#উৎসব: আজও জ্বলছে সেদিনের সধবার চিতার আগুন! কলকাতার এই কালীমন্দিরকে ঘিরে রয়েছে নানা লোককথা

Wed, 24 Nov 2021-3:53 pm,

তনুজিৎ দাস: কলকাতায় কালীমন্দিরের শেষ নেই। কাশীপুরের চিত্তেশ্বরী, ঠনঠনিয়ায় সিদ্ধেশ্বরী, বউবাজারে ফিরিঙ্গি, কেওড়াতলায় শ্মশানকালী, টালিগঞ্জে করুণাময়ী, নিমতলায় আনন্দময়ী। এদের প্রত্যেকেরই রয়েছে নিজ নিজ লোককথা। ঠিক তেমনই নানা কাহিনির সমাহার ঘটেছে কলকাতার শ্যামবাজার থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে, বেলগাছিয়ার জাগ্রত কালীমন্দিরকে ঘিরে। প্রচারের আড়ালে, নিভৃতে বহু বছর ধরে তন্ত্রমতে পূজিত হচ্ছেন মা তারা। নাম 'তারাশঙ্করী পীঠ' (Tarashankari Pith)।   

না, এখানে সতীর দেহের কোনও অংশ পড়েনি। আদ্যাপীঠ, তারাপীঠের মতো এটাও সিদ্ধপীঠ। ১৯৫২ সালে রেলের জমিতে মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন যোগী মহারাজ পরেশচন্দ্র রায় মৌলিক। তন্ত্রমতে মায়ের আরাধনা শুরু করেন তিনি। 

'তারাশঙ্করী পীঠ'-এ (Tarashankari Pith) এসেছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গনি খান চৌধুরী (Ghani Khan Choudhury)।

 

বর্তমানে মন্দিরে সেবায়েত তারানন্দ ব্রহ্মচারী মহারাজ। Zee ২৪ ঘণ্টাকে তিনি জানান, মন্দির প্রতিষ্ঠার সময় বারাণসীর মণিকর্নিকা মহাশ্মশান থেকে সধবার চিতার আগুন আনা হয়। সেই থেকে আজ পর্যন্ত জ্বলছে চিতার আগুন। এখনও কলকাতার নিমতলা শ্মশান থেকে চিতার আধপোড়া কাঠ আসে 'তারাশঙ্করী পীঠ'-এ (Tarashankari Pith)। সেই কাঠেই জ্বলছে সধবার চিতার আগুন।

মা তারাই এখানে 'তারাশঙ্করী' নামে পূজিত হন। দেবীর এক অঙ্গে রয়েছে তিন রূপ- উগ্র তারা, একজটা তারা এবং নীল সরস্বতী।

'তারাশঙ্করী পীঠ' (Tarashankari Pith)-এর আরও এক আকর্ষণ হন 'নবমুণ্ডি আসন'। বাঘ, হাতি, শেয়াল, সাপ, অপঘাতে মৃত ব্যক্তি, চণ্ডাল ইত্যাদির ৯টি মাথার খুলি দিয়ে সজ্জিত আসন। 

প্রতিদিন 'মা তারাশঙ্করী'র নিত্য পুজো হয়। নিত্য় পুজোতে দেবীকে দেওয়া হয় আমিষ ভোগ। পাতে থাকে অন্ন, ডাল, সবজি, পাঁচ রকমের ভাজা, মাছ, চাটনি এবং পায়েস। অমাবস্যা, কালীপুজোয় থাকে বিশেষ ভোগ। 

এই মন্দিরেই পূজিত হন যশমাধব। বাংলাদেশের ধামরাই জেলা থেকে তাঁকে আনেন যোগী মহারাজ পরেশচন্দ্র রায় মৌলিক। এক কোটি তুলসি পাতা দিয়ে যশমাধবের শালগ্রাম শিলা মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। যশমাধবের মূর্তি নিমদারু কাঠের তৈরি। নিত্য পুজোয় যশমাধবকে দেওয়া হয় নিরামিষ ভোগ।

 

একই সঙ্গে 'তারাশঙ্করী পীঠ'-এ (Tarashankari Pith) পূজিত হন কালভৈরবও। ত্রিদেবকে পরাজিত করেছেন তিনি। তাঁর একহাতে ব্রহ্মার মুণ্ড, আর এক হাতে খর্গ, বাকি দু'টোয় বিষ্ণুর সুদর্শন চক্র ও শিবের ত্রিশূল। পদতলে শায়িত মহাদেব। তারানন্দ ব্রহ্মচারী মহারাজের দাবি, নেপাল ছাড়া ভারতের একমাত্র এই মন্দিরেই মূর্তিরূপে পূজিত হন মহাকাল। 

ZEENEWS TRENDING STORIES

By continuing to use the site, you agree to the use of cookies. You can find out more by Tapping this link