CJI NV Ramana Retires: অবসরের দিনও হাজির শুনানিতে, CJI রামানা সত্যিই অনন্য!
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: প্রধান বিচারপতি হিসেবে অবসর নিলেন এন ভি রামানা। ২০২০ সালের ২৪ এপ্রিল দেশের ৪৮ তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন নুতালাপতি ভেঙ্কটা রামানা। দীর্ঘ মেয়াদের শেষ দিন ছিল আজ। বিচারব্যবস্থায় শূন্যপদ পূরণ তো বটেই, ভারতের চিরাচরিত সমস্যাগুলিকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আদালতে শুনানির জন্য পরিকাঠামোর উন্নয়নেও পিছপা হননি। বহু বিষয়ে সোচ্চার হয়েছেন, একাধিক ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা করেছেন। গোটা কর্মজীবনে মুখ খুলতে একবারও দ্বিধাবোধ করেননি। মেয়াদকালে মোট ৬৫৭ বেঞ্চে অংশ নিয়েছেন তিনি। রায় ঘোষণা করেছেন ১৭৪টি। ফিরে দেখা, বিচারপতি এন ভি রামানার সাড়া ফেলে দেওয়া ব্যতিক্রমী কিছু রায়।
অবসরের আগের দিনও একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানিতে এজলাসে হাজির ছিলেন বিদায়ী প্রধান বিচারপতি। তার মধ্যে বিলকিস বানো মামলায় ১১ জন দোষীর মুক্তি ও পেগাসাস স্পাইওয়্যার মামলার মত গুরুত্বপূর্ণ শুনানি ছিল।
দেশজুড়ে আদালতে মামলার পাহাড়। দ্রুত নিষ্পত্তির সমাধানে বিচারব্যবস্থার মানোন্নয়ন চেয়ে বারবার সরব হয়েছেন এন ভি রামানা। গত মে মাসে একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে 'ঔপনিবেশিক' দেশদ্রোহিতা আইনের অপপ্রয়োগ নিয়েও সরব হয়েছিল তার নেতৃত্বের বেঞ্চ। জম্মু-কাশ্মীরে ইন্টারনেট বন্ধ নিয়ে মামলাতেও বাক-স্বাধীনতার বিষয়ে আলোকপাত করেন রামানা।
ইউএপিএ অ্যাক্টের সাংবিধানিক বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন রামানা। উক্ত অ্যাক্টে অভিযুক্তের জামিনের আবেদন খারিজ চেয়ে মামলা করে NIA। তারই শুনানিতে পর্যবেক্ষণ আদালতের। বিচারপতি বলেন, 'যেভাবে সব এগোচ্ছে তাতে কোনও ব্যক্তি সংবাদপত্র পড়লেও তাকে নিয়ে সমস্যা।'
একাধিক মামলায় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়াতেও পিছু হটেননি বিদায়ী প্রধান বিচারপতি। গত বছর শীর্ষ আদালতে পেগাসাসকাণ্ডে পৌঁছলে সরকারের বিরুদ্ধে আসা অভিযোগের তদন্তে কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন তিনি। নিরাপত্তার কারণ দর্শিয়ে কেন্দ্র বিস্তারিত হলফনামা দাখিল করতে অস্বীকার করলে সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন এন ভি রামানা। ব্যক্তিগত তথ্যের সরক্ষা নিয়েও সোচ্চার হন।
৫ই জানুয়ারি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পঞ্জাব সফরে নিরাপত্তা লঙ্ঘিত হলে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেন রামানা। সম্প্রতি মহারাষ্ট্র শিবসেনার দাবিদার নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত উদ্ধব ঠাকরে এবং মুখ্যমন্ত্রী শিণ্ডে ৷ এই মামলাটি সাংবিধানিক বেঞ্চের হাতে তুলে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি ৷
এছাড়াও গৃহস্থালির কাজে মহিলাদের স্বীকৃতি, বেতনের ব্যবস্থা, মানসিক স্বাস্থ্য, জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তা আইনের যথাযথ বাস্তবায়নে রাজ্যগুলির এগিয়ে আসা সম্পর্কেও পর্যবেক্ষণ জানান এন ভি রামানা।
১৯৫৭ সালের ২৭ আগস্ট অন্ধ্রপ্রদেশের কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন এন ভি রামানা। বিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের পর তিনি নাগার্জুনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেন ৷ ১৯৯৮-এ অন্ধ্রপ্রদেশের অ্যাডিশনাল অ্যাডভোকেট জেনারেল হিসেবে দায়িত্বভার নেন ৷ ২০০৮-এ হাইকোর্টে বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হন ৷
২০১৩ তে দিল্লি হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি পদে আসীন হন এন ভি রামানা ৷ সুপ্রিম কোর্টে তাঁর প্রবেশ ২০১৪ সালে৷ ২০২১-এ দেশের ৪৮ তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্বভার নেন।