ফুচকা নিয়ে আর বাড়ি ফেরেনি স্বামী! বিধায়ক খুনে বিজেপির দিকেই অভিযোগের আঙুল স্ত্রীর

Sun, 10 Feb 2019-11:53 am,

সরস্বতী পুজোর উদ্বোধন সেরে ফুচকা নিয়ে বাড়ি ফিরবেন। স্ত্রী রূপালি বিশ্বাসকে কথা দিয়ে গিয়েছিলেন বিধায়ক স্বামী। কিন্তু পুজোর উদ্বোধন সেরে আর বাড়ি ফেরা হয়নি কৃষ্ণগঞ্জের বিধায়ক সত্যজিত বিশ্বাসের। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেই পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে বিধায়ককে খুন করে আততায়ীর দল।

গুলিতে এফোঁড়-ওফোঁড় হয়ে যায় মাথা। স্বামীর খুনের ঘটনায় বিজেপির দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন বিধায়কের স্ত্রী রূপালি বিশ্বাস। কাঁদতে কাঁদতে বিধায়ক সত্যজিত বিশ্বাসের স্ত্রী সাফ বলেন, "বিজেপি-ই এই কাজ করে থাকতে পারে। একটি ছেলে আগে তৃণমূল করত। এখন বিজেপিতে গিয়েছে। আমি শাস্তি চাই।"

বিয়ে হয়েছে মাত্র ২ বছর ৩ মাস। ২০১৬-র নভেম্বরে বিধায়ক সত্যজিত বিশ্বাসের সঙ্গে বিয়ে হয় রূপালি বিশ্বাসের। মা, স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে ভরা সংসার ছিল বিধায়ক সত্যজিত বিশ্বাসের। সরস্বতী পুজোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গিয়ে আততায়ীর হাতে স্বামী খুন হওয়ার খবর পাওয়ার পর, শনিবার রাত থেকেই বার বার জ্ঞান হারাচ্ছেন বিধায়কের স্ত্রী।

কাঁদতে কাঁদতে রবিবার সকালে জি ২৪ ঘণ্টাকে রূপালি বিশ্বাস জানান, বিয়ের পরও দীর্ঘদিন এমএলএ হস্টেলে ছিলেন স্বামী সত্যজিত বিশ্বাস। তিনিও দু'দফায় ৭দিন করে মোট ১৪ দিন এসে স্বামীর সঙ্গে এমএলএ হস্টেলেই ছিলেন। এমএলএ হস্টেলে নিজে হাতে সবার জন্য রান্না করতেন বিধায়ক। সবার খুব প্রিয় ছিলেন।

রূপালি বিশ্বাস জানান, খুব কমদিন-ই হল তিনি ছেলেকে নিয়ে নদীয়া এসে স্বামীর সঙ্গে থাকতে শুরু করেছিলেন। কাল-ই বাপের বাড়ি থেকে ফেরেন তিনি। বিধায়ক সত্যজিত বিশ্বাস-ই তাঁকে বাপের বাড়ি থেকে নিয়ে আসেন। তাঁকে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে, নতুন পাঞ্জাবি পরে ছেলেকে নিয়ে পুজোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যান। বাড়ি থেকে যাওয়ার সময় স্ত্রী রূপালি বিশ্বাসকে কথা দিয়ে যান ফেরার সময় ফুচকা নিয়ে আসবেন। স্ত্রী রূপালি বিশ্বাস জানাচ্ছেন, সেটাই বিধায়কের সঙ্গে তাঁর শেষ কথা হয়।

এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা-৮টা নাগাদ বিধায়ক বাড়ি ফিরছেন না  দেখে, তিনি একবার তাঁর ফোনে ফোন করেন। ফোন বেজে যায়। তারপর বিধায়কের ড্রাইভারকে ফোন করেন তিনি। ড্রাইভার রূপালি দেবীকে বলেন, বিধায়ক সত্যজিত বিশ্বাস বক্তৃতা দিচ্ছেন। এরপরই ফুচকা নিয়ে বাড়ি ফিরবেন বলে তাঁকে বলেছেন।

 

ঘটনাক্রম অনুযায়ী এরপরই আততায়ীর হাতে খুন হয়ে যান তৃণমূল বিধায়ক। স্বামীর অকাল মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ রূপালি দেবী কাঁদতে কাঁদতে আরও বলেন, গ্রামের সবার খুব প্রিয় ছিলেন তাঁর স্বামী। সবাই 'সত্য সত্য' করত। খুব ভরসা করত। যে কোনও দরকারে তাঁর স্বামীর কাছে ছুটে আসত সবাই। সবার কাছ থেকে এত ভালোবাসা পাওয়া সত্ত্বেও কীভাবে তাঁর স্বামী খুন হয়ে গেলেন? সেই উত্তর হাতড়ে বেড়াচ্ছেন বিধায়কের স্ত্রী।

খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসেবে অভিজিত পুণ্ডারি নামে এক পড়শি যুবকের নাম উঠে এসেছে। বিধায়কের স্ত্রী রূপালি বিশ্বাস দাবি করেছেন, লোকমুখে তিনি শুনেছেন যে গ্রামের ৪-৫ জন ছেলে জটলা করেছিল। তাদের মধ্যেই একজন গুলি করে।

ZEENEWS TRENDING STORIES

By continuing to use the site, you agree to the use of cookies. You can find out more by Tapping this link