভাড়া ফ্ল্যাটে থাকি, আমার একটাই গাড়ি, যেটির লোন চলছে। আমি নিয়মিত কর দি, সরকারের কাছে আয়ের হিসাবও দি। আমার কোনও কোটি টাকার গাড়ি, বাড়ি নেই।''

গত ৮ মে হাসপাতালে চিকিৎসারতদাদুর লজেন্স খাওয়ার ছবি পোস্ট করে লিখেছিলেন, ''দেখেন কেমন বাচ্চাদের মতন। ১০০ ঊর্ধ্ব বয়স তার। দু’দিন আগে অ্যাপেন্ডিসাইটিস অপারেশন হয়েছে। চারদিন তার মুখে খাওয়া বন্ধ রেখেছিলেন ডাক্তার। আজ তার জন্য ডাক্তার নিজেই এই উপহার নিয়ে আসেন। নানু তো বেজায় খুশি।''

পরীমণির বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের যে যে ধারায় মামলা করা হয়েছে, তার একটি ধারায় সর্বনিম্ন ১-৫ বছর সাজা হতে পারে, আরেকটি ধারায় ৬ মাস থকেে ১ বছর সাজা হতে পারে। 

এদিকে পরীমণি গ্রেফতারের পর থেকেই তাঁর পক্ষে বারবার সোশ্যাল মিডিয়ায় সওয়াল করেছেন লেখিকা তসলিমা নাসরিন। পরীমণির হয়ে তসলিমা প্রশ্ন তোলেন 'মদ খাওয়া ও কারোর সঙ্গে শোওয়া কী অপরাধ?' 'কী অপরাধে পরীমণিকে গ্রেফতার করা হল?' এখানেই শেষ নয়, 'দিনের পর দিন, রিমান্ডে রেখে পরীমণিকে ধর্ষণ করা হচ্ছে না তো?' সে প্রশ্নও তুলেছেন তসলিমা।

বাংলাদেশে পরীমণিকে নিয়ে যখন জোর চর্চা চলছে, তখন তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন, আমার রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি গানের রচয়িতা, লেখক, সাংবাদিক আব্দুল গফফর চৌধুরী। 

আব্দুল গফ্ফর চৌধুরী তাঁর আবেদনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে লিখেছেন, 'শেখ হাসিনার শাসনকালে বাংলাদেশে নারীদের ক্ষমতায়ন শুরু হয়েছে। আর সেই কারণেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সবিনয় আবেদন, তিনি যেন পরীমনির ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করেন। বিচারের হাত থেকে তাকে রক্ষা করতে বলছি না। বরং হায়না গোষ্ঠীর হাত থেকে তাকে বাঁচানোর জন্য অনুরোধ করছি।’ তিনি লিখেছেন, 'দেশের প্রশাসন, একটি বিত্তশালী গোষ্ঠী এবং একটি মিডিয়া গোষ্ঠী মিলে একটি ২৮ বছরের তরুণীকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করার যে ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে।'

 

ZEENEWS TRENDING STORIES

By continuing to use the site, you agree to the use of cookies. You can find out more by Tapping this link