Murshidabad: প্রকৃতির মাঝে পঠনপাঠন, প্রত্যন্ত আদিবাসী গ্রামে পথ দেখাচ্ছে `গাছের ইস্কুল`
নিজস্ব প্রতিবেদন: 'বন আমাদের বন্ধু'- প্রাথমিকের কিশলয়ের সেই গল্প বইয়ের পাতাতেই সীমাবদ্ধ রয়ে গিয়েছে। নিজেদের স্বার্থসিদ্ধিতে কখনও বৃক্ষচ্ছেদন তো কখনও অতি সচেনতায় পরিবেশ রক্ষায় অরণ্যরোপণ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে মানুষ। কিন্তু এসবের উর্ধে ব্যতিক্রম হয়েছে 'গাছের ইস্কুল'।
মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা থানার অন্তগর্ত বাহাদুরপুর অঞ্চলের আদিবাসী অধ্যুষিত প্রত্যন্ত শামলাপুর গ্রামে আশার আলো দেখাচ্ছে গাছের ইস্কুল।
'লক্ষ্য একটাই, প্রত্যন্ত গ্রামেও শিক্ষার আলো পৌঁছে দেওয়া', জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটালকে জানালেন গাছের ইস্কুলের প্রতিষ্ঠাতা পেশায় ফরাক্কা কলেজের আংশিক সময়ের শিক্ষক অংশুমান ঠাকুর।
বাচ্চারা স্কুলকে ইস্কুল বলেই ডাকে, আর তাই গাছের ইস্কুলের নামকরণ। অংশুমান ও তাঁর সহকর্মীরা মিলে প্রকৃতির কোলেই এই 'ইস্কুল' গড়ে তুলেছেন।
অংশুমান জানান, 'বাচ্চারা খুব স্বাচ্ছন্দ্যে প্রকৃতির মাঝে হেসে খেলে পড়াশোনা করে। বিশ্বভারতীতে পড়ার সময়েই আমি অনুভব করেছিলাম প্রকৃতির মধ্যে থেকে পড়াশোনা করার তাৎপর্য কতটা। এখানেও সেই পরিবেশটাই তৈরি করার চেষ্টা করেছি।'
মার্চ মাস থেকে খোলা মাঠের মধ্যে গাছের নিচেই শান্তিনিকেতনের ঘরানায় চলে পড়াশোনা।
২০১৯ সাল থেকে 'গাছ গ্রিন হ্যান্ডস' নামক পরিবেশ সংগঠন গড়ে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন অংশুমান ও অন্যান্য সদস্যরা। আর এবার এলাকায় পিছিয়ে পড়া দুঃস্থ ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে তাদের ভাবনা 'গাছের ইস্কুল'।
তবে শুধু পড়াশোনাই নয়। পুঁথিগত পড়াশোনার মাঝে রয়েছে প্রকৃতিপাঠও। স্থানীয় এলাকায় ১ হাজার নিমগাছ রোপণের পরিকল্পনাও গ্রহণ করেছে গাছের ইস্কুলের সদস্যরা।
গ্রামের ৫ থেকে ১০ বছর বয়সী বাচ্চারা পড়াশোনা করে গাছের ইস্কুলে। এমন উদ্যোগে খুশি অভিভাবকরাও।
লকডাউনে বন্ধ স্কুল। কিন্তু পড়াশোনা থেমে নেই। অনলাইন পড়াশোনার ব্যবস্থা না থাকলেও গাছের ইস্কুলে এসে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে পড়ুয়ারা।
অংশুমান জানান, মে মাস থেকে পড়াশোনার পাশাপাশি মিড-ডে-মিলের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। নিয়মিত পুষ্টিকর খাদ্যের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বাচ্চাদের জন্য।
দুশ্চিন্তাও রয়েছে তবে ইতিমধ্যে সামাজিক মাধ্যমে এই উদ্যোগের কথা জানতে পেরে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন অনেকেই।