বিয়ের ১ বছর ঘুরতে না ঘুরতেই এল বৈধব্য, আত্মহত্যা করেছিলেন রেখার স্বামী, কী ঘটেছিল?
৭ এবং ৮ এর দশকে জনপ্রিয় অভিনেত্রী রেখার জীবন বরাবরই রহস্যে ভরা। ব্য়ক্তিগত জীবন তিনি কখনওই সেভাবে সামনে আনেননি। অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে তাঁর বহু চর্চিত প্রেমের কথা শোনা গেলেও রেখা বিয়ে করেছিলেন ব্যবসায়ী মুকেশ আগরওয়ালকে।
১৯৯০ সালে মুকেশ আগরওয়ালকে বিয়ে করেছিলেন রেখা। জানা যায়, তাঁর এক বন্ধুর মাধ্যমে দিল্লির ব্যবসায়ীর মুকেশের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল রেখার।
জানা যায় মুকেশ ছিলেন রেখার ভীষণ ফ্যান। রেখা যখন বিয়ের কথা ভাবছিলেন, ঠিক তখনই তাঁর সঙ্গে মুকেশ আগরওয়ালের আলাপ হয়। দুজনের মধ্যে ফোন নম্বর আদানপ্রদান হয়।
প্রথমবার আলাপের পরই রেখাকে তাঁর বাগানবাড়িতে একটি অনুষ্ঠানে রেখা-কে আমন্ত্রণ জানান মুকেশ। সেখানে রেখাই ছিলেন সকলের মধ্যমণি।
হঠাৎ করেই মুকেশ আগরওয়ালের সঙ্গে বিয়েটা সেরে ফেলেন রেখা। অভিনেত্রীর পদবী বদলে যায়। যদিও এই বিয়েতে রেখা কিংবা মুকেশ কারোর পরিবারই উপস্থিত ছিলেন না।
শোনা যায় জুহু-র মুক্তেশ্বর দেবালয় বলে একটি মন্দিরে হঠাৎই গিয়ে পুরোহিতকে তাঁদের বিয়ে দিতে বলেন মুকেশ, বিয়ে হয়ে যায়।
যদিও ওই মন্দিরে সন্ধ্যা আরতির পর কোনও বিয়ের অনুষ্ঠান করা নিষিদ্ধ ছিল। রেখা-মুকেশ-এর বিয়ে দিয়ে মন্দিরের নিয়ম ভাঙার জন্য ওই পুরোহিতকে নাকি মন্দির থেকে বিতারিতও করা হয়।
এরপর ১৯৯০ সালে ১৫ এপ্রিল তিরুপতি মন্দিরে রেখা ও মুকেশের আরও একটি বিয়ের অনুষ্ঠান হয়। সেখানে অবশ্য রেখার বাবা-মা উপস্থিত ছিলেন।
রেখা বিয়ের পর তাঁর স্বামীকে নিয়ে হেমা মালিনীর বাড়িতে গিয়েছিলেন। তাঁর বিয়ের খবর শুনে হেমা মালিনীও চমকে যান বলে জানা যায়। এছাড়াও রেখা তাঁর বিয়ের কথা জানিয়েছিলেন অভিনেত্রী দীপ্তি নাভালকে।
বিয়ের পর লন্ডনে মুকেশের সঙ্গে মধুচন্দ্রিমাতেও গিয়েছিলেন রেখা। পরে তাঁদের মনে হয় তাঁরা দুজনে পৃথক ব্যক্তিত্বের মানুষ। দুজনের মধ্যে সমস্যার সূত্রপাত হয়েছিল বলে জানা যায়।
শোনা যায়, রেখার স্বামী মুকেশ, রেখাকে বলেছিলেন, রেখার জীবনে যেমন AB (অমিতাভ বচ্চন) আছেন, তাঁর জীবনেও একজন ABআছেন। আর ইনি হলেন তাঁর মনোবিদ বন্ধু আকাশ বাজাজ। যাঁর বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে, দুই সন্তানের সঙ্গে আকাশ একা থাকেন। রেখার সঙ্গে আলাপের পর আকাশের স্ত্রীর সঙ্গে মুকেশের একটা সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন মুকেশ। ওই মহিলা ও সন্তানদের সঙ্গে নাকি মুকেশ বেড়াতেও যেতেন। তবে রেখার সঙ্গে আলাপের পর তিনি তাঁকে বিয়ে করবেন বলে সিদ্ধান্ত নেন।
রেখা ও মুকেশের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়। যেখানে মুকেশ পার্টি করতে পছন্দ করতেন। তখন রেখা নিভৃতে জীবন কাটাতে পছন্দ করতেন।
শোনা যায়, পরবর্তীকালে মুকেশের ব্যাবসায় লোকসান হওয়া শুরু হয়। রেখাও তাঁর কাজের জন্য দিল্লি যাওয়া কমিয়ে দেন। এতে বিরক্ত মুকেশ রেখার কাজে বাধা দিতে থাকেন। মুম্বইয়ে এসে থাকা শুরু করেন। ব্যবসার দিকে মন দেওয়া ছেড়ে দেন। বলিউডের সমস্ত পার্টিতে রেখার সঙ্গে গিয়ে অদ্ভুত আচরণ করতে বলে শোনা যায়। যাতে নাকি রেখাও অস্বস্তিতে পড়তেন।
শোনা যায়, মুকেশের আচরণে বিরক্ত রেখা তাঁর থেকে দূরত্ব তৈরি করতে থাকেন। ফোন ধরা বন্ধ করে দেন। যোগাযোগ রাখা বন্ধ করেন। বিবাহ-বিচ্ছেদের কথা ভাবতে শুরু করেন। অন্যদিকে এই পরিস্থিতিতে মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন মুকেশ আগরওয়াল।
বিয়ের ৭ মাসও যায়নি ১৯৯০-এর ২ অক্টোবর আত্মহত্যা করেন রেখার স্বামী মুকেশ আগরওয়াল। এই মৃত্যুর জন্য রেখাকে অনেকেই দোষারোপ করতে থাকেন। তবে আবার রেখার স্বামীর পুরনো বন্ধু, দিল্লি পুলিসের এক আধিকারিক জানিয়েছিলেন, রেখা বরাবরই সংসার করতে চেয়েছিলেন। সন্তান চেয়েছিলেন, এমনকি তারকা জীবন থেকে বের হয়ে আসতেও চেয়েছিলেন। তবে তাঁর ভাগ্যে হয়ত অন্যকিছুই ছিল।
(যদিও এই সমস্ত তথ্য বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এই তথ্যগুলি Zee ২৪ ঘণ্টা যাচাই করেনি।)