আইপিএলের ঐতিহাসিক কিছু সিদ্ধান্ত যা ক্রিকেটের ব্যাকরণ পাল্টিয়ে দিয়েছে

Sun, 25 Mar 2018-12:07 pm,

ক্রিকেটের ইতিহাসে আইপিএলের ভূমিকা অনিস্বীকার্য। আইপিএল জমানায় শুধুই যে ধ্রুপদি ক্রিকেটের ভাবনার পরিবর্তন হয়েছে তা নয়, আইপিএলের বেশ কিছু মুহূর্ত ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে ফ্রেমবন্দি হয়ে রয়েছে, যা সত্যি ভোলার নয়। দেখা নেওয়া যাক তেমনই কিছু মুহূর্ত।

২০১১ আইপিএল ফাইনাল। চেন্নাই সুপার কিংস বনাম রয়্যাল চ্যালেঞ্জার বেঙ্গালুরু। এ যেন দক্ষিণের ডার্বি। সে ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করেন মুরলি বিজয় এবং মাইক হাসি। তাঁদের দৌলতে ২০৫ রান করে চেন্নাই। জবাবে ব্যাট করতে নামেন মায়ঙ্ক আগরওয়াল এবং ক্রিস গেইল। সবার নজর ছিল ক্রিস গেইলের উপর।

কিন্তু গেইলের উইকেট তুলতে নয়া ট্রিক্স কাজে লাগায় চেন্নাই অধিনায় মিস্টার কুল। প্রথম ওভারই অফ স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে পাঠান ধোনি। আর তাতেই কেল্লা ফতে। প্রথম ওভারই শূন্য রানে প্যাভিলিয়নে ফেরেন ক্রিস গেইল।

২০১৬-তে ইডেন গার্ডেন্সে একটি ম্যাচে কলকাতার অধিনায়ক গৌতম গম্ভীরের আগ্রাসী অধিনায়কত্ব দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন ক্রিকেট প্রেমীরা। বৃষ্টির জেরে এদিন কম ওভারে খেলা হয়। সে সময় পুনের স্কোর ছিল ৪ উইকেটে ৭৪। অধিনায়ক ধোনি নামেন ব্যাট করতে। 

সে সময় ধোনিকে চাপে রাখতে গৌতম গম্ভীরের ক্লোজ ফিল্ডিং সেটআপ দেখে অবাক হয়েছিলেন দর্শকরা। এ যেন টেস্ট চলছে। ‘গুরু গম্ভীর’ ফিল্ডিং সেট আপে সেদিন চাপে পড়েছিলেন ধোনি। মারকুটে ধোনি ২২ বলে মাত্র ৮ রান করেছিলেন। ওই ম্যাচ হাতছাড়া হয় ধোনিদের।

২০১৭ আইপিএলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে কেকেআর একটি ম্যাচ আজও স্মরণীয় রয়েছে ক্রিকেট প্রেমীদের কাছে। বিরাটদের ঘরের মাঠে ১৫৮ রানের তাড়া করতে সুনীল নারিনকে ওপেন করতে পাঠায় কেকেআর। সঙ্গে ছিলেন ক্রিস লিন। এই দুই জুটিতে ধূলিসাত্ হয়ে যায় গেইল-বিরাটরা। এই ম্যাচে দ্রুততম হাফসেঞ্চুরি করে তাক লাগিয়ে দেন ‘স্পিনার’ সুনীল নারিন।

২০১১ আইপিএল-এ ক্রিস গেইলের কাছে টার্নিং পয়েন্ট। কেকেআর থেকে গেইলকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কোনও দল তাঁকে কিনতে না চাইলেও, ডির্ক ন্যান্সের চোটের কারণে গেইলকে নেয় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার বেঙ্গালুরু। 

সুযোগ পেয়েই সুদে আসেল পুষিয়ে দেন গেইল। সে বছর ৫৫ বলে ১০২ রানের দুর্দান্ত একটি ইনিংস খেলেন। এছাড়া সে বার ৬০৮ রান করে সর্বোচ্চ রানের অধিকারিও হন গেইল। আরসিবিকে ফাইনালে তুলতে অগ্রণী ভূমিকা ছিল তাঁরই।

২০১০ সালে আইপিএল ফাইনালে মহেন্দ্র সিং ধোনির একটি ফিল্ডিং সেটআপের সিদ্ধান্তই সব হিসেব পাল্টে দেয়। অনায়সেই হাতে চলে আছে আইপিএলের কাপ। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের শেষ ৭ বলে দরকার ছিল ২৭ রান। 

ক্রিজে দাঁড়িয়ে মারমুখি কায়রন পোলার্ড। ইতিমধ্যেই ২টি ওভার বাউন্ডারি এবং ৩টি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে চাপ তৈরি করেছে চেন্নাইয়ের উপর। কিন্তু ক্রিকেটে চালু প্রবাদ অনুযায়ী, যে টিমে মিস্টার কুল আছে, সেখানে টেনশন কিসের! কায়রন পোলার্ডকে আউট করতে একেবারে বোলারের সোজাসুজি মিডঅফে ফিল্ডার রাখেন ধোনি। সাধারণত এই জায়গায় ফিল্ডার রাখা হয় না। আর এতেই কেল্লাফতে, মর্নি মর্কেলের পরের বলে সেই ফাঁদে পড়েন পোলার্ড। পোলার্ড আউট হতেই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স।

আইপিএলে ‘ট্র্যাজিক হিরো’ সৌরভ গাঙ্গুলি। যে দলের হয়ে তিনি অধিনায়কত্ব করেছেন, নিজের পারফরম্যান্স অসাধারণ হলেও, সেই দল সেভাবে সফলতা পায়নি। ২০১২ সালে দিল্লির সঙ্গে একটি ম্যাচে অধিনায়কত্ব তো বটেই ব্যাটে এবং বলেও অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখিয়েছিলেন দাদা। 

কেভিন পিটারসনকে আউট করে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন বার বার ফিরে আসা যায়। তা সৌরভ গাঙ্গুলির পক্ষেই সম্ভব। সৌরভের আগ্রাসী আক্রমণে দিল্লি এদিন হেলায় হেরেছিল।

ZEENEWS TRENDING STORIES

By continuing to use the site, you agree to the use of cookies. You can find out more by Tapping this link