`Repeal AFSPA`: নাগাল্যান্ড গুলিকাণ্ডের পর বাড়ছে শোরগোল! কী এই বিতর্কিত আইন?
AFSPA প্রাথমিকভাবে আসাম এবং মণিপুরের "অশান্ত এলাকা" হিসাবে পরিচিত অংশে শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সশস্ত্র বাহিনীর সাহায্যার্থে তৈরি করা হয়েছিল। পরবর্তীকালে ১৯৮০-র দশকের শেষের দিকে উত্তর-পূর্বের সাতটি রাজ্যকেই এর অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বর্তমানে এই আইনটি নাগাল্যান্ড সহ চারটি রাজ্যে কার্যকর রয়েছে।
'সশস্ত্র বাহিনী (বিশেষ ক্ষমতা) বিল' (AFSPA) সংসদের উভয় কক্ষেই পাস হয়। ১৯৫৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে রাষ্ট্রপতির সম্মতি পায় এই আইন।
একবার কেন্দ্রীয় সরকার বা রাজ্য সরকার কোনও এলাকাকে "অশান্ত এলাকা" হিসাবে ঘোষণা করলে, একটি নির্দিষ্ট পদের উপরে সশস্ত্র বাহিনীর কর্মীদের যথাযথ সতর্কতার পরে বল প্রয়োগ করে সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে হত্যার অনুমতি দেয়।
এই আইন সশস্ত্র বাহিনীর কর্মীদের, যুক্তিসঙ্গত সন্দেহের ভিত্তিতে ওয়ারেন্ট ছাড়াই গ্রেপ্তার করার অনুমতি দেয়। তারা ওয়ারেন্ট ছাড়াই যেকোনও স্থানে প্রবেশ ও তল্লাশি করতে পারে।
এই আইনে, সশস্ত্র আক্রমণ করা হয় অথবা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এমন স্থান, এছাড়াও হামলার চেষ্টা হতে পারে বা অপরাধীদের দ্বারা ব্যবহার হতে পারে সেরকম যেকোনও স্থানকে ধ্বংসের অনুমতি দেওয়া হয়।
এই আইনের আওতায় কাজ করা যেকোনও কর্মীদের সুরক্ষা প্রদান করে AFSPA। এই আইনে বলা হয়, "কেন্দ্রীয় সরকারের পূর্ববর্তী অনুমোদন ব্যতীত কোনো মামলা অথবা অন্যান্য আইনি প্রক্রিয়া চালু করা হবে না।"
মানবাধিকার কর্মী এবং সংগঠনগুলির মতে AFSPA মানবাধিকার লঙ্ঘন করে এবং সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের দায়িত্বহীন ভাবে কাজ করার অনুমতি দেয়। সরকারের মতে সশস্ত্র বিদ্রোহ নিয়ন্ত্রণের জন্য এই আইন প্রয়োজন।
সোমবার মোন জেলা সদর দফতরে নাগরিকদের শেষকৃত্যের অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে গিয়ে, নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী নিফিউ রিও বলেন "AFSPA সেনাবাহিনীকে কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়াই সাধারন নাগরিকদের গ্রেপ্তার করার, তাদের বাড়িতে অভিযান চালানোর এবং মানুষকে হত্যা করার ক্ষমতা দেয়"।
তিনি আরও বলেন, "কিন্তু নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেই। তারা আইনশৃঙ্খলার সমস্যা তৈরি করেছে।"
মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা বলেছেন যে "AFSPA-র প্রভাব সবসময়ই বিপরীতমুখী হয়েছে এবং সেখানে আরও অশান্তি হয়েছে এবং মানুষকে অনেক যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে"।
তিনি আরও বলেছিলেন যে তার ন্যাশনাল পিপলস পার্টি, বিজেপির সহযোগী, কিন্তু তারা AFSPA-এর বিরুদ্ধে এবং কেন্দ্রকে তারা এই "কঠোর" আইন বাতিল করার জন্য অনুরোধ অব্যাহত রাখবে।
সোমবার জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (NHRC) নাগাল্যান্ডে হত্যার বিষয়ে কেন্দ্র এবং নাগাল্যান্ড সরকারকে নোটিশ জারি করেছে।
এর ফলে সৈন্য এবং আসাম রাইফেলস ক্যাম্পে অগ্নিসংযোগ, দাঙ্গা এবং আক্রমণের মত বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। এর ফলে একজন সৈনিকের মৃত্যু সহ আরও অনেকে আহত হয়েছেন।
মণিপুরের মানবাধিকার কর্মী ইরম শর্মিলার ১৬ বছরের অনশন সহ উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলিতে AFSPA-এর বিরুদ্ধে অসংখ্য প্রচার অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০০০ সালে মণিপুরে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে দশ জন সাধারন নাগরিক নিহত হওয়ার পর শর্মিলা তার প্রতিবাদ শুরু করেন।