Rajnarayan Basu: একাল আর সেকালকে গেঁথে দিয়েছিলেন উনিশ শতকের এই বিশিষ্ট বাঙালি
১৮২৬ সালের ৭ সেপ্টেম্বরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বোড়াল গ্রামে জন্ম রাজনারায়ণ বসুর। তাঁর পূর্বপুরুষদের আদিনিবাস ছিল কলকাতায়৷ তিনি উনিশ শতকের অন্যতম বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব। চিন্তাবিদ, সাহিত্যিক, অনুবাদক, শিক্ষক।
তিনি ব্রাহ্মধর্ম গ্রহণ করেছিলেন বলে গোঁড়া হিন্দু সমাজপতিরা তাঁকে বোড়াল ছাড়তে বাধ্য করেন। রাজনারায়ণ ১৮৮০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে 'বৃদ্ধ হিন্দুর আশা' নামে একটি পুস্তিকার মাধ্যমে ভারতীয় উপমহাদেশের হিন্দুদের একত্রিত হয়ে একটি সংগঠনের অধীনে আসার আবেদন জানিয়েছিলেন। সমাজসংস্কারক হিসেবে তিনি ১৮৫০-এর দশকে বিধবাবিবাহকেও উৎসাহ দিয়েছেন। ১৮৬০ সালে মদ্যপানের বিরোদ্ধে সচেতনতা তৈরির উদ্দেশ্যে তিনি 'মদ্যপান নিবারণী সভা' নামে একটি সংগঠন তৈরি করেন। মেদিনীপুর জেলায় তিনি বিপুল কর্মযজ্ঞে যুক্ত ছিলেন। সেখানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা-সহ, গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠাও করেছিলেন। যুক্ত ছিলেন শিক্ষাদানকর্মেও।
বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক মহাকাব্য মাইকেল মধুসূদন দত্তের 'মেঘনাদবধ' কাব্য তিনি ইংরেজিতে অনুবাদ করেছিলেন।
দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ইচ্ছায় তিনি বেশ কয়েকটি উপনিষদও ইংরেজিতে অনুবাদ করেছিলেন।
জীবনের শেষ পর্যায়ে মেদিনীপুর ছেড়ে তিনি দেওঘর চলে যান। সময়টা ১৮৬৮ সাল। এর পর আমৃত্যু তিনি সেখানেই কাটান।
রাজনারায়ণ বসুকে আজকের বাঙালি ভুলেছে। তবে তাঁর নাতিকে ভুলতে পারেনি। ঋষি অরবিন্দ রাজনারায়ণের দৌহিত্র। পরবর্তী কালে মাতামহকে শ্রদ্ধা জানিয়ে অরবিন্দ একটি সনেট রচনা করেছিলেন।
রাজনারায়ণ বসু সারা জীবন বিপুল কর্মভার সামলেও ইংরেজি ও বাংলায় প্রচুর লেখালেখি করে গিয়েছেন। তাঁর রচিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ-- 'হিন্দু ধর্মের শ্রেষ্ঠতা' (১৮৭৩), 'সেকাল আর একাল' (১৮৭৪), 'আত্মচরিত' (১৯০৯)। ১৮৯৯ সালে রাজনারায়ণ প্রয়াত হন।