Queen Elizabeth II: খেজুর গুড়ের প্রেমে পড়েছিলেন স্বয়ং রানি এলিজাবেথও! উপহার দিয়েছিলেন সিলমোহর...
স্বয়ং রানি এলিজাবেথও পড়েছিলেন এই গুড়ের প্রেমে। ঢাকায় গিয়ে লোভনীয় স্বাদ আর গন্ধের এই খেজুর রসের মায়ায় জড়িয়ে পড়েছিলেন ব্রিটেনের রানি। রানি এ গুড় খেয়ে অভিভূত হয়ে উপহার দিয়েছিলেন ‘হাজারি’ লেখা পিতলের সিলমোহর!
মানিকগঞ্জের ঝিটকা শিকদারপাড়া গ্রামের হাজারি পরিবার প্রায় ৩০০ বছর ধরে বংশপরম্পরায় এই গুড় তৈরি করে আসছে। এখনো টিকে আছে ২২টি পরিবার। তাদের হাত ধরেই টিকে আছে হাজারি গুড়ের ঐতিহ্যও।
দিন দিন খেজুর গাছের সংখ্যা কমতে থাকায়, কমছে হাজারি গুড়ের উৎপাদনও। আসলে সাধারণ গুড়ের চেয়ে হাজারি গুড় তৈরিতে ঝামেলা-পরিশ্রম বেশি। গাছ কাটা, হাঁড়ি ধোয়া থেকে শুরু করে রস জ্বাল দেওয়া ও গুড় তৈরি-সহ প্রতিটি ধাপেই রয়েছে নানা সূক্ষ্ম কৌশল।
ভোর থেকেই শুরু হয় গাছি পরিবারের ব্যস্ততা। গাছিরা খেজুর গাছ থেকে রসভর্তি হাঁড়ি সংগ্রহ করে আনেন। সেই রস মাটির উনানে কড়াইতে ঢেলে জ্বাল দেওয়া হয়। এরপর জালায় ওই ফুটন্ত রস ঢেলে কাঠ কিংবা তালের লাঠি দিয়ে নাড়া হয়। অনেকক্ষণ পরে রসের রঙ বাদামি হয়। এরপর সেই গুড় মাটির ছোট পাত্রে ঢেলে পাটালি বানানো হয়। শেষে 'হাজারি' লেখা সিল দিয়ে বিক্রির জন্য ছাড়া হয়।
হাজারি পরিবারের তরফে জানা যায়, প্রায় ৩০০ বছর আগে তাদের বংশের হাজারি প্রামাণিক নামে এক ব্যক্তির হাতে এই গুড়ের যাত্রা শুরু। বহু বছর ধরে হাজারি পরিবারের সদস্যরাই এ গুড় তৈরি করে আসছেন। তবে অনেকেই এখন এই পেশা ছেড়েছেন। হাজারি পরিবারের দুই সদস্য-সহ ২২টি পরিবার এই গুড় তৈরির সঙ্গে এখন জড়িত। শীতের সময় হাজারি গুড় তৈরি করেই তাঁরা জীবিকা নির্বাহ করেন। হাজারি পরিবারের অনুমতি ছাড়া অন্য কেউ হাজারি গুড় তৈরি করতেও পারবে না। গুড় তৈরির পর পাটালির গায়ে হাজারি ব্র্যান্ডের সিল দেওয়া হয়। যাঁদের অনুমতি আছে একমাত্র তাঁরাই এই সিল ব্যবহার করতে পারেন।
সাধারণ পাটালি গুড়ের চেয়ে হাজারি গুড়ের পার্থক্য অনেক। সাধারণ পাটালি গুড় দেখতে লাল রং হয়। হাজারি গুড়ের রং হয় সাদা। এর ঘ্রাণই অন্যরকম। মুখে দেওয়ার পর গলে যায়। হাতের মুঠোয় হালকা চাপেই ভাঙা যায়। বর্তমানে হাজারি গুড় ১৮০০ থেকে দু'হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়।