Virat Kohli`s Records In Ranji Trophy: দলকে বাঁচিয়েই বাবার শেষকৃত্যে! বিপক্ষে ছিলেন রোহিতও, ফিরে দেখা রাজার রঞ্জির ঝলক...
)
প্রায় ১৩ বছর পর ফের রঞ্জি ট্রফিতে ফিরছেন বিরাট কোহলি! ২০১২ সালে উত্তরপ্রদেশের বিরুদ্ধে গাজিয়াবাদে শেষবার প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলেছিলেন তিনি। আগামী বৃহস্পতিবার অর্থাত্ ৩০ জানুয়ারি দিল্লির গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচ রেলওয়েজের বিরুদ্ধে। ঘাড়ে চোটের কারণে আগের ম্যাচে সৌরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে খেলেননি তিনি। বিরাট এবার রেলওয়েজের বিরুদ্ধে অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে নামছেন দিল্লির হয়ে। বিরাটের এযাবত্ রঞ্জি কেরিয়ারে রয়েছে একাধিক স্মরণীয় মুহূর্ত! রয়েছে দলকে বাঁচিয়েই বাবার শেষকৃত্যে যোগ দেওয়া থেকে রোহিত শর্মার বিরুদ্ধে খেলাও...
)
২০০৬ সালের রঞ্জিতে তামিলনাড়ুর বিরুদ্ধে বিরাটের অভিষেক হয়েছিল দিল্লির বিরুদ্ধে। মিঠুন মানহাসের নেতৃত্বে খেলেছিলেন বিরাট। গৌতম গম্ভীর, আকাশ চোপড়া, শিখর ধাওয়ান, আশিস নেহরা এবং ইশান্ত শর্মাও ছিলেন সেই টিমে। বিরাটের মতো ইশান্তেরও রঞ্জি অভিষেক হয়েছিল তখন। বিরাট ব্যাট করতে নেমেছিলেন পাঁচে। ২৫ বল খেলে ১০ রান করে ফিরে গিয়েছিলেন ইয়ো মহেশের বলে ক্য়াচ তুলে দিয়েছিলেন। শিখর ধাওয়ান, বিজয় দাহিয়া এবং রজত ভাটিয়া সেই ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছিলেন। দিল্লি ৭ উইকেটে ৪৯১ রান করে ইনিংস ডিক্লেয়ার করেছিল। ম্যাচ ড্র হয়ে গিয়েছিল।
)
সাল ২০০৬। উনিশ বছরের কোহলির দিল্লির হয়ে চতুর্থ ম্যাচ। দিল্লির খেলা ছিল কর্ণাটকের বিরুদ্ধে। প্রথমে ব্যাট করে কর্ণাটকে তুলেছিল ৪৪৬ রান। জবাবে দিল্লির ১৪ রান তুলতে গিয়ে ৩ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল! দলকে বাঁচাতে মাঠে নেমেছিলেন বিরাট কোহলি। তিনি নামতেই ওদিকে শিখর ধাওয়ান আউট হয়ে যান। স্কোর হয়ে যায় ২৪/৪। সেখান থেকে ৫৯/৫! দিনের শেষে পুনিত বিস্তের সঙ্গে ৪০ রানে অপরাজিত ছিলেন কোহলি। সেই রাতে কোহলিকে জানানো হয় যে প্রয়াত হয়েছেন তাঁর বাবা প্রেম কোহলি, যে বাবার ইচ্ছায় কোহলি মাত্র ৯ বছর বয়সে ব্যাট ধরেছিলেন! ম্যাচের তৃতীয় দিন সকালে কোহলির বাবার মৃত্যুর খবর জেনে গিয়েছিল পুরো দিল্লির ড্রেসিংরুম। পরের ব্যাটার চৈতন্য নন্দকে ব্য়াট করতে যাওয়ার জন্য বলে দিয়েছিল দিল্লি। কিন্তু সবাইকে চমকে দিয়ে ব্যাট করতে মাঠে নেমে পড়েছিলেন কোহলি! গোটা দিল্লি থ হয়ে গিয়েছিল। বাবাকে হারিয়ে শোকে পাথর ছেলেকে ২৮১ মিনিট কেউ টলাতে পারেনি। ২৩৮ বল খেলে ৯০ রান করে ফিরেছিলেন কোহলি। আম্পায়ারের বিতর্কিত সিদ্ধান্তে আউট না হলে হয়তো সেঞ্চুরি করেই ফিরতেন বিরাট। আর দলকে বাঁচিয়েই বাবার শেষকৃত্যে শামিল হয়েছিলেন তিনি।
