খোলা পোশাকে আমার শরীর দেখা যাচ্ছে, যাঁরা ভাবছেন, তাঁরা ভুল: প্রিয়াঙ্কা
গ্র্যামি ২০২০-র মঞ্চে প্রিয়াঙ্কার নেটলাইন, হাই স্লিট পোশাক নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। নানান লোকে নানান মন্তব্য করছেন। পোশাক নিয়ে প্রিয়াঙ্কাকে বিঁধতে ছাড়ছেন না অনেকেই। কেউ বলছেন 'ভারতীর মহিলার হিসাবে প্রিয়াঙ্কা যেটা পরেছে সেটা লজ্জার', কেউ আবার মন্তব্য করে বসেছেন 'প্রিয়াঙ্কা ওইটুকু শরীর না ঢেকে কিছু না পরতেই পারত।' কেউ আবার বলেছেন 'প্রিয়াঙ্কা শারীরিক গঠনে এই পোশাক এক্কেবারেই মানাচ্ছে না।' কারোর কথায় 'প্রিয়াঙ্কা যেভাবে পোশাক কোনওভাবে সরে গেলে ওকে লজ্জায় পরতে হতে পারত।'
তবে প্রিয়াঙ্কার পোশাক নিয়ে নানা লোকে নানান কথা বললেও ওই পোশাকের আসল রহস্য এবার প্রিয়াঙ্কা চোপড়া নিজেই ফাঁস করেছেন। ৩৭ বছরের অভিনেত্রী জানিয়েছেন, রালফ এবং রুসো-র ডিজাইন করা পোশাকে তাঁর শরীরের যে অংশটি আঢাকা রয়েছে বলে মনে করছেন, তা আদপে আঢাকা নয়। পোশাকের ফাঁক থেকে বেরিয়ে পরা বক্ষ যুগর আসলে তাঁর শরীরের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে পাতলা কাপড় (যা খানিকটা নেটের মত) দিয়ে ঢাকা ছিল। তাই অনেকে যেটা ভাবছেন পোশাক সরে গেলে লজ্জায় পরতে হত এমন সম্ভবনা এক্কেবারেই ছিল না বলেই সাফ জানিয়েছেন প্রিয়াঙ্কা।
সমালোচনায় কিছুটা বিরক্ত প্রিয়াঙ্কা জানিয়েছেন, ''রালফ এবং রুসো যখনই আমার জন্য কোনও পোশাক বানান, সেটা যেন আমার শরীরে ফিট করে সেকথা মাথায় রেখেই বানিয়ে থাকেন। আর আমি যখন কোনও পোশাক পরে বাড়ি থেকে বের হই তখন সবসময় মাথায় রাখি আমায় যেন অপ্রস্তুত হতে না হয়। অস্বস্তিতে পরতে হবে এমন কোনও পোশাক আমি আমার ওয়ারড্রবে রাখি না।''
সাক্ষাৎকারে প্রিয়াঙ্কা তাঁর পরিবারের কথা বলতে গিয়ে বলেন, ''আমাদের পরিবারের প্রত্যেক সদস্যই আলাদা রকমের। প্রত্যেকেরই নিজ নিজ পছন্দ, ফ্যাশান সেন্স রয়েছে। কেউই তাতে বাধা দেয় না। তবে সম্পর্কের বিচারে আমরা প্রত্যেকেই প্রত্যেকের ভীষণ কাছের।''
প্রসঙ্গত, মেয়ের সমালোচনা নিয়ে বিরক্ত মধু চোপড়াও সম্প্রতি প্রিয়াঙ্কার গ্র্যামির পোশাক নিয়ে মুখ খুলেছেন, তাঁর কথায়, ''আমার এই পোশাকটা ভীষণই পছন্দ হয়েছে। ও (প্রিয়াঙ্কা) ওই পোশাক পরার আগে আমাকে দেখিয়েছিল। প্রথমে আমি ভেবেছিলাম এধরনের পোশাক পরাটা একটু বেশিই ঝুঁকি নেওয়া হয়ে যাবে। তবে ও খুব সুন্দর ভাবে ওটা সামল দিয়েছে। প্রিয়াঙ্কার পোশাক নিয়ে আমি ভীষণই খুশি।''
প্রিয়াঙ্কা (Priyanka Chopra) ও তাঁর পোশাক নিয়ে সমালোচকদের জবাবে মধু চোপড়া বলেন, ''যে সমস্ত লোকজন এধরনের মন্তব্য করে তাঁদেরকে আদপে কেউ চেনেও না। এনারা শুধু কম্পিউটার স্ক্রিনের মধ্যে নিজেদের লুকিয়ে রাখে। আমার মনে হয় এধরনের সমালোচকদের খুববেশি গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন নেই। ওরা শুধুই গুরুত্ব পাওয়ার জন্যই এমনটা করে।''
প্রিয়াঙ্কার গ্র্যামির পোশাক নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ খুলেছিলেন এদেশের খ্যাতনামা ফ্যাশান ডিজাইনার ওয়েনডেল রড্রিক্স (Wendell Rodricks)। তিনি মন্তব্য করেছিলেন প্রিয়াঙ্কা যে ধরনের পোশাক পরেছেন, সেটা রালফ ও রুসোর ডিজাইন করা হলেও এই বয়সে প্রিয়াঙ্কার শারীরিক গঠনের সঙ্গে পোশাক এক্কেবারেই মানানসই নয়। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় এধরনের মন্তব্যের পর পিগি চপসের ভক্তদের আক্রমণের মুখে পরেন ডিজাইনার ওয়েনডেল রড্রিক্স। পরে অবশ্য তিনি তাঁর মন্তব্য বিষয় বিশদে ব্যাখ্যা করেছেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রিয়াঙ্কাকে নিয়ে বারবার সমালোচনা নিয়ে মধু চোপড়া মন্তব্য করেছিলেন ''আমি প্রিয়াঙ্কাকে এভাবে বড় করেছি যাতে ও মানসিকভাবে দৃঢ় হয়। ও ওর মত করে জীবনযাপন করছে কারোর কোনও ক্ষতি তো করছে না। ওর জীবন ওর শরীর সবই ওর (প্রিয়াঙ্কা)। তাই সবকিছুই ও ওর মত করেই চালাচ্ছে। আমি ওকে এটাই শিখিয়েছি। আমার মনে হয় এই নীতিই সকলের মনে চলা উচিত।''