প্রণব সঙ্ঘে সর্বনাশ?

Thu, 07 Jun 2018-6:35 pm,

নাগপুরে আরএসএস-এর সমাবর্তনে অতিথি হিসাবে আমন্ত্রিত হয়েছেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি তথা বর্ষীয়ান এই কংগ্রেস নেতার এমন সিদ্ধান্তে ইতিমধ্যে তোলপাড় জাতীয় রাজনীতি। জানা যাচ্ছে, ইউপিএ চেয়ার পার্সেন সোনিয়া গান্ধী কংগ্রেসের নেতাদের প্রণবের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে টুইট করতে বলেছেন। এবার এক ঝলকে দেখে নিন, প্রণবের এই সিদ্ধান্তে কে, কী প্রতিক্রিয়া দিলেন-

আরএসএস: শ্রী মুখোপাধ্যায় সুদীর্ঘকাল রাজনীতি করেছেন ও সরকারের বিভিন্ন দফতরের গুরু দায়িত্ব পালন করেছেন। এসব ক্ষেত্রে তাঁর জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিপুল। আমাদের স্বয়ং সেবকদের সামনে তিনি যাতে তাঁর এই বিপুল ও বহুমূল্য অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেন, সেই উদ্দেশ্যই প্রাক্তন রাষ্ট্রপতিকে সঙ্ঘের তরফে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

 

রিপুন বোরা, রাজ্যসভার এমপি এবং অসম কংগ্রেসের প্রধান: প্রণববাবুর এই আমন্ত্রণ গ্রহণের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা উচিত। ভারতের সামাজিক-রাজনৈতিক জীবনে এই ঘটনার সুদূরপ্রসারী ও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

সুশীল কুমার শিন্ডে, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতা: সারা জীবন ধরে প্রণব মুখোপাধ্যায় ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ মেনে চলেছেন। আমি মনে করি না, আরএসএস-এর সমাবর্তনে গেলেও, তিনি তাঁর জীবনের আদর্শ থেকে সরে আসবেন। আশা করি, তিন সেখানে গিয়ে ধর্মনির্পেক্ষতার বার্তাই দেবেন।

মনমোহন বৈদ্য, যুগ্ম সম্পাদক-আরএসএস: প্রণববাবু সমাবর্তনের প্রধান অতিথি হওয়ায় যা প্রতিক্রিয়া তৈরি হচ্ছে তা এক ধরনের বৌদ্ধিক অসহিষ্ণুতা ছাড়া আর কিছুই নয়।

মনীষ তিওয়ারি, কংগ্রেসের মুখপাত্র: প্রণব মুখোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণ করা হয়েছে এবং তিনি তা গ্রহণ করেছেন। ফলে, এ বিষয়ে কোনও প্রশ্ন থাকলে তা তাঁকেই করা উচিত। তিনিই এর উত্তর দিতে পারবেন।

রাকেশ সিনহা, আরএসএস নেতা: শ্রী মুখোপাধ্যায়ের এই আমন্ত্রণ গ্রহণ থেকে এটাই বোঝা উচিত যে, গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে অনড় শত্রু মনোভাবাপন্নতা নয় বরং আলাপ আলোচনাই একমাত্র পথ। যারা আরএসএস-হিন্দুত্বকে 'অসহিষ্ণু' বলে থাকেন, এখান থেকেই তাদের উত্তর খুঁজে নেওয়া উচিত।

 

পি চিদাম্বরম, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতা: তিনি যখন আমন্ত্রণ গ্রহণ করেই ফেলেছেন, তখন আর এ বিষয়ে কথা বলে লাভ নেই। শুধু বলব, স্যার, আপনি আরএসএস-এর অনুষ্ঠানে যান এবং গিয়ে ওদের মুখের সামনে একটা আয়না তুলে ধরুন। তাহলে যদি ওরা নিজেদের ভুলটা বোঝে।

 

শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায়, প্রণবকন্যা ও কংগ্রেস নেত্রী: আরএসএস-এর অনুষ্ঠানে গিয়ে আপনি বিজেপিকে মিথ্যা কথা বলার ও গুজব ছড়ানোর সুযোগ দিচ্ছেন। উল্লেখ্য, শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায় টুইট করে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

রতন শরদ, আরএসএস-এর তাত্ত্বিক নেতা: শর্মিষ্ঠা জি, তিনি তো আপনার বাবা, তাহলে আপনি কেন টুইট করছেন? না কি কংগ্রেসের রানি মা এবং যুবরাজকে বোঝাতে চাইছেন যে, আপনি কতটা দলের প্রতি অনুগত? সারা জীবন ধরে প্রণববাবু যে কংগ্রেস দলের ক্রাইসিস ম্যানেজ করে এলেন, এখন সেই দলের লোকেরাই তাঁকে অবিশ্বাস করছে!

সঞ্জয় রাউত, শিবসেনার মুখপাত্র: আরএসএস-এর সঙ্গে কারও আদর্শগত বিরোধ থাকতেই পারে। কিন্তু, এটি একটি জাতীয়তাবাদী সংগঠন। যদি মণিশঙ্কর আইয়ার পাকিস্তানে যেতে পারেন এবং কংগ্রেস নেতারা হুরিয়তের সঙ্গে কথা বলতে পারেন, তাহলে প্রণববাবুও কোনও অন্যায় করেননি।

 

অধীর চৌধুরী, বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ এবং পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি: প্রণব দা'র এই সিদ্ধান্তে যে কোনও কংগ্রেস কর্মীর মতো আমিও হতবাক। শুধু জানতে চাই, আরএসএস সম্পর্কে তাঁর পূর্ব মূল্যায়ন কি বদলে গেছে?

ZEENEWS TRENDING STORIES

By continuing to use the site, you agree to the use of cookies. You can find out more by Tapping this link