ইন্দো-চিন যুদ্ধ, ভারতে আসলেন না প্রেমিকা, অবিবাহিত জীবন কাটালেন টাটা
নিজস্ব প্রতিবেদন: ব্যক্তিগত পরিসর প্রকাশ্যে আনেন না সেলেবরা। অন্তরালেই থেকে যায় তাঁদের পাওয়া-না পাওয়া। তবে বরাবরই ব্যতিক্রম রতন টাটা। একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার নিয়ে মুখ খুললেন টাটা সন্সের চেয়ারম্যান এমিরেটাস।
বিবাহ করেননি রতন টাটা। এর আগে এক জায়গায় বলেছিলেন, যৌবনে একজনকে ভালো লেগেছিল। তবে সে ভালোবাসা পূর্ণতা পায়নি। কেন পূর্ণতা পায়নি, তা ভাঙলেন Humans of Bombay নামে একটি ফেসবুক পেজে। নিজের বাবা-মায়ের ডিভোর্স নিয়েও খোলাখুলি ৮২ বছরের রতন টাটা।
রতন টাটা লিখেছেন, বেশ হাসিখুশিই ছোটবেলা কেটেছিল। বড়ো হতেই দেখতে হল বাবা মায়ের বিচ্ছেদ। তখনকার দিনে বিবাহবিচ্ছেদের চল ছিল না। ঠাকুমা আমার দায়িত্ব নেন। মা ফের বিয়ে করার পর স্কুলে বন্ধুদের কাছে বক্রোক্তি শুনতে হতো। কিন্তু ঠাকুমা মূল্যবোধ ধরে রাখতে শিখিয়েছিলেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর লন্ডনে ছুটি কাটাতে গিয়েছিলাম। বেশ মনে আছে, আমার ও ভাইয়ের মধ্যে মূল্যবোধ গেঁথে দিয়েছিলেন ঠাকুমা। খালি বলতেন, এটা বলবে না। এটা করবে না। সম্মানটাই বড়ো। উনি সবসময় আমার পাশে থাকছেন।
বাবার সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের কথাও লিখেছেন রতন টাটা।''ভায়োলিন শিখতে চেয়েছিলাম। বাবা পিয়ানো শিখতে বলেন। আমি স্থপতি হয়ে চেয়েছিলাম। তবে বাবা চেয়েছিলেন ইঞ্জিনিয়ার হই। আমি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কলেজে পড়তে চেয়েছিলাম। উনি জোর করছিলেন বিট্রেনের কলেজে পড়ার। ঠাকুমা না থাকলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কার্নেল কলেজে ভর্তি হওয়া হতো না। মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তি হলেও বিষয় বদলে আর্কিটেকচার নিয়েছিলাম। কলেজের পর লস অ্যাঞ্জেলসে শুরু করলাম চাকরি। ২ বছর সেখানে ছিলাম। নিজের গাড়িও ছিল। চাকরিটা বড় ভালোবাসতাম।
এরপরই নিজের ভালোবাসার মানুষটির কথা স্মরণ করেছেন রতন টাটা। বলেছেন, লস অ্যাঞ্জেলসে প্রেমে পড়েছিলাম। বিবাহ প্রায় হয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু তখনই অসুস্থ ঠাকুমার জন্য সাময়িকভাবে ফিরে আসতে বাধ্য হলাম।
ভেবেছিলাম, যাঁকে ভালোবাসি তিনি ভারতে আসবেন। কিন্তু ১৯৬২ সালে ইন্দো-চিন যুদ্ধ চলায় তাঁর অভিভাবকরা এদেশে আসার অনুমতি দেয়নি। তখনই ভেঙে যায় সম্পর্ক। সে কারণেই কি বিয়ে করলেন না রতন টাটা? সেই খোঁজ নেই।