#উৎসব: লক্ষ্মীপুজোর আগে বিষণ্ণ লক্ষ্মীরাই
হাতেগোনা কয়েকদিন বাকি। তার পরেই কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো। বহুদিন ধরেই জলপাইগুড়ির মালকানি মালিপাড়ার মানুষজন কদমফুল-সহ লক্ষ্মীপুজোর বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি করে থাকেন এই মরসুমে। মালিপাড়া এলাকার প্রায় ৮৫টি পরিবার শোলাশিল্পের সঙ্গে যুক্ত। প্রতিটি পরিবারের কিশোর থেকে বুড়ো-- সকলেই দক্ষ হাতে শোলা দিয়ে বিভিন্ন জিনিস তৈরি করেন।
তাই প্রতি বছর লক্ষ্মী পুজোর আগে এই মালাকরদের ব্যস্ততা তুঙ্গে থাকে। নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে এ সময়ে শুধু পুজোর সামগ্রী বানাতেই ব্যস্ত হয়ে পড়েন তাঁরা। এবারেও তাই ঘটেছে।
কেমন চলছে এই মালাকরদের? প্রশ্ন করা হলে একটু রহস্য করে উত্তর দেন শিল্পীরা। তাঁদের হাতে তৈরি এই সব সামগ্রী খুব হালকা হয়, শিল্পীরা তাই আক্ষেপ করে বলেন, এই সব বানিয়ে দামও তাঁরা 'হালকা'ই পান। তবে পরিশ্রমের সঙ্গে তাল রেখে দাম একটু বেশিই আশা করেন তাঁরা।
বংশপরম্পরায় এই সব কাজ করে আসছেন শিল্পীরা। কিন্তু বছরের পর বছর গেলেও মেলে না কোন সরকারি সাহায্য। আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়ার সুযোগ নিয়ে সরকারি সাহায্য পাইয়ে দেওয়ার নাম করে প্রতারণাও করা হচ্ছে শিল্পীদের, শোনা যায় এমন অভিযোগও। এমন অভিযোগই তুলেছেন জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের খাড়িজা বেরুবাড়ি ২ নম্বর পঞ্চায়েত এলাকার মালকানি মালিপাড়ার শোলা শিল্পীরা।
মালকানি বাজার থেকে ডানহাতে প্রধানমন্ত্রী গ্রামসড়ক যোজনার রাস্তা ধরে প্রায় ১ কিলোমিটার এগিয়ে গেলেই মালিপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয় থেকে কিছুটা এগিয়ে গেলেই বাঁশঝাড়ের নীচে বস্তা পেতে বসে একমনে শোলা কেটে বিভিন্ন জিনিস তৈরি করতে দেখা যাবে বাড়ির মহিলা থেকে যুবকদের। সাহায্যের হাত বাড়ির দেন বাড়ির বড়রাও। শিল্পী দিগেন মালাকার , ভানু মালাকার ও কল্যাণী মালাকার, ফণী মালাকারেরা।
শিল্পীরা বলেন, একেই আর্থিক অনটন, এর উপর দীর্ঘ সময় ধরে লকডাউন। সব মিলিয়ে তাঁদের আর্থিক সঙ্কট বেড়েছে। এদিকে আগের চেয়ে চাহিদা কমেছেও শোলাশিল্পের। শোলার কাজ এখন মূলত অনুষ্ঠানকেন্দ্রিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। তা ছাড়া শোলার দাম বেড়ে যাওয়ায় লাভের মুখও তেমন দেখা যায় না বলে বক্তব্য তাঁদের। তাই শোলাশিল্পের সঙ্গে যুক্ত মহিলারা বিষণ্ণই।