রাঢ়ের রহস্য! জৈন মহাবীরের পুরুলিয়ায় হঠাৎই বুদ্ধদেবের আবির্ভাব...
ঐতিহাসিক রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন-- 'প্রথম শতাব্দী হইতে দ্বাদশ শতাব্দী পর্যন্ত জৈন ধর্ম এখানকার প্রধান ধর্ম ছিল। এই কারণে বাঁকুড়া, মানভূম, পশ্চিম-মেদিনীপুর এবং ময়ূরভঞ্জের উত্তর ভাগে বৌদ্ধ কিংবা হিন্দু মূর্তি অপেক্ষা জৈন মূর্তিই বেশি দেখা যায়।'
মানভূম তথা দক্ষিণ-পশ্চিম রাঢ়ের গুরুত্বপূর্ণ জৈন প্রত্নক্ষেত্র পাকবিড়রা। পুরুলিয়া জেলার পুঞ্চা ব্লক,মানবাজার, লাখড়া অঞ্চল সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের অন্তর্গত, পুরুলিয়া সদর শহর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই জৈন প্রত্নক্ষেত্র।
একদা পুরুলিয়া অঞ্চল যে জৈন ধর্ম প্রচার-প্রসারের এক জরুরি ক্ষেত্র হিসেবে গড়ে উঠেছিল তার প্রমাণ পাওয়া যায় এখানে অবস্থিত জৈন দেউল এবং প্রাপ্ত জৈন দিগম্বর মূর্তি, জৈন যক্ষ ও যক্ষিণী মূর্তিগুলি থেকে।
দক্ষিণ পশ্চিম রাঢ়ের অন্তর্গত পুরুলিয়া জেলায় প্রায় ২১ টি জায়গায় জৈন পুরাতাত্বিক নিদর্শন পাওয়া গেছে। এর অন্যতম পুঞ্চার পাকবিড়রা।
প্রাচীন বাংলায় বৌদ্ধধর্মের প্রভাব নিয়ে আলোচনা হলেও জৈন ধর্মের প্রভাবও যে এখানে কিছু কম ছিল না, তার প্রমাণ মেলে দামোদর, কুমারী সুবর্ণরেখা কংসাবতীর উপত্যকায়।
তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর এবং জেলা পুলিসের তৎপরতায় সাম্প্রতিক এই মূর্তি উদ্ধার হয়। এটি রাজ্য সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অন্তর্গত রাজ্য প্রত্নতত্ত্ব সংগ্ৰহালয়ে রাখা হবে। পুরুলিয়ার পুঞ্চা এলাকা মূলত জৈন তীর্থ ক্ষেত্র বলে পরিচিত। কিন্তু এবার সেই জৈনভূমিতে বৌদ্ধধর্মের নিদর্শন উদ্ধার হল বলে বিষয়টি নিয়ে খুবই চর্চা চলছে।
(তথ্য ও ছবি: মনোরঞ্জন মিশ্র)