Salil Chowdhury: আর. ডি. থেকে রহমান-- বয়ে চলেছে সলিলের অন্তহীন লেগ্যাসি
সলিল চৌধুরী ভারতীয় লঘু সঙ্গীতের জগতে এক বিস্ময়কর নাম। আজ, ১৯ নভেম্বর তাঁর জন্মদিন। শতবর্ষের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা এক বিরল গোত্রের এই সঙ্গীতব্যক্তিত্ব ভারতীয় ফিল্ম এবং নন-ফিল্ম সঙ্গীতে নানা বিপ্লব ঘটিয়েছেন।
শুধু ভারতীয় ছবিতেই তাঁর অসাধারণ কাজের ইতিহাস রয়েছে। তিনি মোট ১৩টি ভাষায় কাজ করেছেন। এর মধ্যে হিন্দি ছবির সংখ্যাই ৭৫টি। বাংলাছবি ৪১টি। ২৭টি মালয়ালম ছবিতে তাঁর প্রতিভার স্বাক্ষর রয়েছে। এছাড়াও তিনি মারাঠি, তামিল, তেলুগু, কন্নড়, গুজরাটি, ওড়িয়া ও অসমীয়া ছবিতেও সুর দিয়েছেন।
তবে সলিল চৌধুরী 'সলিল চৌধুরী' হন 'দো বিঘা জমিন' ছবিতে। অদ্ভুত ভাবে ছবিটি তৈরি হয়ে ওঠে। সলিলের কেরিয়ারের এক মাইলস্টোন এটি। সলিলেরই কাহিনির উপর নির্ভর করে বিমল রায় এ ছবি বানিয়েছিলেন। অসাধারণ সঙ্গীত এ ছবির। এই ছবিটিই ভারতীয় ফিল্মের ইতিহাসে প্রথম ফিল্মফেয়ার প্রাপ্ত ছবি!
মনে রাখার মতো অনেক বাংলা ছবিতেই কাজ করেছেন সলিল। তবে বাংলায় তাঁর প্রথম বড় ব্রেক 'পাশের বাড়ি' (পরে যা হিন্দিতেও তৈরি হবে 'পড়োশন' নামে এবং যথারীতি ইতিহাস সৃষ্টি করবে)। এই ছবিতে গান গেয়ে বাঙালিকে মাতিয়ে দিয়েছিলেন ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য। বাংলা ছবির দর্শক সেই প্রথম সলিল চৌধুরী ম্যাজিকের স্বাদ পেল।
তবে বাংলা নন-ফিল্ম গানেই প্রকৃত সলিল-ম্যাজিক দেখা গিয়েছে। এই ক্ষেত্রে মূলত হেমন্ত মুখোপাধ্যায় ও লতা মঙ্গেশকরকে দিয়ে তিনি নানা ধরনের গান গাইয়েছেন। সুরের পরীক্ষা-নিরীক্ষা, তাল-লয়-ছন্দের বৈচিত্র্য, মিউজিক অ্যারেঞ্জমেন্ট ইত্যাদিতে বাংলা ডিস্কসঙের পরিসীমা তিনি অনেক দূর বাড়িয়ে দিতে পেরেছিলেন।
দেখতে গেলে ভারতীয় হিন্দি ফিল্ম মিউজিকে সলিলের গভীর প্রভাব। সলিলের লেগ্যাসির বহন করেছেন আর ডি বর্মণ থেকে এ আর রহমান পর্যন্ত! বাবা এক কিংবদন্তি হওয়া সত্ত্বেও আর ডি প্রথম থেকেই সলিল-মুগ্ধ ছিলেন। এদিকে, এ. আর. রহমানের বাবা আর. কে. শেখর সলিলের মিউজিক টিমে ছিলেন। ফলে বাবার মাধ্যমে রহমান ছোট থেকেই সলিলের কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। রহমান পরে বলেছেন, তাঁর সঙ্গীতবোধ অনেকাংশেই সলিলের দ্বারা প্রভাবিত।