শিল্পপতি কন্যার মৃত্যুর পরতে পরতে রহস্য, কে এই রসিকা জৈন?
রসিকা জৈনের মৃত্যু নিয়ে রহস্য ঘনাতে শুরু করেছে। বাবা, মা এবং পরিবারের পছন্দে বিয়ে করে শেষ পর্যন্ত রসিকার যে পরিণতি হয়, তার তদন্ত করতে গিয়ে সূত্র হাতড়াচ্ছে পুলিস
মহাদেবী বিড়লা গার্লস স্কুল থেকে প্রথম দফার পড়াশোনা শেষ করেন রসিকা। এরপর সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে পড়াশোনার পর সিঙ্গাপুর থেকে ডিগ্রি নিয়ে কলকাতায় ফেরেন শিল্পপতি কন্যা
আলিপুরের রাজা সন্তোষ রোডের ব্য়বসায়ী পরিবারে মেয়ে রসিকা ছোট থেকেই অত্যন্ত মেধাবী। বিদেশে থেকে ডিগ্রি নিয়ে ফেরার পর পরিবারের পছন্দের পাত্র কুশল আগরওয়ালের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন রসিকা
২০১৯ সালে কলকাতার আরও একটি নামি শিল্পপতি পরিবারের ছেলে কুশলের সঙ্গে রসিকার বিয়ের আসর বসে রাজস্থানের উমেদ ভবনে। (প্রসঙ্গত, এই উমেদ ভবনেই মার্কিন পপ তারকা নিক জোনাসের সঙ্গে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া ২০১৮ সালে) ২০২০ সালে প্রথম বিবাহ বার্ষিকীও পালন করেন রসিকা এবং কুশল
প্রথমবারের বিবাহ বার্ষিকীর পর থেকেই যেন রসিকার জীবনের ছন্দ কাটতে শুরু করে। আতঙ্ক গ্রাস করতে শুরু করে করে রসিকাকে
কখনও স্বামী কুশল আগরওয়াল মাদকাসক্ত বলে পরিবারের কাছে অভিযোগ করেন রসিকা। আবার কখনও শ্বশুরবাড়ির লোকের সঙ্গে মনোমালিন্য হচ্ছে বলে বাবা-মা, ভাইকে জানান রসিকা। ২০২৯ সালে একেবারে ফিল্মি কায়দায় যখন রাজস্থানের উমেদ ভবনে রসিকার বিয়ের আসর বসে, সেই ভিডিয়ো দেখে আলোর পিছনে অন্ধকারের এই গল্প রয়েছে। এ কথা কে ভাবতে পারেন বলেও প্রশ্ন তোলেন অনেকে
প্রথম বিবাহ বার্ষিকীর পর থেকে রসিকা কখনও ভাইকে ফোন করে ডিজিটাল ওয়ালেটে টাকা ভরে দেওয়ার কথা বলতে শুরু করেন। আবার কখনও লুকিয়ে ভাইকে খাবার আনার কথা বলতেন রসিকা
এসব দেখে মেয়ের শ্বশুরবাড়ির অবস্থা কী, তা বুঝতে পারেন রসিকার পরিবার কিন্তু সেসব প্রকাশ্যে আনলে তাঁদের পরিবারের সামাজিক অবস্থানের অবনতি হতে পারে, সম্মান ক্ষুন্ন হতে পারে ভেবে চুপ করে ছিলেন তাঁরা
বাবা, মা ভাইকে শ্বশুরবাড়ির অবস্থা সম্পর্কে সব কথা জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি। এরপরই আচমকা ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয় রসিকার।
মেধাবী রসিকার মৃত্যুর ঘটনা ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে হয় নাকি তাঁকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়া হয়! এমন প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। এমনকী টুইটারে 'জাস্টিস ফর রসিকা' নামে একটি পেজও খোলা হয়। যেখানে ইতিমধ্যেই একের পর এক টুইট প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে
এদিকে রসিকার পরিবারের দাবি, উচ্চ মাত্রার প্রভাব খাটিয়ে তাঁদের মেয়ের মৃত্যুর ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালানো হচ্ছে
প্রসঙ্গত মৃত্যুর আগে বাবার সঙ্গে হোয়াটস অ্যাপে কথা হয় রসিকার। সেখানে শ্বশুরবাড়ির বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে দেখা যায় রসিকাকে। সবকিছু জানা সত্ত্বেও কেন রসিকার বাড়ির লোক মেয়ের কথা শুনলেন না। পারিবারিক সম্মান নষ্টের ভয়েই কি অকালে ঝরে গেল তরতাজা একটি প্রাণ? সূত্র হাতড়াচ্ছে পুলিস।