মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে চুটিয়ে কাজ, আর এখন নাইট শিফটে ৭ হাজারের বেতনভুক কর্মী এই শিল্পী!

Sun, 26 Jul 2020-6:08 pm,

অয়ন ঘোষাল: মিঠুন চক্রবতীর সঙ্গে মজাদার ডায়লগবাজিতে সমানে পাল্লা দিয়েছেন তিনি। হাসির জাদুকর বলা হয় তাকে। ২০১৬র দিঘা ফেস্টিভ্যালের মূল আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুও তিনিই । একটা সময় থিয়েটার, যাত্রা, রঙ্গমঞ্চে হাসির সুলতান। তিনি বিভাস সুর।

তখন দু হাতে টাকা রোজগার করেছেন। একটার পর একটা শো। একদিনে এমনকি এক ডজন শো করেছেন। সকাল আটটা থেকে পরের দিন সকাল আটটা পর্যন্ত মোট ১২টি আলাদা মঞ্চে মানুষকে টানা হাসতে হাসতে পেটে খিল ধরিযেছেন।

 ২০২০র মার্চ মাস বিভাস সুরের সেই হাসির জাদু কেড়ে নিয়েছে। দেশজোড়া খ্যাতি যে কমেডিয়ানের, তিনিই এখন হাসতে ভুলে গিয়েছেন প্রায়। ঘরে অসুস্থ স্ত্রী। দুটি কিডনি বিকল। ডায়ালিসিসের খরচ তুলতেই নাভিঃশ্বাস । তাই লক ডাউন পরবর্তী আনলকের বাজারে বিভাস সুর এখন একটি বেসরকারি পণ্য আদানপ্রদান কোম্পানির নাইট শিফটের সুপারভাইজার । সাকুল্যে আয় মাস গেলে সাত হাজার টাকা ।

এহেন বিভাস সুরকে জি ২৪ ঘণ্টা খুঁজে পেল কুমারটুলির কাশি মিত্র গঙ্গার ঘাটে। আনমনে চেয়ে আছেন জলের দিকে। হাতে এক পেয়ালা উষ্ণ চা। এই মুহুর্তে যা বোধহয় তার অনিশ্চিত জীবনের একমাত্র উষ্ণতা ।

ত্রিশূল সিরিজের কর্ণধার প্রয়াত গুলশন কুমার বিভাসের বড় ফ্যান ছিলেন। কথা আদায় করেছিলেন, বিভাস তার কমেডির ক্যাসেট বের করবেন শুধুমাত্র টি সিরিজের ব্যানারেই। একটা দুটো নয়। সবমিলিয়ে ১৭টি ক্যাসেট বেরিয়েছিল ১৯৮০-৯১এর মধ্যে। তারপর শো,  মঞ্চ ও যাত্রা নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে পড়েন বিভাস। চিৎপুর যাত্রাপাড়ায় নতুন পালার পোস্টারে তিনি হয়ে উঠলেন হাসির পোস্টার বয়। এরকমও হয়েছে,  এক মরসুমে একসঙ্গে তিনটি যাত্রা কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হতে হয়েছে তাকে। চাহিদা এতটাই। সারা বছর চষে বেড়িয়েছেন এ জেলা থেকে ও জেলা। সেই বিভাস এখন লক ডাউনের সর্বনেশে আঘাতে অখণ্ড অবসরে।

তবু হারিয়ে যায়নি তার কমেডি। বলা ভাল, তিনি নিজেই হারাতে দেননি। শিল্পীসত্তা বিসর্জন দিয়ে আর কতদিন সামান্য বেতনের এই তুচ্ছ চাকরি?  জলের দিকে তাকিয়ে “একমাত্র মা গঙ্গাই জানেন।”

ZEENEWS TRENDING STORIES

By continuing to use the site, you agree to the use of cookies. You can find out more by Tapping this link