রাজ্য পোস্তের দাম ২৪০০ টাকা, মধ্যবিত্তকে ভুলতে হতে পরে আলু পোস্ত ও বড়ার স্বাদ
নিজস্ব প্রতিবেদন: পোস্ত এখন সোনা! মধ্যবিত্ত বাঙালিকে আগামীদিনে ভুলতে হবে পোস্তর স্বাদ। কারণ, পোস্তোর আকাশছোঁয়া দাম। আগামীদিনে আরও বাড়ার আশঙ্কা। খাসির মাংস, ইলিশ মাছ যেমন মধ্যবিত্তের হেঁসেলে ঢোকা প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে, ঠিক একইভাবে বাদের খাতায় চলে গিয়েছে পোস্ত। কারণ, ওই দামে অন্য খাবার খেতে হবে যে!
সাম্প্রতিককালে পোস্ত বাঙালির সমস্ত প্রিয় খাদ্য তালিকার মধ্যে দামের নয়া রেকর্ড তৈরি করেছে। সোমবার কলকাতার বাজারে এক কিলো পাইকারি পোস্ত ২২৭৫ টাকা ।খুচরো বাজারে যা ২৪০০ টাকা কিলো। আক্ষরিক অর্থেই মাঝারি মাপের ১০ থেকে ১২টি পোস্ত বড়া ভাজতে সংসার খরচ থেকে আড়াইশো টাকা বেরিয়ে যাবে। এর সঙ্গে থাকবে তেল ও গ্যাসের খরচ।
১) কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ। রাজ্যে প্রতি মাসে পোস্তর চাহিদা ৪০ মেট্রিক টন । এরমধ্যে রাজস্থানের পোস্ত স্বাদে, গুনে অতুলনীয় । ৪০ মেট্রিক টনের মধ্যে রাজস্থান থেকে পশ্চিমবঙ্গ ৪০ শতাংশ পোস্ত আমদানি করে। বাকি ১০ শতাংশ আসে মধ্যপ্রদেশ থেকে। ১০ শতাংশ আসে গুজরাট থেকে। ৫ শতাংশ আসে উত্তরপ্রদেশ থেকে। বাকি ৩৫ শতাংশ বিদেশ থেকে আসে। এরমধ্যে তুরস্ক থেকে ২৫ শতাংশ এবং ইন্ডোনেশিয়া থেকে ১০ শতাংশ পোস্ত আসে। এ রাজ্যে পোস্ত উৎপাদন হয় না।
২) ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের পর থেকে চাহিদা একই থাকলেও বিদেশি পোস্তর যোগান বন্ধ হয়ে গিয়েছে। করোনাকালে অনিয়মিত বিমান চলাচল এবং আমদানি শর্ত অনেক কঠোর হয়েছে। তাই একধাক্কায় বাজারে ৩৫ শতাংশ পোস্তর যোগান বন্ধ। তাই দাম বেলাগাম।
৩) দেশের অন্য রাজ্য থেকেও পোস্ত আনার ক্ষেত্রে গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে জ্বালানির দাম ও বর্ধিত ট্রাক মাশুল। উদাহরণ স্বরূপ, ২০১৯ সালে ভিন রাজ্য থেকে এক কেজি পোস্ত আনতে ট্রাকভাড়া লাগত ৩ টাকা । ২০২১ সালের জুলাইতে যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ টাকা ৪০ পয়সা । ফলে যা হওয়ার তাই হয়েছে ।
৪) রাজস্থান, গুজরাটের মত রাজ্য অপেক্ষাকৃত নিকটবর্তী রাজ্যে কম পরিবহন খরচে পোস্ত পাঠিয়ে বেশি মুনাফা অর্জন করতে পারছে। তাই ছত্তিশগড়, দিল্লী, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, চণ্ডীগড় এলাকায় বেশি পোস্ত চলে যাচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের জন্য বেশি স্টক পড়ে থাকছে না। চাহিদা বেশি, এদিকে স্টক কম । তাই অর্থনীতির স্বাভাবিক নিয়মেই দাম বেড়ে যাচ্ছে।