সলমনের জেলযাত্রা ও বন্যপ্রাণ রক্ষায় বিষ্ণোইদের লড়াই
সলমন খানের কারাদণ্ডের সাজার পরই বাজি ফাটিয়ে উজ্জাপন করেছেন বিষ্ণোইরা। সলমন খানের বিরুদ্ধে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন এই সম্প্রদায়ের মানুষই। তাঁদের চেষ্টার জেরেই বৃহস্পতিবার সাজা পেলেন সলমন খান।
ধর্ম মানে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র প্রাণীর মধ্যেই ব্রহ্ম দর্শন। ধর্ম তো আসলে শেখায় মানবতা। অবলা পশুপাখি, গাছ, এমনতি পিঁপড়কে বাঁচানোই তো মানবধর্ম। বিষ্ণোইরা এই মানবধর্মই পালন করেন।
রাজস্থান, হরিয়ানা, পঞ্জাব ও উত্তরপ্রদেশে থাকেন বিষ্ণোই সম্প্রদায়ের মানুষরা। থর মরুভূমির প্রতিকূল পরিবেশেও জীবনযাপন করতে পারে এই সম্প্রদায়। মরুভূমির জীববৈচিত্র্য বাঁচিয়ে রাখতে তাঁদের অপরিসীম অবদান।
হরিণশাবকের প্রাণ বাঁচাতে দুগ্ধ পান করান বিষ্ণোই মা-রা।
বিষ্ণোই সম্প্রদায়ের ধর্মগুরু জামবেশ্বর। ১৪৫১ সালে জন্মেছিলেন তিনি। ৩৪ বছর বয়সে জামবেশ্বর অনুভব করেন, পরিবেশের ক্ষতি করছে মানুষ। তখনই পরিবেশ বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়েন তিনি।
বিষ্ণুর অবতার হিসেবে দেখা হয় জামবেশ্বরকে। তবে সনাতনীদের মতো মন্দিরে বিগ্রহ রাখে না বিষ্ণোই সম্প্রদায়।
২৯টি নীতির মধ্যে রয়েছে পশুকে বাঁচানো, গাছ না-কাটা ইত্যাদি। স্বাস্থ্যের দিকেও নজর দেওয়া হয়েছে। প্রতিদিন স্নান ও স্বচ্ছ জল খান বিষ্ণোইরা। মাংস, মদ ও ধূমপানে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
২৯টি নীতির মধ্যে রয়েছে পশুকে বাঁচানো, গাছ না-কাটা ইত্যাদি। স্বাস্থ্যের দিকেও নজর দেওয়া হয়েছে। প্রতিদিন স্নান ও স্বচ্ছ জল খান বিষ্ণোইরা। মাংস, মদ ও ধূমপানে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
হিংসা এড়াতে ৬টি নীতির কথা বলেছেন জামবেশ্বর। এর মধ্যে রয়েছে পশুহত্যার বন্ধ, জঙ্গলদের পশুদের রক্ষা করার মতো বিধান। এছাড়াও গোবরে কোনও পিঁপড়ে বা পোকা না থাকে তা নিশ্চিত করার পরই ব্যবহার করেন বিষ্ণোইরা। জলের প্রাণীকে জলেই ছেড়ে দেন তাঁরা।
রাজস্থানের মুকামে রয়েছে বিষ্ণোইদের মন্দির।
বিষ্ণোইদের একটি ঘটনা চমকপ্রদ। রাজস্থানে বাবলা গাছ বাঁচাতে প্রাণ হারিয়েছিলেন অমৃতা দেবী নামে এক মহিলা। একবার বাবলা গাছ কাটতে এসেছিল এক দল সেনা জওয়ান পাঠিয়েছিল যোধপুর আদালত। তখন গাছকে জড়িয়ে ধরেন অমৃতা দেবী। তাঁকে হত্যা করা হয়। একইভাবে প্রাণ যায় আরও ৩৬৩ জন বিষ্ণোইয়ের। শেষ পর্যন্ত গাছ কাটা বন্ধ করে প্রশাসন।
২০০১ সালে এক হরিণকে শিকারির হাত থেকে বাঁচাতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছিল এক বিষ্ণোইয়ের।