২০০৭-০৮ মরসুমে দিল্লির হয়ে ঘরের মাঠে রাজস্থানের বিরুদ্ধে রঞ্জি প্রথম শতরান করেছিলেন বিরাট। প্রথম ইনিংসে তিনি ১৯ রানে আউট হয়েছিলেন। যেখানে দিল্লি মাত্র ১১৯ রান করতে পেরেছিল। তবে দারুণ ভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে রাজস্থানকে তারা ৮৯ রানে গুটিয়েও দিয়েছিল। দ্বিতীয় ইনিংসে কোহলির শতরানে (১৯২ বলে ১০৬) ভর করে দিল্লি ৩৮৭ রান তুলেছিল। অধিনায়ক মিঠুন মানহাসও সেঞ্চুরি করেছিলেন। রজত ভাটিয়া ৮৩ রান জুড়েছিলেন। দিল্লি ১৭২ রানে ম্যাচ জিতে নিয়েছিল।
২০০৭ সালের নভেম্বরে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে দিল্লির ম্যাচটিকে, এখন যদি ভারতীয় ক্রিকেটের প্রেক্ষাপট বিবেচনা করা হয় তাহলে কিন্তু তার আলাদা গুরুত্ব থাকবে। কোহলি এবং গম্ভীর দিল্লির হয়ে খেলেছিলেন। গম্ভীর এখন ভারতীয় দলের কোচ, ওদিকে বিরাট দলের সুপারস্টার। কোহলি-গম্ভীরের বিরুদ্ধে মুম্বইয়ের হয়ে খেলেছিলেন বর্তমান টেস্ট ও ওডিআই অধিনায়ক রোহিত শর্মা, বর্তমানে জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক অজিত আগরকর এবং দলের সহকারি কোচ অভিষেক নায়ার । প্রকৃতপক্ষে, ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে ড্র হওয়া ম্যাচের প্রথম ইনিংসে কোহলি ১৯ রান করেছিলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি শূন্য রানে নায়ারের বলে আউট গিয়েছিলেন।
২০১২ সালে উত্তরপ্রদেশের বিরুদ্ধে গাজিয়াবাদে শেষবার প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলেছিলেন তিনি। দুই ইনিংস মিলিয়ে ১৪ ও ৪৩ রান করেছিলেন বিরাট। উভয় ইনিংসেই ভুবনেশ্বর কুমারের শিকার হয়েছিলেন তিনি।
বিরাট রঞ্জিতে ২৩ ম্যাচে ১৫৪৭ রান করেছেন। শতরান রয়েছে ৫টি। ২০০৬-০৭ মরসুমে ৬ ম্যাচে ২৫৭ রান করেছেন (রয়েছে ১টি পঞ্চাশ ও সর্বাধিক রান ৯০) ২০০৭-০৮ মরসুমে ৫ ম্যাচে ৩৭৩ রান করেছিলেন (রয়েছে ২টি শতরান ও সর্বাধিক রান ১৬৯)। ২০০৮-০৯ মরসুমে ৪ ম্যাচে ১৭৪ রান করেছিলেন (রয়েছে ২টি পঞ্চাশ ও সর্বাধিক রান ৮৩)। ২০০৯-১০ মরসুমে ৩ ম্যাচে ৩৭৪ রান করেছিলেন। (রয়েছে ১টি শতরান, দুটি পঞ্চাশ ও সর্বাধিক ১৪৫ রান)। ২০১০-১১ মরসুমে ৪ ম্যাচে ৩৩৯ রান করেছিলেন কোহলি। (রয়েছে ২টি শতরান ও সর্বাধিক রান ১৭৩)। ২০১২-১৩ মরসুমে কোহলি ১টি ম্যাচই খেলেছিলেন রঞ্জিতে। (মোট ৫৭ রান করেছিলেন, সর্বাধিক রান ছিল ৪৩)