Pics: সাপ এখানে দেবী, পূর্ব বর্ধমানের গ্রামে তাই সাপের কামড় `প্রসাদ`
সাপ এখানে দেবী। বছরভর সাপের সঙ্গেই দিনযাপন করেন এখানকার বাসিন্দারা। কারণ তাঁদের আরাধ্য দেবী যে একটি সাপ। স্থানীয় বিশ্বাস অনুসারে, দেবীর আশীর্বাদেরই বিষাক্ত সাপের কামড়ে অনিষ্ট হয় না কারও।
প্রতি বছরের মতো এবারও মহাসমারোহে সমস্ত আচার মেনে দেবী ঝঙ্কেশ্বরীর পুজো হল মঙ্গলকোটে। পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের মশারু,পলসোনা, ছোট পোসলা ও বড় পোসলাগ্রামে গুরুপূর্ণিমার পর প্রতিপদে লোকদেবী ঝঙ্কেশরীর পুজো হয়। ৯ ইঞ্চি উচ্চতার দ্বিভূজা প্রস্তর মূর্তির এক হাতে থাকে সাপ, অন্য হাতে থাকে গদা।
ইতিহাসবিদদের দাবি, বৌদ্ধতন্ত্রের জাঙ্গুলি দেবীর সঙ্গে এই ঝঙ্কেশ্বরীর মিল আছে। অনেকের মতে জাঙ্গুলী দেবী এখানে ঝঙ্কেশ্বরী হিসাবে অষ্টনাগ মন্ত্রে পূজিত হন। এর সঙ্গে মনসার কোন সম্পর্ক নেই।
পূর্ব বর্ধমানের এই এলাকায় আনাচকানাচে কেউটে জাতীয় কালো বিষধর সাপ দেখা যায়। কেউটের সঙ্গে ফারাক শুধু ফনার পিছনের চক্রে। ঝঙ্কেশ্বেরীর ফনার চক্র কেউটের থেকে আকারে ছোট। কখনও বাড়ির চাতালে, আবার কখনও খড়ের গাদায় আস্তানা দেবীর।
দেবী ঝঙ্কেশ্বরী (পড়ুন সাপ) এখানে নির্ভয়ে অনায়াস বিচরণ করেন। সাপের কামড়কে 'প্রসাদ' বলে থাকেন এই গ্রামগুলির বাসিন্দারা। যদিও গ্রামবাসীদের বিশ্বাস ঝঙ্কেশ্বরী কারও ক্ষতি করতে পারেন না। বিষধর সাপের মতো দেখতে হলেও এই সাপের না কি বিষ নেই। কাউকে সাপ কামড়ালে একটি ছোট পুকুরে স্নান করে ঝঙ্কেশ্বরী মন্দিরের মাটি কাটা জায়গায় লাগিয়ে নিলেই নিরাময়।
ঝঙ্কেশ্বরীর খাদ্য ব্যাঙ। কিন্তু দেবীর খাদ্য বলে ব্যাঙকে 'নাড়ু' বলেন গ্রামবাসীরা। ঝঙ্কেশ্বরী ক্রুদ্ধ হতে পারেন এই আশঙ্কায় চারটি গ্রামে সাপুড়ের প্রবেশ নিষেধ। পুজোর সময় গ্রামের রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো সাপকে ধরে এনে দেবীজ্ঞানে পুজোও করা হয়। নির্ভয়ে মানুষ সেই দৃশ্য দেখে।