২৬/১১ হামলায় জীবন দিয়ে দেশ বাঁচিয়েছিলেন এই পাঁচ নায়ক
নিজস্ব প্রতিবেদন: ২৬/১১ মুম্বই হামলার ১২ বছর। ভারতীয় বাহিনীর হাতে খতম হয়েছিল জঙ্গিরা। টানা চার দিন ধরে ওই বিষাক্ত ছোবলে রক্তাক্ত হয়েছিল ভারত। সুরক্ষা নিরাপত্তার ফাঁক দিয়ে ঢুকে তছনছ করে দিয়েছিল। ১৭০ জন নিরাপরাধ মানুষের প্রাণ নিয়েছিল ওরা। আহত হয়েছিল ৩০০র বেশিজন। পাকিস্তান থেকে আরব সাগর পেরিয়ে মুম্বইতে ঢুকেছিল ১০ জঙ্গি।
শুধু হাতে নাতে অক্ষতভাবে পাওয়া গিয়েছিল আজমল কাসভকে। ২০১২ সালের ২১ নভেম্বর ফাঁসি দেওয়া হয় আজমলকে। জঙ্গি সংগঠন লঙ্কর ই তৈরা ও জামাত উদ দাওয়ার।
ছড়িয়ে পড়ে মুম্বইয়ের লিওপোল্ড কাফে, নারিম্যান হাইস, তাজ হোটেল, ছাত্র শিবাজী বাস টার্মিনাস, ট্রাইডেন্ট হোটেল, কামা হাসপাতাল সহ শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপুর্ণ জায়গায়। তারপর, নিষ্ঠুর নির্মমভাবে লক্ষ্য করে মারা হয়ে নিরাপরাধ ভারতীয়দের। চার দিন ধরে চলে গুলিবর্ষন। জানা গিয়েছিল, নাশকতার ছকে সফল হতে ৭০ জন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা চাওয়া হয়েছিল। শেষ দিন অপারেশন ব্ল্যাক টর্নেডো অভিযান চালায় ভারতীয় এনএসজি কম্যান্ডাররা। যেখানে বাকি জঙ্গিতে ঝাঁঝরা করে দিয়েছিল।
এই গোটা ঘটনায় যাদের নাম প্রত্যেক বছর শিরোনাম জুড়ে থাকে ২৬/১১ এর দিন। হেমন্ত করকারে, তুকারাম ওম্বলে, অশোক কামতে, বিজয় সালাসকার, মেজর সন্দীপ উন্নিকৃষ্ণন,
২৬/১১-এর হামলায় মিশন অপারেশন ব্ল্যাক টর্নেডোর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন জাতীয় সুরক্ষা গার্ডের (এনএসজি) কম্যান্ডো মেজর সন্দীপ উন্নিকৃষ্ণান। তাজ হোটেলের কাছে জঙ্গিদের সঙ্গে লড়াইয়ে তিনি শহীদ হন।
বিজয় সালাসকার মুম্বই পুলিশের একজন কর্মকর্তা ছিলেন, যাকে এনকাউন্টার বিশেষজ্ঞ বলা হত। কামা হাসপাতালের কাছে এনকাউন্টার চলাকালীন তিনি এটিএসের চিফ হেমন্ত করকারে এবং অশোক কামতের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন। হামলার সময় কাসাব ও তার সহযোগীকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল। কাসাবকে মারতে না পারলেও তার সহযোগীকে হত্যা করেছিল।
কামা হাসপাতালের কাছে এনকাউন্টার চলাকালীন মুম্বাই পুলিশের এসিপি অশোক কাম্তেও এটিএস চিফ হেমন্ত করকারে উপস্থিত ছিলেন। কামা হাসপাতালের বাইরে জঙ্গি ইসমাইল খান তাদের উপর নির্বিচারে গুলি চালায় এবং গুলি মাথায় এসে লাগে, সেই সময়তেও শেষ গুলিতে হত্যা করে শত্রুপক্ষকে।
মুম্বই পুলিশের এএসআই তুকারাম ওম্বলে তার সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে কোনও অস্ত্র ছাড়াই জঙ্গি আজমল কাসাবের মুখোমুখি হন এবং তাঁকে ধরে ফেলেন। এসময় কাসাব তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে তিনি শহীদ হন।
হেমন্ত করকারে তখন মুম্বই এটিএসের প্রধান ছিলেন। ২৬ নভেম্বর সন্ধ্যা ৯.৪৫-এ যখন তিনি জঙ্গি হামলার খবর পান তখন তিনি বাড়িতে ছিলেন, ডিনার করছিলেন। তিনি তৎক্ষণাৎ ড্রাইভার ও দেহরক্ষী নিয়ে সিএসটি স্টেশনের উদ্দেশ্যে রওনা হন। সেখানে তাঁরা জানতে পারেন যে সন্ত্রাসরা এখন কামা হাসপাতালে । তিনি এসিপি অশোক কাম্তে, পরিদর্শক বিজয় সালাসকারের সঙ্গে ঘটনা স্থলে পৌঁছে যান। কামা হাসপাতালের বাইরে একটি এনকাউন্টারে জঙ্গিদের নির্বিচারে গুলি চালানোর পরে তিনি শহীদ হন।