বিয়ের ১ বছরের মধ্যেই Rekha-র স্বামীর আত্মহত্যা, কী ঘটেছিল?

Thu, 04 Mar 2021-4:16 pm,

৭ এবং ৮ এর দশকে জনপ্রিয় অভিনেত্রীদের মধ্যে প্রথমসারিতেই উঠে আসে রেখার নাম। যাঁর জীবন বরাবরই রহস্যে ভরা। যদিও ব্য়ক্তিগত জীবন তিনি কখনওই সেভাবে সামনে আনেননি। অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে তাঁর বহু চর্চিত প্রেমের কথা শোনা গেলেও রেখা বিয়ে করেছিলেন ব্যবসায়ী মুকেশ আগরওয়ালকে।

জানা যায়, মুকেশ ছিলেন রেখার অনুরাগী। রেখা যখন বিয়ের কথা ভাবছিলেন, ঠিক তখনই এক বন্ধুর মাধ্যমে দিল্লির ব্যবসায়ী মুকেশ আগরওয়ালের সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়। দুজনের মধ্যে ফোন নম্বর আদানপ্রদান হয়। প্রথমবার আলাপের পরই রেখাকে তাঁর বাগানবাড়ির একটি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানান মুকেশ। সেখানে রেখাই হয়ে ওঠেন মধ্যমণি।

সালটা ১৯৯০, একদিন হঠাৎ করেই মুকেশ আগরওয়ালের সঙ্গে বিয়েটা সেরে ফেলেন রেখা। অভিনেত্রীর পদবীও বদলে যায়। যদিও এই বিয়েতে রেখা কিংবা মুকেশ, কারোর পরিবারই উপস্থিত ছিলেন না। শোনা যায়, জুহু-র মুক্তেশ্বর দেবালয় বলে একটি মন্দিরে হঠাৎই গিয়ে পুরোহিতকে তাঁদের বিয়ে দিতে বলেন মুকেশ, বিয়েও হয়ে যায়।

যদিও ওই মন্দিরে নাকি সন্ধ্যা আরতির পর কোনও বিয়ের অনুষ্ঠান করা নিষিদ্ধ ছিল। রেখা-মুকেশ-এর বিয়ে দিয়ে মন্দিরের নিয়ম ভাঙার জন্য ওই পুরোহিতকে নাকি মন্দির থেকে বিতারিতও করা হয়। 

এরপর ১৯৯০ সালে ১৫ এপ্রিল তিরুপতি মন্দিরে রেখা ও মুকেশের আরও একটি বিয়ের অনুষ্ঠান হয়। সেখানে অবশ্য রেখার বাবা জেমিনি গণেশন ও মা পুষ্পাবল্লী উপস্থিত ছিলেন বলে জানা যায়। যদিও আবার জেমিনি গণেশন কোনওদিনই রেখাকে নিজের মেয়ে হিসাবে মানতে চাননি। 

বিয়ের পর স্বামীকে নিয়ে হেমা মালিনীর বাড়িতে গিয়েছিলেন রেখা। তাঁর বিয়ের খবর শুনে হেমা মালিনীও চমকে যান বলে জানা যায়। এছাড়াও রেখা তাঁর বিয়ের কথা অভিনেত্রী দীপ্তি নাভালকে জানিয়েছিলেন বলে জানা যায়।

বিয়ের পর মুকেশের সঙ্গে মধুচন্দ্রিমা কাটাতে লন্ডন গিয়েছিলেন রেখা। পরে তাঁদের মনে হয় তাঁরা দুজনে পৃথক ব্যক্তিত্বের মানুষ। আর সেখান থেকেই দুজনের মধ্যে সমস্যার সূত্রপাত হয়েছিল বলে জানা যায়। 

শোনা যায়, রেখার স্বামী মুকেশ, রেখাকে বলেছিলেন, রেখার জীবনে যেমন AB (অমিতাভ বচ্চন) আছেন, তাঁর জীবনেও একজন ABআছেন। আর ইনি হলেন তাঁর মনোবিদ বন্ধু আকাশ বাজাজ। যাঁর বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে, দুই সন্তানের সঙ্গে আকাশ একা থাকেন। রেখার সঙ্গে আলাপের আগে আকাশের সঙ্গে তাঁর একটা সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন মুকেশ। ওই মহিলা ও সন্তানদের সঙ্গে মুকেশ নাকি বেড়াতেও যেতেন। তবে রেখার সঙ্গে আলাপের পর তিনি তাঁকেই বিয়ে করবেন বলে সিদ্ধান্ত নেন।

জানা যায়,  রেখা ও মুকেশের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সমস্যা তৈরি হতে শুরু করে। যেখানে মুকেশ পার্টি করতে পছন্দ করতেন। রেখা তখন নিভৃতে জীবন কাটাতে পছন্দ করতেন। 

পরবর্তীকালে মুকেশের ব্যবসায় লোকসান হতে শুরু করে। রেখাও তাঁর কাজের জন্য দিল্লি যাওয়া কমিয়ে দেন। এতে কিছুটা বিরক্ত মুকেশ রেখার কাজে বাধা দিতে থাকেন। মুম্বইয়ে এসে থাকা শুরু করেন। ব্যবসার দিকে মন দেওয়া ছেড়ে দেন। বলিউডের সমস্ত পার্টিতে রেখার সঙ্গে গিয়ে অদ্ভুত আচরণ করতে বলে শোনা যায়। যাতে নাকি রেখাও অস্বস্তিতে পড়তেন।

শোনা যায়, মুকেশের আচরণে বিরক্ত রেখা তাঁর থেকে দূরত্ব তৈরি করতে থাকেন। ফোন ধরা বন্ধ করে দেন। যোগাযোগ রাখা বন্ধ করেন। বিবাহ-বিচ্ছেদের কথা ভাবতে শুরু করেন। অন্যদিকে, এই পরিস্থিতিতে মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন মুকেশ আগরওয়াল।

রেখার সঙ্গে বিয়ের ৭ মাস পর, ১৯৯০-এর ২ অক্টোবর আত্মহত্যা করেন রেখার স্বামী মুকেশ আগরওয়াল। এই মৃত্যুর জন্য রেখাকে অনেকেই দোষারোপ করতে থাকেন। তবে আবার রেখার স্বামীর পুরনো বন্ধু, দিল্লি পুলিসের এক আধিকারিক জানিয়েছিলেন, রেখা বরাবরই সংসার করতে চেয়েছিলেন। সন্তান চেয়েছিলেন, এমনকি তারকা জীবন থেকে বের হয়ে আসতেও চেয়েছিলেন। তবে তাঁর ভাগ্যে হয়ত অন্যকিছুই ছিল।

ZEENEWS TRENDING STORIES

By continuing to use the site, you agree to the use of cookies. You can find out more by Tapping this link